ধসে পড়ছে তেঁতুলিয়া নদীর বেড়িবাঁধ, উৎকণ্ঠায় গ্রামবাসী
নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০১:৩২ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শুক্রবার
সংগৃহীত ছবি
তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা নদীতীর রক্ষা বেড়িবাঁধ। বোরহানউদ্দিন খালের মুখ থেকে সাচড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের শিবপুর গ্রামের চারটি স্থান ভাঙনের কবলে পড়েছে। এছাড়া, বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে বাঁধের আরও একটি অংশে। যেকোনো সময় বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো ধসে যেতে পারে। এতে করে পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন। এতে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন বেড়িবাঁধ পার্শ্ববর্তী সাঁচড়া ও দেউলা ইউনিয়নের প্রায় ৪৫ হাজার গ্রামবাসী।
১৯৯৭ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা নদীতীরকে তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার্থে ইলিগেশন প্রজেক্টের মাধ্যমে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি মাটির বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পওর-২)।
অভিযোগ উঠেছে, বাঁধটি নির্মাণের পর থেকে কখনোই এটি সংস্কার করেনি পাউবো। ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের কয়েকটি স্থানে নামেমাত্র কিছুসংখ্যক জিওব্যাগ ডাম্পিং করে পাউবো, বর্তমানে সেই স্থানেও ভাঙছে বাঁধের মাটি। সংস্কার না করায় বিভিন্ন বাঁধের এই স্থানগুলো ভেঙে বাঁধের প্রস্থ কমে গেছে, এতে জোয়ারের পানির চাপে বাঁধের ওই অংশগুলো পুরোপুরি ভেঙে গিয়ে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাচড়াও দেউলা ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া তেঁতুলিয়া নদী তীরের বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, আগ্রাসী তেঁতুলিয়া নদীর ঢেউ এসে আঁছড়ে পড়ছে বেড়িবাঁধে। সম্প্রতি তেঁতুলিয়া নদী আগ্রাসী রূপ ধারণ করায় ঢেউয়ে ঢেউয়ে প্রতিদিন বিলীন হচ্ছে বাঁধের মাটি, ছোট ছোট ফাঁটল দেখা গেছে বিভিন্ন স্থানে। আর এই দৃশ্য নির্বাক হয়ে নদীতীরে দাঁড়িয়ে দেখছেন স্থানীয় অসহায় গ্রামবাসীরা।
সাচড়া ইউনিয়নের কাচারীহাট গ্রামের লঞ্চঘাট সংলগ্ন শিবপুর গ্রামে বেড়িবাঁধের একটি স্থানে প্রায় ১৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৭ ফুট প্রস্থ ফাঁটল ধরেছে এবং দুই ফুট মাটি নিচের দিকে চেপে গেছে। বেড়িবাঁধের আরেকটু সামনে এগোলেই দেখা যায়, প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত নদীপাড়ের মাটি ভাঙছে ঢেউয়ে ঢেউয়ে। এই স্থানে বেড়িবাঁধটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
তেঁতুলিয়া নদীতে বাঁধের ভাঙা অংশ পুনরায় মাটি দিয়ে ভরাটের চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। এক অংশ মেরামতের চেষ্টার পর ফের নতুন করে অন্য অংশ ভাঙে। এভাবেই বেড়িবাঁধটি টিকিয়ে রাখার ব্যার্থ চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয়রা। কেননা বাঁধ টিকলে টিকবে তাদের জানমাল। ইতোমধ্যে গত কয়েক বছরে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে হাজারো বসতঘর, ভিটেমাটি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি ও গাছপালা।
কৃষক মো. ছিদ্দিক বলেন, ‘বেড়িডার পাশেই অপরপাশে আমার ফসলি জমিন। এই জমিনে চাষবাস কইরা বউ পোলাইন লইয়া খাই। যদি এই বেড়ি ছুইড্ডা যাইয়া জমিনডা নদীতে ভাইঙ্গা লইয়া যায়, তাইলে যে বউ-পোলাইন লইয়া খামু আর সংসার চালামু, হেই কোনো লাইন ও আমার নাই।’
নদী ভাঙনের শিকার আবুল কালাম বলেন, ‘বেড়ির পশ্চিম পার্শ্বে আমাদের, আমার অনেক জমিজমা ছিল, সব গাঙ্গে ভাইঙ্গা লইয়া গেছে। পরে আবার বেড়ির উত্তর পার্শ্বে জমি কিইন্না ঘর করছি। এখন যদি গাঙ্গে আবার আমার ঘরবাড়ি ভাইঙ্গা লইয়া যায়, তাইলে আমি মইরা যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। অন্য জায়গায় যে আরেকটা ঘরভিটা কিইন্না ঘর উঠামু সেই সামর্থ্য আমার নাই। আমরা বেঁড়ির উত্তর পাশের মানুষজন এখন অনিরাপত্তার মধ্যে দিন পার করতেছি।’
রহমতুল্লাহ বলেন, ‘নদী আমারে চার ভাঙ্গা দিছে, নদী ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা অনেক চওড়া হইছে। আগে এতো চওড়া ছিল না। হিসেবে আমার বাড়িটা আগে নদীর মাঝখানে ছিল, পরে বেড়ির পাশে আইসা ঘর তুলছি। এবার বেঁড়ি ভাইঙ্গা গেলে মোট ৫ বার নদী ভাঙ্গার স্বীকার হমু। কারে কমু দুঃখের কথা?
মো. জাকির হোসাইন বলেন, ‘বেড়িবাঁধটির জন্য গত ২৭ বছর ধরে আমরা নিশ্চিন্তে বসবাস করে আসছি এ গ্রামে। গত কয়েকদিন ধরে বাঁধের মাটি ভাঙতে শুরু করেছে, বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল দেখা গেছে। যেকোনো সময় বেড়িটি পুরোপুরি ভেঙে আমাদের গ্রামে পানি ঢুকতে পারে, এতে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
বেড়িবাঁধ ধসের বিষয়ে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘১৯৯৭ সালে ইলিগেশন প্রজেক্টের আওতায় ৮ কিলোমিটার এ বেড়িবাঁধটি নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সম্প্রতি অতি জোয়ারের পানির চাঁপে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধের কিছু স্থানে ধস ও ফাটলের দেখা দিয়েছে এবং ভাঙছে।’
তিনি বলেন, ‘নদী আগে বেড়িবাঁধ থেকে অনেক দূরে ছিল। সম্প্রতি তেঁতুলিয়া নদী ভাঙতে ভাঙতে সাচড়া ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে বাঁধের কিছু অংশের কাছাকাছি চলে এসেছে এবং নদী সরাসরি বেড়িবাঁধকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না? হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এই মুহূর্তে নদীতে পানি বাড়তি থাকার কারণে বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ করা সম্ভব নয়। তারপরও দ্রুত মেরামতের চেষ্টা করা হবে।’
বেড়িবাঁধ ধসের বিষয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হানুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ধসের বিষয়টি কেউ আমাকে অবগত করেনি।
এদিকে, অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিস্তীর্ণ গ্রামের জনপদকে রক্ষা করার জন্য সিসি ব্লকের মাধ্যমে এ বেড়িবাঁধটিকে স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।
- নারী বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা বাংলাদেশের
- ঠাকুরগাঁওয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারাম উৎসব উদযাপন
- বিশ্বে প্রতি ৫ মিনিটে সাপের কামড়ে মরছে ১ জন: হু
- হারিয়ে যাচ্ছে কদম ফুল
- হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
- কুমিল্লায় বন্যায় স্বাস্থ্য খাতে ক্ষতি ২৫ কোটি
- অফিসে ‘গোপন কক্ষ’ নিয়ে মুখ খুললেন মালা খান
- হঠাৎ মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ
- লেবাননে পেজার বিস্ফোরণে ১ কন্যাশিশুসহ নিহত ৯
- ফের অভিষেকের সঙ্গে বিচ্ছেদ গুঞ্জন
- অতিশী মারলেন হচ্ছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী
- বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ইউরো সহায়তা দেবে জার্মানি
- সহজে তালের বড়া তৈরির রেসিপি
- ইরানে বাড়ছে চিকিৎসকদের আত্মহত্যা, কিন্তু কেন?
- বর্ষার রাণী কেয়া ফুল: কত যে বাহার
- কোটা আন্দোলন:পরিবহন খাতে ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকা!
- এই কাজ আমার জন্য চ্যালেঞ্জ নয়: পরিবেশ উপদেষ্টা
- সিরাজগঞ্জে এমপির বাসায় আগুন, দুই মরদেহ উদ্ধার
- মাদার তেরেসার ১১৪তম জন্মদিন আজ
- অভিনয়শিল্পী-নির্মাতাদের সংহতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
- আজ বাইশে শ্রাবণ, রবী কবির প্রয়াণ দিবস
- পর্যটক না আসায় হতাশ টাঙ্গুয়ার হাওরের শ্রমিকরা
- ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের দুই শিল্পীকে শোকজ
- নতুন মুখ নিয়ে দল গোছান, আওয়ামী লীগকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- শখের বশে সফল উদ্যোক্তা সুমনা
- রাজধানীসহ সারা দেশে দেড় হাজার ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভাঙচুর
- আইভিএফ পদ্ধতি কী ও কেন জেনে নিন
- শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপা ডিবিতে
- আদালত প্রাঙ্গণে ফারজানা রূপাকে থাপ্পড়
- বন্যায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, সড়কে-গাছতলায় চলছে চিকিৎসা