ঢাকা, শুক্রবার ২৮, ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪৬:৪৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
রোজা শুরুর আগেই বেড়েছে বেশ কিছু পণ্যের দাম গাজায় ধ্বংসস্তূপে মিলল আরও ১৭ লাশ তরুণ প্রজন্ম দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে: সেনাপ্রধান মধ্যরাতে ভূমিকম্পে ফের কেঁপে উঠলো উত্তরাঞ্চল দরিদ্র নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান

কৃষিতে নারীর স্বীকৃতি ও ভূমিতে অধিকার প্রতিষ্ঠায় করণীয় বিষয়ক সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৭:৫৭ পিএম, ৪ নভেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নারীর অধিকার আদায়ে দূর্বার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দলোন গড়ে তুলতে হবে করোনা সংক্রমণে সমগ্র বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে দিশেহারা, বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীরা তখন লড়াই করছেন এ দেশের সকল মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তা বিধানে। অথচ, কৃষক হিসেবে নারীদের স্বীকৃতি এবং ভূমি মালিকানা না থাকায় গ্রামীণ নারীরা প্রয়োজনীয় কৃষিঋণ এবং অন্যান্য সহায়তা পাচ্ছে না। এ অবস্থার পরিবর্তনে দূর্বার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বক্তারা।

আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবসের আলোকে আজ ৪ নভেম্বর সকালে এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি) আয়োজিত “কৃষিতে নারীর অবদান এবং ভূমিতে অধিকার: কোভিড-উত্তর বাস্তবতায় করণীয়” শীর্ষক ভার্চ্যূয়াল আলোচনায় উপস্থিত বক্তারা বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেছেন।

এ আলোচনায় গবেষণাভিত্তিক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের  সহযোগী অধ্যাপক ড. সানজিদা আক্তার। 

কোভিডকালীন সময়ে গ্রামীণ নারী কৃষকদের মাঠ পর্যায়ের অবস্থা পর্যবেক্ষণে এএলআরডি’র সহায়তায় এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে।

দিনাজপুর, পাবনা, রাঙ্গামাটি ও সুনামগঞ্জের কিছু এলাকা থেকে এই গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন উপস্থাপনায় ড. সানজিদা বলেন , এ গবেষণায় দেখা যায় যে ফসল উৎপাদনের পূর্ব প্রস্তুতি থেকে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত নারীরা পুরুষের সমান কাজ করেন। এমনকি, গৃহপালীত হাঁস, মুরগী, গরু-ছাগল পালনেরও নারীরা পুরুষের সমান কাজ করছেন। কোভিডকালীন সময়ে নারীরা তাদের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে সংসারের খরচ যুগিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, নারীর কাছে কোন তথ্য নেই, তারা সরকারি সেবা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এমনকি তারা মনে করেন যে কৃষি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি পুরুষদের জন্য। তাছাড়া, অধিকাংশ দরিদ্র নারীদের হাতে কোন মোবাইল থাকে না। কিন্তু পরিবারের পুরুষ সদস্যটি সেই সুবিধা পেয়ে থাকেন। উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণেও নারীরা সাংঘাতিকভাবে পিছিয়ে আছেন। বাজারে বা ফসলের মাঠে নারীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

বারি-র উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাজিম উদ্দীন বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। নারীকে শ্রদ্ধাবোধ ও মর্যদার জায়গা দিতে হবে। নারীর হাতে যতসামান্য ভূমির মালিকানা থাকলেও তা প্রয়োগের সামর্থ্য নারীর নেই। এ অবস্থান থেকে উত্তোরণের একমাত্র উপায় হিসেবে তিনি বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার দাবি জানান।

হাংগার ফ্রি ওর্য়াল্ডের দেশীয় প্রতিনিধি আতাউর রহমান মিটন বলেন, কৃষিবিষয়ক পড়াশোনা এবং গবেষণায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং সচেতনতা বাড়াতে হবে। কৃষি ঋণ এবং এ বিষয়ক অন্যন্য সুবিধাদি নারীর হাতে পৌঁছে দিতে হলে বিশেষায়িত নীতিমালা দরকার। সামগ্রীক ভূমি, কৃষি সংস্কার প্রক্রিয়া নারীবান্ধব হতে হবে।

উত্তর অঞ্চলের বেসরকারি সংস্থা সিডিএ-র পরিচালক শাহ-ই-মবিন জিন্নাহ বলেন, সম অধিকারভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য আইনি সংস্কার ও সামাজিক সংস্কারের পাশাপাশি কৃষি ভূমি সংস্কার করতে হবে। রাষ্ট্রের সকল পরিকল্পনায় পরিবর্তনশীল লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

আদিবাসী নারী নেত্রী সারা মারান্ডী বলেন, নারী কৃষক শ্রমিকরা পুরুষের সমান কাজ করলেও মজুরী কম পাচ্ছে। তাই শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেলেও সেটা অর্থনৈতিকভাবে সমমূল্যায়ন ঘটছে না।
প্রভা রাণী বলেন, চা বাগানে কর্মরত নারীদের কোনো নিরাপত্তা দেয়া হয় না। বাগানে বিভিন্ন বিষাক্ত পোকা মাকড়ের আক্রমণ থেকে সুরক্ষায় নারীদের জন্য কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।

আলোচনার সভাপতি এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, সম অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে। এ আন্দোলনে সকলকে যুক্ত করার জন্য আমাদের নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে।

এছাড়াও, এ আলোচনায় স্থানীয় পর্যায়ের মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।