ঢাকা, বৃহস্পতিবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৪ ২:১৪:৪৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
রাজধানীতে দোলনায় ফাঁস লেগে কিশোরীর মৃত্যু ৮ দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় নান্দি নাদাইতওয়া হলেন নামিবিয়ায় প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বার্তা ঢাকা-দিল্লির রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক আজ বিবিসির ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় বাংলাদেশের রিক্তা

সৈয়দা শাহার বানু : অকুতোভয় এক ভাষাসৈনিক

অপর্ণা আনন্দ | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:৪৯ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রবিবার

সৈয়দা শাহার বানু : অকুতোভয় এক ভাষাসৈনিক

সৈয়দা শাহার বানু : অকুতোভয় এক ভাষাসৈনিক

সৈয়দা শাহার বানু ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক এবং সিলেটে নারী জাগরণের অগ্রদূত। তার বর্ণাঢ্যময় রাজনৈতিক জীবন ভাষা আন্দোলন এবং সিলেটের ঐতিহাসিক গণভোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়ে ১৯৪৮ সালে সিলেট জেলার মহিলাদের পক্ষ থেকে পূর্ববঙ্গের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়। আর ঐতিহাসিক এই স্মারকলিপির অন্যতম উদ্যোক্তা ও স্বাক্ষর দাতা ছিলেন শাহার বানু চৌধুরী।

জন্ম এবং পরিবার : ১৯১৪ সালে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুরের সৈয়দপুরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শাহার বানু। তার বাবা সৈয়দ আবুল বাশার চৌধুরী। তার দাদা ছিলেন মরমী কবি সৈয়দ আশহর আলী। তার প্রপিতা দেওয়ান সৈয়দ আজমল আলী চৌধুরী ছিলেন জমিদার।

বাংলাদেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন তার সন্তান।

সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড : স্বামী এডভোকেট আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ ছিলেন একজন বলিষ্ঠ আইনজীবি এবং রাজনীতিবিদ। স্বামীর প্রেরণায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ছিলেন সিলেট মহিলা মুসলিম লীগের অন্যতম উদ্যোক্তা। ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত সিলেট মহিলা মুসলিম লীগের সহ সভানেত্রী ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সিলেট মহিলা সমিতির সভাপতি হন।

সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ছিলেন আসাম পার্লামেন্টে প্রথম মুসলমান নারী এমপি। সিলেটের ঐতিহাসিক গণভোটে তার অবদান ছিলো অপরিসীম। ঘরে ঘরে নারীদের কাছে যেয়ে তাদের সংগঠিত করতেন তিনি। যা গণভোটে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। এসময় রক্ষনশীল সমাজ এবং কংগ্রেসের শক্তিশালী বাঁধা উপেক্ষা করে ঝুঁকির মধ্যে তাকে কাজ করতে হযয়েছে তাকে।

সিলেট মহিলা কলেজের শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন শাহার বানু চৌধুরী। ১৯৫০ এ কলেজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি। মেট্রিক পাস মেয়েদের কলেজে ভর্তি করার জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরে মেয়েদের বুঝাতেন।

ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা : বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়ে ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনের শুরুর দিকেই সিলেট জেলার নারীদের পক্ষ থেকে পূর্ববঙ্গের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়। ঐতিহাসিক এই স্মারকলিপির অন্যতম উদ্যোক্তা ও স্বাক্ষরদাতা ছিলেন শাহার বানু চৌধুরী। সিলেটে ভাষার জন্য সমস্ত আন্দোলনে তিনি অন্যতম নেতৃত্ব প্রদান করেন।

আরেক মহান ভাষা সৈনিক জোবেদা খানম চৌধুরী এবং অন্যান্যদের সাথে ভাষার অধিকার আদায়ের এই সংগ্রামের কারণে বিভিন্ন পাকিস্থানপন্থী মহলের কাছে তাদের নিগৃহীত হতে হয়। পত্রিকায় কুৎসা রটানো থেকে শুরু করে সামাজিকভাবে বিভিন্ন লাঞ্চনার শিকার হন এই মহান ভাষা সংগ্রামীরা। কিন্তু তিনি পিছ পা হননি।

মৃত্যু : সৈয়দা শাহার বানু ১৯৮৩ সালের ২১ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।