ঢাকা, রবিবার ২৪, নভেম্বর ২০২৪ ৯:৩৫:৩৩ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
সাময়িক বন্ধের পর খুললো যমুনা ফিউচার পার্ক ডেঙ্গুতে আরও ১০ জনের প্রাণ গেল ডেঙ্গুতে এ বছরেই ৫১ শিশুর প্রাণহানি মাকে হত্যা করে থানায় হাজির ছেলে আমদানির সাড়ে তিনগুণ দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু ঢাকায় আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারের গণসংবর্ধনা

অাজও বেনজিরের প্রতি শ্রদ্ধায় ছড়িয়ে থাকে গোলাপ!

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ১২:১৯ পিএম, ২৭ জুলাই ২০১৮ শুক্রবার

পাকিস্তানের রাওয়ালপিণ্ডি! দুই প্রধানমন্ত্রীকে একই জায়গায় খুন করা হয়েছিল৷ পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা৷ তাই একে কাকতালীয় বলা যাবে না৷ শুধু এটাই ঘটনা যে একজনের নামে তৈরি হওয়া বিশাল উদ্যানে অন্যজনের প্রতি এখনো শ্রদ্ধায় ছড়িয়ে থাকে গোলাপ পাপড়ি৷ ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের রক্ষণশীল মনোভাবকে তুড়ি দিয়ে উড়িয়েছিলেন বেনজির ভুট্টো৷ যে কারণে সমকালীন পাক প্রজন্মের কাছেও তিনি এখনো শ্রদ্ধা পান৷

 

সেই বিশেষ দিনটি নয়৷ প্রায় প্রতিদিনই রাওয়ালপিণ্ডির বিখ্যাত লিয়াকত বাগে দেখা যায় গোলাপ ছড়িয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কেউ৷ এখানেই খুন করা হয়েছিল পাকিস্তানের তথা মুসলিম দুনিয়ার প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকে৷ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছিল আলোড়ন৷ পাকিস্তান পিপলস পার্টির সুপ্রিমো তথা নির্বাসন কাটিয়ে দেশে ফেরা বেনজিরকে খুনের পিছনে বিভিন্ন কারণ উঠে এসেছে৷ তদন্তে হয়েছে৷ কিন্তু ওই পর্যন্তই৷ নামমাত্র চার্জশিট দাখিল করেই খান্ত দিয়েছে প্রশাসন৷

 

রাজনীতিতে প্রবেশ অনেক আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সংস্পর্শে এসেছিলেন বেনজির৷ ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয় পাক সেনাবাহিনী৷ জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ৷ যুদ্ধ পরবর্তী সিমলা চুক্তির সময় বাবা বাবা জুলফিকর আলি ভুট্টোর সঙ্গে ভারতে যান যুবতী বেনজির৷ সেখানেই ইন্দিরার নজরে পড়েন ভবিষ্যতের পাক রাজনীতির তারকা৷ আশ্চর্য ঘটনা, ইন্দিরা খুন হয়েছিলেন৷ পিতা জুলফিকরকে ফাঁসিতে মরতে হয়৷ আর আততায়ীর হামলায় বেনজিরকেও জীবন ছাড়তে হয়েছে৷ আরও আশ্চর্য ইন্দিরাপুত্র তথা বেনজিরের ‘বন্ধু’ রাজীব গান্ধীও নাশকতায় মারা গেছেন৷

 


বাবার মৃত্যুর পর দেশ ছেড়েছিলেন৷ ঝড়টা উঠেছিল ১৯৮৬ সালে৷ নির্বাসন কাটিয়ে পাকিস্তানে ফিরেই চমক দিলেন বেনজির৷ একার হাতে সামাল দিলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-কে৷ তারপরেই বিপুল উত্থান৷ জিয়া-উল-হকের সেনা শাসনের পরবর্তী সময়ে তীব্র রাজনৈতিক আন্দোলনের ধাক্কায় ক্ষমতায় চলে এল পিপিপি৷ প্রধানমন্ত্রী হয়ে নজির গড়লেন বেনজির৷ খানিকটা সুস্থতার পথে যাওয়ার চেষ্টা করছিল পাক গণতন্ত্র৷ একইসঙ্গে চলছিল সরকার ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা৷ সেই ধাক্কায় ১৯৯০ সালে বরখাস্ত হন বেনজির৷ বিপুল জনমত নিয়ে ফের ক্ষমতায় আসেন ১৯৯৩ সালে৷ ১৯৯৬ সালের ৬ নভেম্বর তাকে পুনরায় বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তী ১৯৯৭ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়েছিলেন বেনজির৷ শুরু তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির মামলা৷ আট বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে ২০০৭ এর অক্টোবরে বেনজির পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করেন।

 

 

নির্বাচন ঘনিয়ে আসছিল৷ বেনজির দেশে ফিরতেই চাঙ্গা হয়ে ওঠে পিপিপি৷ দল নেত্রীকে নিয়ে শুরু হয় প্রচারপর্ব৷ ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডির বিখ্যাত লিয়াকত বাগে নির্বাচনী সমাবেশ শেষে গাড়িতে উঠছিলেন বেনজির ভুট্টো৷ সেই মুহূর্তে আত্মঘাতী হামলা হল৷ বিস্ফোরণ ও গুলিতে মারাত্মক জখম হলেন বেনজির ভুট্টো৷ পরে তাঁর মৃত্যু হয়৷

 

রাওয়ালপিন্ডির এই মাঠ যেন ইতিহাসের করুণ সাক্ষী৷ এখানেই খুন হয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান৷ ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর এক জনসভায় পরপর দুটি গুলি করা হয় পাক প্রধানমন্ত্রীকে৷ রক্তাক্ত খান সাহেব লুটিয়ে পড়েছিলেন৷ সেই মাঠেই ৫৬ বছর পর রক্তে ভেসে গিয়েছিলেন বেনজির ভুট্টো৷ খবরটা ছড়িয়ে পড়তেই থমকে গিয়েছিল পাকিস্তান৷ ততক্ষণে নিস্তেজ হয়ে গিয়েছেন বিশ্বের প্রথম মহিলা মুসলিম প্রধানমন্ত্রী৷ ‘প্রাচ্যের কন্যা’র জন্য গোলাপ ফুল ছড়িয়ে থাকে লিয়াকত বাগে৷ কে জানে কে ছড়িয়ে দেয় এসব৷

(বিদেশী পত্রিকা থেকে)