ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৬, ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:১৮:৩৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫ সাংবাদিক নিহত লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা কুষ্টিয়ায় নারী পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার খুলল প্রবেশ পথ, সচিবালয়ে ঢুকছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেসব মন্ত্রণালয়ের অফিস আছে আগুন লাগা ভবনে পাঁচ ঘণ্টা পর সচিবালয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে ধর্ষিতাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে হবে: দিল্লি হাইকোর্ট

৮ দফা অস্ত্রোপচারের পর ঘরে ফিরেছে জোড়া শিশু নুহা-নাভা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫০ এএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

প্রায় আড়াই বছর পর হাসপাতাল থেকে নিজ বাড়িতে ফিরেছে কুড়িগ্রামের আলোচিত কোমর ও মেরুদণ্ডে জোড়া থাকা শিশু নুহা ও নাভা। 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ দফা অস্ত্রপচার ও চিকিৎসার পর গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বাড়িতে ফিরে আসে তারা। শিশু দুটোর চঞ্চলতায় মুখর হয়ে উঠেছে বাড়ির আঙিনা। তা দেখে দারুণ আনন্দিত এলাকাবাসীসহ আলমগীর-নাসরিন দম্পতি। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম গ্রামে বাড়ি রানা-নাসরিন দম্পতির। আলমগীর হোসেন রানা একজন পরিবহন শ্রমিক ছিলেন। স্ত্রী নাসরিন বেগম ২০২১ সালের ২২ মার্চ কুড়িগ্রামের একটি বেসকারি ক্লিনিকে জোড়া লাগানো দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। মেরুদন্ড জোড়া লাগানো জমজ দুই কন্যাকে পেয়ে আনন্দের বদলে বিষাদ ভরে যায় এই দম্পতির মন। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে শিশু দুটিকে আলাদা করার জন্য যেতে পারছিলেন না কোনো হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে। 

এ অবস্থায় ওই বছরের ৪ এপ্রিল সিভিল সার্জন অফিসের সহায়তায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় শিশু দুটোকে। 

এই জোড়া শিশুদের পৃথক করাসহ চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়। সেখানকার চিকিৎসক ও নিউরোসার্জন ডা. মোহাম্মদ হোসেনের তত্বাবধানে ৮ দফা অস্ত্রোপচারের পর গত বছর জানুয়ারি মাসে পৃথক করা হয় শিশু দুটিকে। দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে যা মাইলফলক হয়ে যায়। এরপর থেকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাদের। 
অবশেষে সফল অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা শেষে গত সোমবার রাতে হাসপাতাল ত্যাগ করে জোড়া শিশু নুহা ও নাভাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে আসেন তারা। তাদের এই অকল্পনীয় পৃথক চিকিৎসা নিয়ে স্বস্তি ও আনন্দে প্রতিবেশী, স্বজনসহ আলমগীর নাসরিন দম্পতির মাঝে। 

স্থানীয় আমির হোসেন বলেন, আমার এলাকার জন্ম নেয় জোড়া লাগানো এক শিশু। পরে তাদের ঢাকায় চিকিৎসা করে আলাদা আলাদা করা হয়েছে। তাদের দেখে আমরা খুব খুশি হয়েছি। বাচ্চা দুইটা ভালোই আছে। শুনলাম তাদের নাকি পুরোপুরি চিকিৎসা এখনো শেষ হয় নাই। তারা তো গরিব আমরা সবাই যদি তাদের পাশে দাঁড়াই তাহলে হয়তো ভালোভাবে চিকিৎসা শেষ হতে পারে তাদের।

স্থানীয়রা বাসিন্দারা বলেন, আল্লাহর রহমতে চিকিৎসার মাধ্যমে তারা আজ আলাদা আলাদা জীবন পেয়েছে। আমরা এতে খুব খুশি। তাদের কন্যা সন্তানের মুখ দেখলে মনটা ভরে যায়। আরও তাদের অপারেশনের দরকার আছে। আর তো তাদের এতো টাকা পয়সা নাই। এবারের চিকিৎসার জন্য যদি কোন দানশীল মানুষ তাদের পাশে দাড়ায় তাহলে হয়তো ভালোভাবে চিকিৎসাটা শেষ করতে পারবে।

শিশু নুহা ও নাবার বাবা আলমগীর হোসেন রানা বলেন, নুহা-নাভা কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করার পর থেকে কোমর ও মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো থাকে। পরের দিন আমি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। এখানকার ডাক্তার ঢাকা মেডিকেল না হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যেতে বলে। পরে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জনের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জন ডা. মোহাম্মদ হোসেন স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেন। 
তিনি বলেন, স্যার আমার বাচ্চা দুইটার জন্য অনেক কিছু করেছে। স্যার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন। আমরা প্রায় ৩২ মাস হাসপাতালে থাকি। বাড়ির জমি বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা খরচ করি। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যয় করে ৩৫ লাখ ও এক দানশীল ব্যক্তি ১৫ লাখ টাকা দেন। এখনো তাদের আরও একটি করে অপারেশন বাকি আছে। ৪-৫ মাস পর সেই অপারেশন করতে হবে। এছাড়াও তাদের পিছনে প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা খরচ লাগে। মেয়েদের চিকিৎসা করতে গিয়ে তো আমারও মোটর শ্রমিকের চাকরিটা চলে গেছে। এখন অবস্থা খুব খারাপ। কিভাবে বাকি চিকিৎসাটা করাব সেই চিন্তায় বাঁচি না।