আইসিটি সেক্টরে কর্মসংস্থান বাড়ছে মেয়েদের
অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ১০:০৪ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার
আইসিটি সেক্টরে কর্মসংস্থান বাড়ছে মেয়েদের। ছবি : উইমেননিউজ২৪.কম।
রাফিজা আক্তার এইচএসসি পাশ করেছে ২০১৮ সালে। এসএসসি এবং এইচএসসি দুটো পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। তার ইচ্ছা ছিল বুয়েটে পড়ার। ভর্তি পরীক্ষার আগে তার স্কুলের এক শিক্ষক পরামর্শ দেন কম্পিউটার সায়েন্সের বিষয়টি যেন সে মাথায় রাখে। কারণ, বর্তমান ডিজিটাল যুগে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে পড়ালেখার মূল্য অনেক। আর এক্ষেত্রে নারীরা এখনও পিছিয়ে।
স্যারের পরামর্শ খুব মনে ধরল রার্ফিজার। বিশেষ করে নারীরা পিছিয়ে আছে কথাটি শুনে তার আগ্রহ বেড়ে গেল। তারপর একদিন সত্যি বুয়েটে কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হলো সে।
ঊনচল্লিশ বছর বয়সী মিরপুর নিবাসী চম্পা বিশ্বাসের গল্পটি কিছুটা ভিন্ন। একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ-এমবিএ শেষ করার পর চাকরি নেয় একটি এনজিওতে। দু’ বছর চাকরি করার পর বিয়ে হয় তার। বিয়ের পরও চাকরি করছিল চম্পা। কিন্তু বিয়ের তিন বছর পর প্রথম সন্তান হলে কিছুটা সমস্যায় পড়ে যায়। তারপরও চাকরি করছিল সে। এর দুই বছর পর আরো একটি সন্তান হয় তাদের। এরপর দুই বাচ্চাকে সামলানোর জন্য চাকরি ছেড়ে দেয় । এখন বড়টি ক্লাস নাইনে। আর ছোটটি ক্লাস সেভেনে। তারা দু’জন স্কুলে চলে গেলে বাসায় আর তেমন কাজ থাকেনা চম্পার।
স্বামী বিপ্লবের সাথে বেশ কিছুদিন এ নিয়ে আলোচনা করার পর সিদ্ধান্ত হয় চম্পা কম্পিউটার বিষয়ে স্বল্প-মেয়াদী একটি কোর্স করবে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করার জন্য। চার-মাস মেয়াদী কোর্স শেষে বাসায় বসেই আউটসোসিংয়ের কাজ শুরু করে চম্পা। শুরুর দিকে কাজ পেতে কিছুটা বেগ পেতে হলেও ছয়-সাত মাস পর থেকে তার দম ফেলার সময় থাকে না। এমনকি গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয় তাকে। শেষে সিদ্ধান্ত নেয় বাইরে এ ধরনের কাজ জানে এমন চারজন নারীকে নিয়োগ দিবে। এভাবে বর্তমানে চম্পার অধীনে ১১ জন নারী আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে। সব খরচ বাদ দিয়ে গড়ে প্রতি মাসে চম্পার ৫০,০০০/- টাকা থেকে ৫৫,০০০/- থাকে তার।
বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক-এর তথ্য মতে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ নব্বইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার সায়েন্স অথবা তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পড়ছে প্রায় ২৫ শতাংশ মেয়ে। ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষ হতে চালিত জরিপে এ তথ্য পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৫ শতাংশ ছাত্রীর মধ্যে পড়ালেখা শেষে ১৩ শতাংশ আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির সাথে যুক্ত হন। আর মাত্র এক শতাংশ নারী আইসিটি সংক্রান্ত কোন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিওএসএন) এর মতে, ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত আইসিপিসি ঢাকা রাউন্ডের প্রাথমিক বাছাই পর্বে ৯৭৯টি টিমের মধ্যে মাত্র পাঁচটি টিম ছিল যেখানে নারী নেতৃত্ব দিচ্ছে।
জরিপ শেষে বিওএসএন নারীদের উৎসাহী করতে বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক প্রচার চালায়। ফলপ্রসু ২০১৬ সালে দেখা যায় বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ওই একই প্রতিযোগীতায় ১২৯টি টিমে নারী অংশ নিয়েছে।
বিওএসএন সাধারণ সম্পাদক মুনীর হাসান বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল মেয়েদের আরো বেশি করে আইসিটি সেক্টরের সাথে সংযুক্ত করা। এ লক্ষ্যে আমরা দু’টি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি–‘গার্লস ইন আইসিটি’, এবং ‘মিসিং ডটার’। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গনিতে মেয়ের অংশগ্রহণের সংখ্যা বাড়ানো। আর এসব ক্ষেত্রগুলোতে তারা যেন তাদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারে। কারণ এসব সেক্টরে মেয়েদের অংশগ্রহণ আশানুরুপ নয়।
তিনি বলেন, বিওএসএন অনেক উদ্দীপনামূলক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুধুমাত্র ছাত্রীদের উৎসাহ দিতেই আমাদের এতসব প্রচারনা চালাতে হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তথ্য মতে, প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ১.২ মিলিয়ন চাকরি তৈরি হয়। আর এসব চাকরির অধিকাংশই ছেলেদের দখলে থাকে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট পরামর্শ দিয়েছেন ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে চাকরি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বর্তমানের চেয়ে আরো বেশি পরিমানে বাড়াতে হবে।
পুরুষদের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ যদি ৩৩.৭ শতাংশ হতে বাড়িয়ে ৮২ শতাংশ করা যায় তবে বাংলাদেশের জিডিপি গ্রোথও ১.৬ শতাংশ বেড়ে যাবে।
এদিকে বর্তমান সরকারও আইসিটি সেক্টরে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। আইটি সেক্টরে দশ হাজারেরও বেশি দক্ষ নারী জনবল গড়ে তোলার লক্ষ্যে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের আর্থিক সহযোগীতায় পরিচালিত লিভার্জিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট এন্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রোজেক্টের অধীনে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ নারী যাতে অংশগ্রহণ করে সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ডিভিশনের অধীনে এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) উদ্যোগে পরিচালিত এই এলআইসিটি প্রোজেক্ট চালু হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪,০০০ নারী ও পুরুষকে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রশিক্ষিত ১০,০০০ নারীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারহানা এ রহমান বলেন, অন্যান্য সেক্টরের তুলনায় আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি নারীর কর্মক্ষেত্রের জন্য অনেক বেশি উপযোগী।
তিনি বলেন, যেসব নারীরা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তারা এই সেক্টরে আসতে পারেন। এই সেক্টরে কাজের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে।
সূত্র : বাসস
- লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত, যেমন থাকবে আবহাওয়া
- ২০ লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করলো মেটা
- সর্দি-জ্বরে বেহাল দশা? স্বস্তি মিলবে ঘরোয়া উপায়ে
- পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রিতে
- শীতে ত্বক ভালো রাখবেন যেভাবে
- ‘সাগরের তীর থেকে’ খ্যাত গানের শিল্পী জীনাত রেহানা হাসপাতালে
- ব্রাজিলে বাস খাদে পড়ে ২৩ জনের প্রাণহানী
- বগুড়ায় আগাম জাতের আলু চাষ
- ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ
- হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা আর ঢুকতে পারবে না
- ‘মেগা মানডে’ ঘোষণা, ঢাকা কলেজের সব ক্লাস বন্ধ
- স্কলাসটিকায় ঠাকুর’মার ঝুলির নাটক মঞ্চস্থ
- পাবনায় শিমের ভালো ফলনে কৃষকের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা
- পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
- জেনে নিন বিমানবন্দর নেই যে সব দেশে
- ঘুরে আসুন পানামসহ না.গঞ্জের পাঁচটি পর্যটন স্পট
- আজ পহেলা অগ্রহায়ণ, হেমন্তকাল শুরু
- বিশ্ব হার্ট দিবস আজ
- হেমন্তে ছাতিম ফুল সুগন্ধ ছড়িয়ে যায়
- শান্তিতে নোবেল পেল জাপানের মানবাধিকার সংস্থা নিহন হিদানকিও
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন আজ
- ‘রিমান্ড’-এ মম
- রাজু ভাস্কর্যের নারী প্রতিকৃতিতে হিজাব, যা জানা গেলে
- পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপে ঘুরে দাঁড়াল ভারতের মেয়েরা
- সৈয়দ শামসুল হকের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
- নেপালে ভয়াবহ বন্যা-ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১১২
- জীবনে প্রেম এসেছে ৬ বার: স্বস্তিকা
- পঞ্চগড় থেকে দেখে আসুন কাঞ্চনজঙ্ঘা
- গৃহশ্রমিক মেয়েদের দিন কষ্টে কাটে