ঢাকা, সোমবার ২৫, নভেম্বর ২০২৪ ৮:২৮:০১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ ১০ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৮, লেবাননে ৩৩ প্রাণহানী প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়েই প্রিয়াঙ্কার বাজিমাত বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস

কালো মুরগিতে শাহানাজের মাসে আয় অর্ধলাখ টাকা 

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৩৮ পিএম, ২ জানুয়ারি ২০২২ রবিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

শাহানাজ আক্তার (৩৫)। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের পেলাইদ গ্রামে বাসিন্দা। স্বামী আবু ইউসুফ, দুই সন্তান অলি উল্ল্যাহ ও আমান উল্ল্যাহকে নিয়েই তার সাজানো সংসার। বাড়ির পাশেই একটি দাখিল মাদরাসার সহকারী সুপার পদে তার স্বামী চাকরি করেন। দুই ছেলে বোর্ডিংয়ে থেকে পড়াশোনা করেন। প্রায় সময় পুরো বাড়িতে একাই থাকেন শাহানাজ। একাকিত্ব তাকে সবসময় পীড়া দিতো।

শাহানাজ চিন্তা করেন বাড়িতে অলস সময়টুকু কীভাবে কাজে লাগানো যায়। সেই চিন্তা থেকেই আঙিনায় রোপণ করেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফলের গাছ। পাশাপশি বাড়ির সৌন্দর্য বর্ধনে রেখেছেন ফুল গাছও। এভাবেও যেন সময় কাটছে না তার। তাই আরও ভালো কিছু করার ইচ্ছা করেন। জানান তার বড় ভাই ফখরুল ইসলামকে। ভাই তাকে কাদাকনাথ মুরগি পালনের পরামর্শ দেন।

ভাইয়ের পরামর্শ ও আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে উপজেলার পেলাইদ গ্রামে ২০০ কাদাকনাথ মুরগির বাচ্চা ক্রয় ও শেড তৈরি করেন। তাতে প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা ব্যয় হয়। মুরগি পালন শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই সফলতার দেখা পায় শাহনাজ। ভাইয়ের দেওয়া টাকা পরিশোধ করে এখন তিনি প্রতি মাসে আয় করছেন অর্ধলাখেরও বেশি টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির আঙিনায় তিনি গড়ে তুলেছেন ইউনিক কাদাকনাথ ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারি নামে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানেই কাজ করছিলেন তিনি।


কাজের এক ফাঁকে শাহানাজ জানান, স্বামীর আয়ে তার সংসার বেশ ভালোই চলছিল। সংসারে কোনো পিছুটান ছিল না। তবুও ঘরে বসে থাকার চেয়ে কিছু করলে আয়ের পাশাপাশি সময় ভালো কাটবে, সেই ইচ্ছাটি বড় ভাইয়ের কাছে বলেন। পরে বড় ভাই ইচ্ছার কথা শোনামাত্রই কাদাকনাথ মুরগি পালনে উৎসাহিত করেন। এখন বড় ভাইয়ের কাছে থেকে ধার নেওয়া টাকা পরিশোধ করেও ১০/১২ লাখ টাকা লাভ গুণছেন।

শাহানাজ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মুরগি বিক্রির ভিডিও ছেড়ে দেওয়া হলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে করে আমার বাড়িতে আসেন। এছাড়াও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে মুরগি ও ডিম অর্ডার দেন। এছাড়াও কুরিয়ার সার্ভিসে ডিম এবং দেশের বিভিন্ন জায়গার চলাচলকারী বাসে বিশেষভাবে প্যাকেটজাত করে মুরগি পাঠানো হয় এবং টাকা বিকাশে পরিশোধ করে দেন। মুরগির পাশাপাশি কাদাকনাথ মুরগির প্রতিটি ডিম ৫৫-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। 

তিনি বলেন, এলাকায় ব্রয়লার-লেয়ার মুরগির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যারা ব্রয়লার-লেয়ার মুরগি পালন করেন, তারা এক ব্যাচ মুরগি পালার পর লাভের মুখ দেখলেও দ্বিতীয় ব্যাচে অনেক সময় লোকসান গুণতে হয়। কিন্তু কাদাকনাথ মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি, ঝুঁকি কম। চিকিৎসক-ওষুধপত্রে খুব বেশি খরচ নেই। তাই অন্যান্য মুরগির চাইতে খরচ অনেকাংশে কম।

স্থানীয় বাসিন্দা কুলসুম বলেন, শুরুতে আমরা প্রতিবেশীরা কাদাকনাথ মুরগি দেখে উপহাস করতাম। কিন্তু এখন শাহনাজের কাছ থেকে এই মুরগি পালনের নানা বিষয়ে জানতে যাই। তিনিও আমাদের নানা তথ্য, পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। তার মতো স্বাবলম্বী হতে চাই। একই কথা বলেন, ওই গ্রামের বাসিন্দা সোলেমা, নার্গিস ও নাছিমা।    


 
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান পলাশ বলেন, শাহনাজ বেগম বর্তমান সমাজে এক আইকন। একজন নারী হয়ে তিনি কাদাকনাথ মুরগি পালনে বেশ সফলতা দেখিয়েছেন। এর আগে প্রাণিসম্পদ মেলায় তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং দ্বিতীয় স্থানও দখল করেছিলেন। তাকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে নানা ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।