ঢাকা, বুধবার ২০, নভেম্বর ২০২৪ ১৩:২৮:০৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
লেবাননে সংঘাতে ২শ’রও বেশি শিশু নিহত: ইউনিসেফ জাহাঙ্গীরনগরে অটোরিকশার ধাক্কায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় `ব্লকেড` পদত্যাগ করেছেন হাইকোর্টের তিন বিচারপতি রাজধানীতে তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের কারণে সবকিছু বদলে যাবে না ডেঙ্গুরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, রক্ষা পাবেন যেভাবে

অতিথি পাখিতে মুখরিত জাবি ক্যাম্পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ১২:০৩ এএম, ৩০ মার্চ ২০১৮ শুক্রবার

অতিথি পাখির কোলাহলে মুখরিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। প্রকৃতিতে শীত নামার সঙ্গে সঙ্গে অতিথি পাখিরা ভিড় করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে। পাখির কলকাকলি, ঝাঁকে ঝাঁকে বিচরণ, জলকেলি আর খুনসুটিতে মুখর হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। বাংলাদেশে যে কয়টি অভয়াশ্রমে অতিথি পাখি আসে তার মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট-বড় ১০ থেকে ১২টি লেকে অবাধ বিচরণ শীতের পাখির।

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট বড় ১৬/১৭টি লেক থাকলেও মাত্র ৩টি লেক অর্থাৎ প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন লেক এবং মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন লেকগুলোতে অতিথি পাখির পদচারণা বেশি থাকে। এ লেকগুলোকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

 

লেকগুলোর বুকজুড়ে ফুটে আছে লাল শাপলা। এতে যেন সবুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বেড়ে গেছে অনেক বেশি। নানা রঙের, নানা স্বভাবের পাখি দেখতে প্রতিদিনই ক্যাম্পাসে ভিড় করছেন পাখিপ্রেমীরা। ক্যাম্পাসে ছোট-বড় আধভাঙা উঁচু ঢিবি আর জলাশয়ের পাড়ে অনেক সরালি ঝাঁক বেঁধে উড়ছে। আবার কেউ কেউ বসে আছে উঁচু ঢিবিতে। কেউ কেউ যেন হালকা রোদে ঝিম মেরে বসে রোদ মাখছে শরীরে। আবার পরক্ষণেই ঝপাৎ করে বসে যাচ্ছে জলাধারে। কোনোটি আবার সাঁতার কাটছে আপন মনে। অদূরে লম্বা ঠোঁটওয়ালা শামুকভাঙা পাখি জলাশয় থেকে খুঁটে খুঁটে শামুক খাচ্ছে। পানকৌড়ি, দুগ্ধধবল বক জলাশয়ের লাল শাপলা শোভিত পাতার গা বেয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। আর এসবই আকর্ষণ করছে পাখিপ্রেমীদের। তারা দেখছেন মুগ্ধতায়। ছবি তুলছেন মনের আনন্দের।

 

 

প্রতিবছর সেপ্টেম্বরে হিমালয়ের উত্তরে শীত জেঁকে বসে। তখন ওই অঞ্চলে শীত ও ভারি তুষারপাতে টিকতে না পেরে পরিযায়ী পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে ঝাঁকে ঝাঁকে পাড়ি জমায় বাংলাদেশে। মূলত বাংলাদেশে অক্টোবরের শেষ থেকেই এ পরিযায়ী পাখিদের আগমন ঘটে। মার্চে যখন শীতের বিদায় ঘণ্টা বেজে ওঠে তখন এসব পরিযায়ী পাখি আবার ফিরতে শুরু করে সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, হিমালয় অঞ্চল, চীন ও ভারতে।

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক পর্যাবেক্ষণ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি বছর ২৪৪ প্রজাতির অতিথি পাখির মধ্যে ক্যাম্পাসে সাধারণত ১২/১৩ প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব পাখি আসে তার মধ্যে বেশির ভাগই হাঁস জাতীয়, যারা পানিতে বসবাস করে। 

 

জাবির লেকগুলোতে অতিথি পাখির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতিসহ বিলুপ্ত প্রজাতির পাখিরও দেখা মেলে। সচরাচর যেসব পাখি দেখা যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- জলময়ূর, ডুবুরি, খোঁপা ডুবুরি, ছোট পানকৌড়ি, বড় পানকৌড়ি, শামুকভাঙা বা শামুক খোলা, কালো কুট, কাদা খোঁচা বা চ্যাগা, জলের কাদাখোঁচা পাখি, ছোট জিরিয়া, বাটান, চা পাখি, সবুজ পা, লাল পা পিও, লাল লতিফা বা হটটিটি, গঙ্গা কবুতর, কাল মাখা গঙ্গা কবুতর লেঞ্জা, কুন্তি হাঁস, জিরিয়া হাঁস, নীলশির, গ্যাডওয়াল, লালশির, পাতারি হাঁস, বামনীয়া, ভুটি হাঁস, কালো হাঁস, চখা-চখি, বালি হাঁস, বড় সরালি, ছোট সরালি, রাজহাঁস, কানি বক, ধূসর বক, গো বক, সাদা বক, ছোট বক, মাঝলা বক, কালেম বা কায়েন প্রভৃতি প্রজাতি। তবে এখন পর্যন্ত যেসব প্রজাতির পাখি এসেছে তার মধ্যে সরালিই বেশি।

 

 

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিনটি লেক লিজ না দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, ঘোষণা করেছে পাখির অভয়ারণ্য। অতিথি পাখির নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। লেকগুলো পরিষ্কার করা হয়। এ বছরেও পাখিদের নিরাপত্তার জন্য লেকগুলোতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা এবং নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রয়েছে নিরাপত্তা কর্মীদের সতর্ক অবস্থান। পাখিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন জায়গায় লাগানো রয়েছে ব্যানার ও ফেস্টুন। সেখানেও আছে বিভিন্ন নির্দেশনা।