ঢাকা, শুক্রবার ২২, নভেম্বর ২০২৪ ২৩:০৭:১৮ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ঢাকায় আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারের গণসংবর্ধনা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে, বাড়ছে শীতের তীব্রতা পেঁয়াজ-সবজি-মুরগির দাম কমলেও আলুর দাম বাড়তি রাজধানীতে মা-মেয়েকে এসিড নিক্ষেপ করে ছিনতাই

একজন নারীর যেসব টিকা নেয়া খুবই প্রয়োজন

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:২১ পিএম, ১ এপ্রিল ২০২২ শুক্রবার

ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

সামিয়া আক্তার বাস করেন রাজধানীর কাঠালবাগান এলাকায়। ২৫ বছর বয়সী সামিয়া  সদ্য মা হয়েছেন। স্বামী-সন্তান নিয়ে বেশ ভালই চলছিলো। তবে  কিছুটা আর্থিক  অস্বচ্ছলতার  কারণে  গর্ভাবস্থায় সব নিয়ম মেনে  চলতে পারেননি। বিষয়টি  তিনি  সবার সাথে শেয়ারও করতে পারেননি। সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় তার শরীরে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়। তবে সন্তান ভুমিষ্ঠ হওয়ার কিছু দিন পর বিষয়টি পরিচিত এক ডাক্তারের কাছে খুলে বলেন সামিয়া। ডাক্তার সব শুনে বুঝলেন গর্ভাবস্থায় যতগুলো টিকা নেয়া দরকার কিংবা যে নিয়মগুলো প্রতিপালন করা দরকার তা হয়নি। ডাক্তার তাকে বুঝালেন একজন সুস্থ মা  একটি দেশের জন্য গুরুত্বপুর্ন। 

ঢাকা মেডিকেল  কলেজ ও হাসপাতালের  স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ  অধ্যাপক রাহেলা আক্তার বলেন ,‘প্রতিটি মানুষই সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে চায়। সুন্দরভাবে  জীবন যাপন করতে হলে প্রতিটি মানুষেরই প্রয়োজন সু-স্বাস্থ্য। তবে একজন নারীর  সুস্বাস্থ্য আরো বেশি প্রয়োজন। কেননা নারী গর্ভ ধারন করে। তার গর্ভে জন্ম গ্রহণ করে দেশের ভবিষ্যত। একটা সুন্দর আগামী  পেতে হলে নারীর সু-স্বাস্থ্যের প্রয়োজন অনেক বেশি। এদিকে  বিশেষ দৃিষ্ট দেয়া প্রয়োজন।’

গর্ভ ধারন করার সাথে সাথে তার স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ  নজর দেয়া প্রয়োজন, সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে প্রয়োজন  নারীর সুস্বাস্থ্য।  

কমিউনিটি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: মো: শহীদুল্লাহ  বলেন, ‘নারীর সু-স্বাস্থ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি গর্ভের শিশু  ও নবজাতকের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কিছু টিকা বিশেষভাবে  প্রয়োজন। হাম, রুবেলা ও ধনুস্টংকার প্রতিরোধে টিটি টিকাসহ  কয়েকটি টিকা  এর মধ্যে অন্যতম।’

তিনি বলেন, ‌‌‘অন্ত:সত্ত্বা অবস্থায় একজন নারীর জন্য এজমার টিকা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। অন্ত:সত্ত্বা অবস্থায় কোন নারী রুবেলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে চোখে ছানি, মাথা ছোট, বধিরতা- এসব সমস্যা নিয়ে শিশুর জন্ম হত পারে। একে বলে জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম। যে কোন শিশুর বয়স ৯ মাস পুর্ন হলে প্রথম ডোজ ও  ১৫ মাস পুর্ন হলে  দ্বিতীয় ডোজ এমআর টিকা নিতে হয়।’

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি আরো বলেন, ‘যেসব মেয়ে শিশুকে শৈশবে এই টিকা দেয়া হয়নি, তাদেন রুবেলা প্রতিরোধের জন্য পরবর্তী সময় মা হওয়ার আগেই হাম, মাম্পস ও রুবেলা প্রতিরোধী টিকা নিতে হয়। গর্ভধারনের কমপক্ষে একমাস আগে এমআর বা  এমএমআর টিকা নিতে হবে।

টিটি টিকা সম্পর্কে ডা: শহীদুল্লাহ বলেন, ‌‘ধনুষ্টংকার প্রতিরোধে মেয়েদের বয়স ১৫ বছর হলেই যথাশিগগির প্রথম ডোজ টিটি টিকা নিত হবে। এর চার সপ্তাহ পর  দ্বিতীয় ডোজ আর ছয় মাস পর  তৃতীয় ডোজ, এর  এক বছর পর চতুর্থ ডোজ এবং শেষোক্ত ডোজের এক বছর পর  পঞ্চম ডোজ বা  শেষ ডোজ টিটি টিকা নিতে হবে। গর্ভধারনের আগেই  টিটি টিকার এই পাঁচ ডোজ নেয়া থাকলে গর্ভকালীন আর নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। গর্ভ ধারনের আগে দুই ডোজ টিকা নেয়া থাকলে গর্ভকালীন তৃতীয় ডোজ এবং সন্তান প্রসবের পর চতুর্থ ও পঞ্চম ডোজ নিতে হবে। গর্ভধারনের  আগে তিন ডোজ দেয়া থাকলে এবং গর্ভকালীন এক বছর অতিক্রান্ত না হলে  এ সময় চতুর্থ ডোজ নেয়ার প্রয়োজন নেই। সন্তান প্রসবের পর চতুর্থ ও পঞ্চম ডোজের টিকা নিতে হবে। তবে আগে টিটি টিকা নেয়া না থাকলে গর্ভকালীন  দুই  ডোজ টিটি টিকা নিতে হবে। এর মধ্যে শেষ ডোজটি সন্তান প্রসবের অন্তত এক মাস আগে নিতে হবে।’

হেপাটাইটিজ বি প্রতিরোধে একজন নারীকে মোট তিন ডোজ টিকা নিতে হয়। গর্ভবতী মায়ের হেপাটাইটিজ বি হলে সন্তান প্রসবের  সময় এ রোগের  জীবানু  শিশুর শরীরে প্রবেশ করতে পারে। কাজেই  গর্ভধারনের আগেই একজন নারীর তিন ডোজ হেপাটাইটিজ বি টিকা নেয়া জরুরী।

জরায়ূমুখে ক্যানসার নারীদের একটা কমন সমস্যা। কিন্তু সমস্যার কিছু কারণ আছে। তবে সচেতন হলে  এ সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। জরায়ূমুখ ক্যানসারের অন্যতম কারণ  হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাস। এই ভাইরাস রোধে একাধিক টিকা আছে। ৯ বছর বয়স থেকে শুরু করে ১৩ বা ১৫ বছরের এসব  টিকা নিতে হবে। দুই ডোজের এই টিকার প্রথম ডোজের ছয় মাস পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। ১৫ বছর বয়সের মধ্যে এ টিকা না নিলে ১৫ থেকে ২৬ বছর বয়সের মধ্যে তিন ডোজ নিতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রথম ডোজের এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজ এবং ছয়মাসের সময় তৃতীয় ডোজ নিতে হবে। অর্থাৎ একজন নারীকে জরায়ূমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে মোট তিন ডোজ টিকা নিতে হবে।