আগামীকাল ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস
অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০১:২৮ পিএম, ২৪ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার
আগামীকাল ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস
আগামীকাল ভয়াল ২৫ মার্চ। বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৭১ সালের এইদিনের শেষে এক ভয়াল বিভীষিকাময় রাত নেমে এসেছিল। মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালী জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
বাঙালীর স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারপর নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা, যা এ বছরই ৫০ বছর পূর্ণ করল।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয় বাংলাদেশে। সরকারি এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, গণহত্যা দিবসে শুক্রবার রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারা দেশে প্রতীকী ‘ব¬্যাক আউট’ পালন করা হবে। এ সময় সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও স্থাপনায় কোনো আলোকসজ্জা করা যাবে না। তবে, ২৬ মার্চ সন্ধ্যা থেকে আলোকসজ্জা করা যাবে। কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনাগুলো ব¬্যাক আউটের আওতামুক্ত থাকবে।
গণহত্যা দিবসে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা মহানগর পশ্চিম কমিটি আগামী ২৫ মার্চ, ২০২২শুক্রবার সকাল ১০ টায় মিরপুরে নুরি মসজিদ জল্লাাদখানা বধ্যভূমি এবং কেন্দ্রীয় কমিটি ও মহানগর দক্ষিন কমিটি সকাল ১১টায় রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে।
জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি সূর্যাস্তের সময় জাসদ কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গণশহীদদের স্মরণে আলোক প্রজ্জ্বলন করবে । একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রাত ৮টা ৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোক প্রজ্জ্বলন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে, তারই নাম অপারেশন সার্চলাইট। এই অভিযানের নির্দেশনামা তৈরি করে পাকিস্তানের দুই সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। এই নির্দেশনামার কোনো লিখিত নথি রাখা হয়নি। গণহত্যার সেই পুরো নির্দেশ মুখে মুখে ফরমেশন কমান্ডার বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়। অনেক পরে, ২০১২ সালে, মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা আ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওউন কান্ট্রি নামে একটি আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশিত সে আত্মজীবনীতে প্রথমবারের মতো অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়।
অপারেশন সার্চলাইট কীভাবে পরিকল্পিত হয়, ১৯৭১ সালের সে স্মৃতিচারণা করে খাদিম হোসেন রাজা লিখেছেন, ‘১৭ মার্চ, সকাল প্রায় ১০টা বাজে। টিক্কা খান আমাকে ও মেজর জেনারেল ফরমানকে কমান্ড হাউসে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে খবর পাঠান। খবর পেয়ে আমরা দুজন টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করি। গিয়ে দেখি, সেখানে জেনারেল আবদুল হামিদ খানও রয়েছেন। টিক্কা খান আমাদের বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ মুজিবের সমঝোতা আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট চান আমরা যেন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহন করি এবং সে অনুযায়ী একটা পরিকল্পনা তৈরি করি। এ ছাডা আর কোনো মৌখিক বা লিখিত নির্দেশনা আমরা পাইনি। আমাদের বলা হয়, পরদিন ১৮ মার্চ বিকেলে আমরা দুজন যেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করি।’ পরদিন সকালেই খাদিম হোসেন রাজা তাঁর কার্যালয়ে রাও ফরমান আলীকে নিয়ে বসেন। তাঁরাই গণহত্যার এ অভিযানের নাম দেন অপারেশন সার্চলাইট।
মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চ রাত সম্পর্কে লিখেছেন, ‘সেই রাতে ৭০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়, গ্রেফতার করা হল আরো ৩০০০ লোক। ঢাকায় ঘটনার শুরু মাত্র হয়েছিল। সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চললো মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট। লুট আর ধ্বংস যেন তাদের নেশায় পরিণত হল। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হল। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুন তাড়িত শ্মশান ভূমি।’
পাইকারি এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেও রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্কট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল, তাতে বলা হয় : ‘১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।’
১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্তানি জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। এদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। সকাল থেকেই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। হেলিকপ্টারযোগে তারা দেশের বিভিন্ন সেনানিবাস পরিদর্শন করে বিকেলের মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে ফিরে আসে।
ঢাকার ইপিআর সদর দফতর পিলখানাতে অবস্থানরত ২২তম বালুচ রেজিমেন্টকে পিলখানার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
মধ্যরাতে পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ট্যাঙ্ক ও মর্টারের মাধ্যমে নীলক্ষেতসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল নেয়। সেনাবাহিনীর মেশিন গানের গুলিতে, ট্যাঙ্ক-মর্টারের গোলায় ও আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে উঠে বিভীষিকাময়।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীর জনসংযোগ অফিসারের দায়িত্বে থাকা সিদ্দিক সালিক-এর ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থেও এ সংক্রান্ত একটি বিবরণ পাওয়া যায়। সিদ্দিক সালিক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জেনারেল নিয়াজীর পাশেই ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অনুগত পাকিস্তানি হিসাবে পাক সামরিক জান্তার চক্রান্ত তিনি খুব কাছে থেকেই দেখেছেন। ২৫ মার্চ, অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর মুহূর্ত নিয়ে তিনি লিখেন ‘নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সামরিক কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। এমন আঘাত হানার নির্ধারিত মুহূর্ত (এইচ-আওয়ার) পর্যন্ত স্থির থাকার চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেল। নরকের দরজা উন্মুক্ত হয়ে গেল।’
পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল পদক্ষেপ চূড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান। সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে ২৬ মার্চ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।
- বাংলাদেশে বর্ষাকালে যে সব ফুল ফােটে
- ছুটির দিনেও আশুলিয়ায় ১৪০০ কারখানায় চলছে কাজ
- রাজধানীতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সমাবেশ
- সরকারি ৫ মেডিকেল কলেজে নতুন অধ্যক্ষ
- আসছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল, থাকবে এক মাস
- মুরগি-ডিমের নতুন দাম নির্ধারণ করে দিলো সরকার
- আমার ছড়ার জার্নি: ওরে আমার ছড়া রে
- ইরানে কারাবন্দি ৩৪ নারীর অনশন
- সরকারি ৬ কলেজে নতুন অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগ
- আকস্মিক বন্যা-বৃষ্টিতে ক্ষতি যেসব জেলায়
- যাত্রী সংকটে ভারতগামী ফ্লাইট বন্ধ করল নভোএয়ার
- দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ৪৬ ঘণ্টা পর লঞ্চ চলাচল শুরু
- চীনে ৭০ বছর পর শক্তিশালী টাইফুনের আঘাত
- এবার ভিসা জটিলতায় পরীমণি!
- রাজধানীতে তীব্র মাথাব্যথা নিয়ে তরুণীর মৃত্যু!
- বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
- সরকার কোটা সংস্কারের পক্ষে: আইনমন্ত্রী
- কোটা আন্দোলন:পরিবহন খাতে ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকা!
- এই কাজ আমার জন্য চ্যালেঞ্জ নয়: পরিবেশ উপদেষ্টা
- ঢাকাসহ সারাদেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
- সিরাজগঞ্জে এমপির বাসায় আগুন, দুই মরদেহ উদ্ধার
- মাদার তেরেসার ১১৪তম জন্মদিন আজ
- কোটা আন্দোলন নিয়ে যা বললেন চঞ্চল-তিশা-ভাবনা
- অভিনয়শিল্পী-নির্মাতাদের সংহতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
- আজ বাইশে শ্রাবণ, রবী কবির প্রয়াণ দিবস
- পর্যটক না আসায় হতাশ টাঙ্গুয়ার হাওরের শ্রমিকরা
- ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের দুই শিল্পীকে শোকজ
- নতুন মুখ নিয়ে দল গোছান, আওয়ামী লীগকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- রাজধানীসহ সারা দেশে দেড় হাজার ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভাঙচুর
- শখের বশে সফল উদ্যোক্তা সুমনা