ঢাকা, রবিবার ২৯, ডিসেম্বর ২০২৪ ৭:১৮:৩৯ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ইসরায়েলের হামলায় গাজার শেষ হাসপাতালটিও বন্ধ হয়ে গেছে পঞ্চগড়ে পাঁচ দিন ধরে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, বিপর্যস্ত জনজীবন আজ দেশের যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না ছুটির দিনে সড়কে প্রাণ গেলো ১২ জনের দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার নারী ইউপি সদস্যের মৃত্যু সচিবালয়ে সাংবাদিকসহ বেসরকারি সব ‘প্রবেশ পাস’ বাতিল

ঈদ-বৈশাখ ঘিরে জমে উঠেছে ফ্যাশন হাউসগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৫২ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২২ সোমবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সাত তলায় দেশীয় ১০টি ফ্যাশন হাউজের সম্মিলিত ব্র্যান্ড শপ দেশী দশ। যেখানে একই ছাতার নিচে মেলে ফ্যাশন অনুরাগীদের পছন্দের পোশাক, গয়না ও ঘর সাজানোর উপকরণ। সেই কারণে গত কয়েক বছর ধরে দেশী দশের যে কোনো ব্র্যান্ড শপ থেকে ঈদের পোশাক কিনেন বেসরকারি চাকরিজীবী আতিকা রহমান। তবে এবারের প্রেক্ষাপটটা ভিন্ন। করোনা অতিমারির কারণে গত দুই বছরে ঈদের আমেজ ছিল কাগজে কলমে। তবে এবার ঈদের আগেই বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ।

দেশী দশের ১০টি ব্র্যান্ড হলো- রং, অঞ্জনস, সৃষ্টি, দেশাল, বিবিয়ানা, সাদাকালো, বাংলার মেলা, নিপুণ ডট কে ক্রাফট ও নগরদোলা। বড় দুই উৎসব উপলক্ষে ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে উঠেছেন নতুন পোশাক, জমতে শুরু করেছে তাদের বেচাকেনা।

রোববার (১০ এপ্রিল ) আতিকা রহমান দুই উৎসবকে কেন্দ্র করে স্বামী ও নিজের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছিলেন ১১টার কিছু আগে। ঘণ্টা দেড়েক ঘুরে নিজের হতাশার কথা জানালেন। আক্ষেপের সুরে পোশাকের দাম ও পুরোনো পোশাক বিক্রির অভিযোগ জানালেন।

তিনি বলেন, যে কোনো উৎসবে দেশীয় ব্র্যান্ডের দোকানগুলো বাদে অন্য দোকানে সাধারণত ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানি ডিজাইনের থ্রি পিছ, ওয়ান পিস, গাউন বিক্রি হয়। অন্যদিকে দেশী দশের দোকানগুলোতে থাকে দেশীয় সংস্কৃতি বা ভাবধারার ডিজাইন। তবে এবারের কালেকশন দেখে খুবই হতাশ। বেশিরভাগই পুরানো জামা। সালোয়ার বা থ্রি পিছে এক ঘেয়ামি কাজ।

আতিকা বলেন, ঈদের দিন প্রচুর গরম থাকবে। স্বাভাবিকভাবেই হালকা কাজের সুতির জামার চাহিদা এবার বেশি থাকবে। কিন্তু এমন পোশাকের পরিমাণ কম। এমনও হতে পারে ফ্যাশন হাউজগুলো গত দু বছরের স্টক শেষ করছে।
দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দাম গত বছরের তুলনায় ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা বেশি। কিন্তু যে ফেব্রিক্সটা তারা দিচ্ছে সেটার এতো দাম হওয়ার কোনো যুক্তি নেই। সিম্পল ডিজাইনের আছে জামায় দাম ২৫০০টাকার উপরে। আজ হয়তো কেনা হবে না এখান থেকে।

দাম নিয়ে এমনই অভিযোগ জানালেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নাদিরা তিন্নি। তিনি বলেন, সব কিছুর দাম বেড়েছে, তবে পোশাকের দাম মনে হচ্ছে খুব বেশি বেড়েছে। ঈদ পোশাকে লং টপস সবকিছুতেই আভিজাত্যের পাশাপাশি কাট থাকছে নিরীক্ষাধর্মী। নেকলাইনে বৈচিত্র্য, কারচুপির কাজ, ওভারসাইজ সিলুয়েট, সুতি কাপড় এসবের চাহিদা আছে।

দেশী দশের ফ্যাশন হাউজগুলো একই সঙ্গে দুই উৎসবের জামা-কাপড় এনেছে। পোশাকে প্রাধান্য পেয়েছে ঋতু। বৈশাখকে সামনে রেখে বৈচিত্র্যময় রং ও সাধারণ ডিজাইনের পোশাকের সমাহার করা হয়েছে। গরমে আরাম দিতে সুতি বা আরামদায়ক ফেব্রিক দিয়ে তৈরি হয়েছে বেশিরভাগ পোশাক। তবে পোশাকের দাম নিয়ে গৎবাঁধা উত্তর বিক্রেতাদের।

এবারের ঈদের ট্রেন্ড কী সেটা নিয়ে মত পার্থক্য আছে ক্রেতাদের মধ্যে। বেশিরভাগ নারী বলছেন, দেশীয় পোশাকে কুচির কাজ চলছে বেশ। স্কার্ট কিংবা শাড়ি এমন কি ব্লাউজে কুচির কাজের প্রাধান্য চোখে পড়ছে। পাশাপাশি গরমকে মাথায় রেখে সিম্পল ডিজাইনের জামা অনেকেই নিচ্ছেন। কুচি দেওয়া লেয়ারের স্কার্ট, টপস পছন্দ অনেকেরই। ব্লকের শাড়ি, বুকে হাতে সেলাইয়ের ওয়ান পিস বা থ্রি পিছের চাহিদাও বেশ। তবে সবারই চাওয়া এই গরমে আরামদায়ক পোশাক।

ফ্যাশন হাউজ সৃষ্টির ম্যানেজার মিজান বলেন, এবার আমাদের সিঙ্গেল কামিজ বেশি বিক্রি হচ্ছে। সেখানে কুচির কাজ, এমব্রডারির কাজ থাকছে। আমরা বৈশাখের কালেকশন কম উঠিয়েছি, ঈদের কালেকশনই বেশি উঠিয়েছি। ছেলেদের পাঞ্জাবিও চলছে বেশ। ছেলেদের পাঞ্জাবিতে এবার বুকে, হাতায় কাজ চলছে বেশি। প্রিন্টর পাঞ্জাবিরও চাহিদা রয়েছে।

বাড়তি দামের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই বছরের ব্যবসা মন্দা, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি এসব কারণ উৎপাদন ব্যয় বেশি পড়ছে পোশাকের। এ কারণে দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে ফ্যাশন হাউজগুলো।

নাট্যকর্মী ফারিয়া আবেদিন জানান, সুতির, কম গরম লাগবে, আরামদায়ক এমন পোশাক খুঁজছি। কেননা দেখা যাবে ঈদের দিন দুপুরে একটু বের হতে হবে, সেক্ষেত্রে পোশাক আরামদায়ক না হলে ঈদের আনন্দটা স্বস্তি দায়ক হবে না।

এখনো প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি শুরু হয়নি জানিয়ে দেশালের এক বিক্রয় কর্মী বলেন, ঈদ ও বৈশাখকে কেন্দ্র করেই আমাদের পোশাক এসেছে। আলাদা করে ডিজাইন করা হয়নি যে এটা বৈশাখের, অন্যটা ঈদের। আমরা সব সময়ই আরামদায়ক পোশাকে প্রাধান্য দেই। এবার ও তেমন হয়েছে।

তিনি বলেন, বিক্রি এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি। ১৫ রোজার পরে বিক্রি বাড়বে আশা করছি।

জানা যায়, ছেলেদের ফতুয়া, পাঞ্জাবী, হাতাকাটা শার্ট কিংবা ফুলহাতা শার্টেও শুধুই উজ্জ্বল রঙ বা নিরীক্ষাধর্মী প্যাটার্নের পাশাপাশি নজর রাখা হয়েছে আবহাওয়ার বিষয়টিও। ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেলে করা ডিজাইনে করা পাঞ্জাবি ও পায়জামার চাহিদাও বেশ। পাঞ্জাবির কলার আর প্ল্যাকেটেও থাকছে ভিন্নতা। টিশার্ট, পলো কিনছেন ছেলেরা। শার্টে প্রাধান্য পেয়েছে প্রিন্ট, স্ট্রাইপ ও জ্যাকার্ড ইত্যাদি। এছাড়া বাচ্চাদের জন্য আরামদায়ক পোশাকের সমাহার বেশি। ছেলে শিশুদের পাঞ্জাবি, টিশার্ট, শার্টে ব্যবহার করা হয়েছে বাহারি ডিজাইন ও গ্রাম বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্যের বিভিন্ন মোটিভ। মেয়ে শিশুদের জন্য ফ্রক, পার্টি ফ্রক, থ্রি পিছ, জাম্পসুট ইত্যাদি থাকছে।