ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১, নভেম্বর ২০২৪ ১৯:০২:৫১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
রাজধানীতে আজও অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধ আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামল ১৪ ডিগ্রিতে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সরকার সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

আসছে শীত, এসময় শিশুদের যেসব রোগ হয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক  | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৫০ পিএম, ৩ নভেম্বর ২০২৪ রবিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

প্রকৃতিতে চলছে হেমন্ত। ইতোমধ্যেই শহরের বাইরে বইতে শুরু করেছে শীতের হাওয়া। ঋতু পরিবর্তনের এই সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুরা। শীত আসলে যার মাত্রা আরও বাড়ে। এসময় শিশুর বাড়তি যত্ন নেওয়া জরুরি। 

শীতে শিশুদের কোন রোগগুলো বেশি হয়? যত্ন নিয়ে করণীয় কী? চলুন জেনে নিই- 

সাধারণ সর্দি-জ্বর বা ভাইরাল ফ্লু

শীতে সবচে বেশি দেখা দেয় ভাইরাল ফ্লু। কেবল ঠান্ডা লাগার কারণেই যে শিশু এসময় অসুস্থ হয় এমনটা নয়। বায়ুবাহিত রোগজীবাণু সহজেই বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং শিশুদের আক্রমণ করে বলে তারা অসুস্থ হয়। এসময় বাতাসে থাকে প্রচুর ধুলাবালি যা শ্বাস প্রশ্বাসের সময় নাক দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করে। ফলে গলায় কিংবা নাকে প্রদাহ, সর্দি, কাশি’সহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

অতিরিক্ত দূষিত ধোঁয়া ও ধুলা শিশুর নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাইটিসের মতো সমস্যার কারণ হতে পারে। শীতের শুরুতে দেখা দিতে পারে সর্দি জ্বর বা ভাইরাল ফ্লু। এটি ভাইরাসজনিত একটি ছোঁয়াচে রোগ যা ৫-৭ দিনে ভালো হয়ে যায়। ভাইরাল ফ্লুর কারণে শিশুদের নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া, বুকে আওয়াজ হওয়া, হালকা কাশি ও জ্বর, চুলকানি, অরুচি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। 

এক্ষেত্রে সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। কফ সিরাপ ও অ্যান্টি সিস্টামিনজাতীয় ওষুধ সেবনে শিশু সুস্থ হয়ে যায়। ওষুধের পাশাপাশি শিশুকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে শীতকালীন শাকসবজি। 

নিউমোনিয়া

শীতে নবজাতক ও ছোট্ট শিশুদের নিউমোনিয়া হতে পারে। ২ মাসের কমবয়সী শিশুদের শ্বাস নেওয়ার হার প্রতি মিনিটে ৬০ বার। ২ মাস থেকে ১২ মাস বয়সী শিশুদের প্রতি মিনিটে ৫০ বার। ১ বছর থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুর প্রতি মিনিটে ৪০ বার। এর বেশি শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে তাকে শ্বাসকষ্ট বলা হয়।

নিউমোনিয়া হলে কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, দ্রুত নিঃশ্বাস, পাঁজরের নিচের অংশ ভেতরের দিকে দেবে যাওয়া, খেতে না চাওয়া, নিস্তেজ হয়ে পড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। নিউমোনিয়া হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান শিশুকে। 

ব্রঙ্কিওলাইটিস

নিম্ন শ্বাসতন্ত্রের একটি সংক্রমণ এটি। ফুসফুসের ক্ষুদ্রনালি ব্রঙ্কিউলে ভাইরাসের কারণে প্রদাহ হলে সাধারণত ব্রঙ্কিওলাইটিস হয়। এই স্বাস্থ্য সমস্যায় দুই বছরের কম বয়সের শিশুদের মধ্যে নাক দিয়ে পানি পড়া, সেসঙ্গে শ্বাসকষ্ট ও কাশি থাকে।

অনেকে এই শ্বাসকষ্টকে নিউমোনিয়া ভেবে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে শিশুর চিকিৎসা করেন শিশুর। এতে ছোটবেলা থেকেই অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে যায় শিশুর। তাই ব্রঙ্কিওলাইটিস শনাক্তকরণ খুব জরুরি।

সাধারণত ৩-৫ দিনের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে যায় এবং ৭-১০ দিনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট ও শ্বাসকষ্টের রেজুলেশন দেখা যায়। অনেকসময় ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত কাশি থাকে। অবস্থা গুরুতর হলে হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন হয় শিশুকে।

হাঁপানি

সাধারণত ১২-১৮ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে হাঁপানি দেখা যায়। অভিভাবকরা সহজে এই সমস্যা শনাক্ত করতে পারেন না। অ্যাজমা শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। এতে শিশুর শ্বাসনালিতে প্রদাহ ও সংকীর্ণতার সৃষ্টি হয়। ফলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় শিশুর।

শীত আসার আগে বা শীতের শুরুতে এর প্রকোপ বেড়ে যায়। অ্যালার্জির সমস্যার কারণেও অনেকসময় অ্যাজমা দেখা দেয়। ডাক্তারের পরামর্শ মত চললে একে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব খুব সহজেই।

হাঁপানির প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো- দম বন্ধভাব, শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট হওয়া, শোঁ শোঁ শব্দ, ঘুম থেকে উঠে বসা। হাঁপানি আক্রান্ত শিশুদের সামনে কোনোভাবেই ধূমপান করা যাবে না। কোনো খাবারে অ্যালার্জি থাকলে সেগুলো শিশুকে খাওয়াবেন না। সেসঙ্গে শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। 

ডায়রিয়া

শীতের শুরুতে শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়াও দেখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সারাদিনে তিনবার বা তার বেশি পানির মতো পায়খানা হলে তাকে ডায়রিয়া বলা যেতে পারে। এটি ভাইরাস (রোটা, এডিনো ভাইরাস), ব্যাকটেরিয়া (সালমনেলা, সিগেলা, ইকোলাই) ও পরজীবী (জিয়ারডিয়া) দ্বারা সংঘটিত হয়।

ডায়রিয়া থেকে দূরে রাখতে শীতে শিশুকে হালকা গরম পানিতে হাত ধোওয়ানোর অভ্যাস করুন। বেশি বেশি হালকা গরম পানি পান করতে দিন। এতে শিশুর পানিশুন্যতা পূরণ হবে। অন্যদিকে শিশুর আর ঠান্ডা লাগবে না। 

চর্মরোগ

শীতে সবার ত্বকই শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। বেড়ে যায় চর্মরোগের ঝুঁকি। শীতে ত্বকের পর্যাপ্ত ময়েশ্চারাইজার দরকার হয়। এ সময় ত্বকের যত্ন না নিলে শিশুরা ছোঁয়াচে চর্মরোগে আক্রান্ত হতে পারে।

নিয়মিত শিশুর শরীরে লোশন লাগাতে হবে যেন ত্বক শুষ্ক হয়ে না যায়। ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে শিশুকে সুরক্ষা দিতে এসময় খোলামেলা পরিবেশে খুব বেশি খেলাধুলা করতে না দেওয়াই ভালো। বিশেষ করে শৈত প্রবাহের সময়।