ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬, নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৪৩:৫০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় নারীসহ ৫ অটোরিকশা যাত্রী নিহত ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বেড়েছে দাম গ্রীসে অভিবাসীদের নৌকাডুবি: ৬ শিশুর মরদেহ উদ্ধার ১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কাঁপছে নীলফামারী বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, বন্দরগুলোতে সতর্ক সংকেত খালেদা জিয়াকে উমরাহ পালনের আমন্ত্রণ জানাল সৌদি আরব পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রিতে

জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু ১ ফেব্রুয়ারি

এসএম মুন্না | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ০১:০৭ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ শুক্রবার

কবিতার আশ্রয়ে অন্যায় ও অশুভের প্রতিবাদ জানিয়ে ১৯৮৭ সাল থেকে শুরু হয়েছিল জাতীয় কবিতা উৎসব। প্রতিবাদী চেতনার প্রতীক হওয়া উৎসবটি স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ছড়িয়েছে মর্মবাণী। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের মৌলিক চরিত্রকে ধারণ করা আয়োজনটি ইতোমধ্যে অতিক্রম করেছে ৩১টি বছর। সেই ধারাবাহিকতায় এবার রাষ্ট্রহীন মানুষের বেদনার কথা বলবে ৩২তম জাতীয় কবিতা উৎসব।

 

 

‘দেশহারা মানুষের সংগ্রামে কবিতা’ স্লোগানে কাল ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে কবি সায্যাদ কাদিরকে উৎসর্গীকৃত দুই দিনের এ উৎসব। ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে উৎসব উদ্বোধন করবেন বরেণ্য কবি আসাদ চৌধুরী। এ বছরের উৎসব সঙ্গীত রচনা করেছেন কবি মহাদেব সাহা। উৎসব আঙিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থগার প্রাঙ্গণের হাকিম চত্বর। এবারের উৎসবে অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন ৯ দেশের ১৭ জন কবি। স্বাগতিক বাংলাদেশের পক্ষে সারা দেশ থেকে অংশ নেবেন ৩০০ জন নবীন-প্রবীণ ও প্রখ্যাত কবি।

 


এ উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে উৎসব আয়োজক জাতীয় কবিতা পরিষদ। পরিষদের সভাপতি কবি ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত। এছাড়া বক্তব্য রাখেন কবি আসাদ চৌধুরী, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কাজী রোজী, উৎসব আহ্বায়ক রবিউল হুসাইন, সুইডেনের কবি ক্রিশ্চিয়ান কার্লসন প্রমুখ।

 


বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসানের সমাধিসৌধ এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শুরু হবে উৎসব আনুষ্ঠানিকতা। এরপর উৎসব আঙিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরের উৎসব মঞ্চ থেকে পরিবেশিত হবে জাতীয় সঙ্গীত। সেই সঙ্গে উত্তোলন করা হবে জাতীয় পতাকা। গাওয়া হবে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি শীর্ষক একুশের গান ও উৎসব সঙ্গী। এবারের উৎসব উদ্বোধন করবেন বরেণ্য কবি আসাদ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করবেন পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ। গত বছরের প্রয়াত কবি-সাহিত্যিক ও শিল্পীদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করবেন আমিনুর রহমান সুলতান। সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য দেবেন তারিক সুজাত।

 


উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে অনুষ্ঠিত হবে ‘দেশহারা মানুষের সংগ্রামে কবিতা’ বিষয়ক মুক্ত আলোচনা। ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ আলোচনায় অংশ নেবেন উৎসবে যোগদানকারী আমন্ত্রিত কবিরা। দেশের বাইরে থেকে উৎসবে অংশ নেওয়া নয় দেশের কবিদের তালিকাও চূড়ান্ত হয়েছে। ৩২তম উৎসবে অংশগ্রহণকারী ভিন দেশি কবিদের মধ্যে রয়েছেন সুইডেনের আরনে জনসন, ক্রিস্টিয়ান কার্লসন ও ভিভেকা জোরেন, যুক্তরাজ্যের এগনেস মেডাওস, ক্যামেরুনের জয়সে আওসাতাতাং, মিশরের ইব্রাহীম এলমাসরি, মেক্সিকোর ইউরি জামব্রানো, জাপানের টেন্ডু তেইজিন, তাইওয়ানের মিয়াও-ওয়াইতুম এবং কলম্বিয়ার মারিও মাথর। অংশ নেবেন ভারতের বিভিন্ন ভাষার কবিরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন কবি আশিস সান্যাল, সুবোধ সরকার, রাতুল দেববর্মণ, দিলীপ দাশ, সংঘ মিত্রা চক্রবর্তী, প্রদীপ কর, অলোক বন্দ্যোপাধ্যায় ও আবৃত্তিশিল্পী সৌমিত্র মিত্র। স্বদেশের প্রতিনিধিত্বকারী ৩০০ কবি এবারের উৎসবে কবিতাপাঠ করবেন। কবিতা পাঠ ছাড়াও কবিতা নিয়ে বিভিন্ন সেশনেও অংশ নেবেন তারা।

 


সংবাদ সম্মেলনে মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘দেশহারা মানুষের মর্মবেদনাকে ধারণ করে অনুষ্ঠিত হবে এবারের কবিতা উৎসব। সারা দেশের ৩০০ কবির সঙ্গে উৎসবে অংশ নেবেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনেসর প্রতিনিধিরা। বাংলা ভাষার সাহিত্যচর্চার অনন্য আয়োজন এই কবিতা উৎসব। আর এ উৎসবটি শুধু কবিদের জন্য নয়। কবি ও তার জনতার সঙ্গে সম্পৃক্ত এ উৎসব। মানুষের কথা বলাই এ উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য। এ কারণেই ভারতের প্রখ্যাত কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এ আয়োজনে যুক্ত হয়েছি বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশের কবিতা উৎসবে অংশ নিয়েছি, কিন্তু কোথাও কবিতা নিয়ে এমন বৃহৎ ও চমৎকার আয়োজন দেখিনি’।

 


এ বছরের উৎসবের প্রতিপাদ্য প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, ‘‘স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, গণতন্ত্র হনন, যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং বর্বরতার বিরুদ্ধে দেশের কবিরা অব্যাহতভাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের কবিরা চিরকালই প্রগতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত ও রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষে কথা বলবে ৩২তম উৎসব। জাতিগত সন্ত্রাসের শিকার হয়ে অতীত ও বর্তমান মিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এসব দেশহারা মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। এই দেশহারা মানুষের অনিশ্চিত যাত্রা এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারনৈতিক ও মানবিক সিদ্ধান্তে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে পতিত হওয়া এসব মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। আসন্ন কবিতা উৎসবে দেশ-বিদেশের শুভবাদী কবিরা এসব দেশহারা মানুষের সংগ্রামে কবিতার অমল শক্তি নিয়ে সাহস যোগাবে।’’