ঢাকা, শুক্রবার ২০, সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪:০৯:০১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ভারী বর্ষণে নড়াইলে মৎস্য ও কৃষিতে ৭০ কোটি টাকার ক্ষতি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করায় দাম কমছে ডলার সংকটের কারণে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট হবে না ৩ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টি, হুঁশিয়ারি সংকেত যেসব বিভাগ ও জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বইবে নিউইয়র্কে হচ্ছে না ড. ইউনূস-মোদির বৈঠক জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি বাংলাদেশকে ৬০০ মিলিয়ন ইউরো দেওয়ার প্রতিশ্রুতি জার্মানির

কুমিল্লায় বন্যায় স্বাস্থ্য খাতে ক্ষতি ২৫ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০৫ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বুধবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বন্যায় অন্যান্য খাতের মতো বিপুল পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার স্বাস্থ্য খাতও।বন্যায় স্বাস্থ্য খাতে ক্ষতির পরিমান প্রায় ২৫ কোটি বলে প্রাথমিকভাবে  ধারনা করা হচ্ছে।
রক্ষা পায়নি ৬টি উপজেলার লাখ লাখ মানুষের ভরসার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো। বন্যার পানি ঢুকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর এক্স-রে মেশিন, ইপিআই টিকাদান রুম, হাসপাতালের নিজস্ব সার্ভার, ওষুধের ষ্টোর রুমসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসা নিতে আসা প্রান্তিক মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলে বিঘিœত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। বর্তমানে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ক্ষয়ক্ষতির পরিমানও দৃশ্যমান হচ্ছে। তবে জেলার সিভিল সার্জন বলছে, বন্যাকবলিত এলাকায় চিকিৎসা সেবা চালু রয়েছে।
সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়া কুমিল্লার ৬টি উপজেলার বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে, ইতিমধ্যে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে। নষ্ট সকল আসবাবপত্রগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে একে বের করে আনছে। হাসপাতালের বহি:বিভাগ যেন ধ্বংশস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সগুলোতে পানিবাহিত নানান রোগবালাই নিয়ে হাসপাতালে ছুটছে মানুষ। তারপরও বন্যায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে হাসপাতালটির একদল চিকিৎসক। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, কুমিল্লার ১৪টি উপজেলায় ৯৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ৬টি সাব-সেন্টার ও ১৪টি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলার চৌদ্দগ্রামের বাতিশা গ্রামের মজিবুর রহমান তার মাকে নিয়ে এসেছিলেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তার মায়ের হাতে প্রচন্ড ব্যাথ্যার কারণে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু বন্যার পানি হসপিটালের ভিতরে প্রবেশ করায় এক্স-রে মেশিনটি বিকল হয়ে যায়। ডাক্তার বলছেন, বাইরে থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য। শুধু মুজিবর রহমান নয়, চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা অধিকাংশ রোগীর একই অবস্থা। এবারের বন্যায় শুধু উপজলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ের অনেক সরকারি হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিক। ফলে জেলার অনেক উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা বিঘিœত হচ্ছে। হাসপাতালের সিনিয়র নার্স খালেদা আক্তার বাসসকে বলেন, এরকম বন্যা আমি এর আগে কখনো দেখিনি। আমি বিগত ১৭ বছর এ হাসপাতালে চাকরি করে যাচ্ছি। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনো পড়ি নাই। পানি বেড়ে হাসপাতালের নিচতলা সম্পূর্ণ পানিবন্ধি হয়ে হাসপাতালে দ্বিতীয় তলায় রোগী ও ডাক্তারা পানিবন্ধি হয়ে পড়েছিলো। হাসপিটালটির আবাসিক চিকিৎসক ডাক্তার হাসান মাহমুদ পাটোয়ারী বলেন, হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। কম্পিউটারসহ আনুসাঙ্গিক যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা সামগ্রী দ্রুত না পেলে অনেক চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম থেকে সেবাগ্রহীতারা বঞ্চিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, অতীতের অনেক বন্যায় হাসপাতালের মূল ভবনের ভিতরে পানি প্রবেশ করেনি। এবারের বন্যা পানিতে সকল রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যায়। হাসপাতালের ওষুধ, বিভিন্ন মেশিনসহ সকল মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। এদিকে গোমতী নদী ও সালদা নদীর বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানিতে জেলার বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলাও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় সেবা কার্যক্রম ব্যহত হয়। ব্রাক্ষণপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন আমিন ভুঁইয়া বলেন, এবারের বন্যায় উপজেলার প্রায় সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মুবিন বলেন, গোমতী ও সালদা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে এ উপজেলার ৯৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভিতরে পানি ঢুকায় স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত থাকে কিছুদিন। বন্যার পানি কমতে থাকায় নানা দুর্ভোগ সত্ত্বে আমরা রোগীদের চিকিৎসাসেবা শুরু করেছি। 
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার ১৪টি উপজেলার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের কমবেশি অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, ইপিআই আইএলআর ফ্রিজ, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি, এক্স-রে মেশিন, এমএসআর সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন নাসিমা আক্তার  বলেন, বন্যাকবলিত উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স গুলোতে চিকিৎসাসেবা চালু রয়েছে। বন্যায় স্ব্যাস্থ্যখাতে জেলায় ৬টি উপজেলার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ কোটি টাকা প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হয়েছে।  এখনও চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহিত বিভিন্ন মেশিনারিজগুলো খুলে পানি শুকানোর চেষ্টা করছেন। পানি পুরোপুরি নেমে গেলে স্ব্যাস্থ্যসেবায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানা যাবে।