ঢাকা, সোমবার ২৫, নভেম্বর ২০২৪ ১৮:২২:৩৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১৩ ডিগ্রিতে ব্রাজিলে বাস খাদে পড়ে ২৩ জনের প্রাণহানী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ ১০ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭ ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৮, লেবাননে ৩৩ প্রাণহানী

প্রতি জেলায় এসএমই পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

বাসস | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ০৮:৩৪ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০১৮ মঙ্গলবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার দেশের সকল জেলা-উপজেলায় এসএমই পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন করবে। যেগুলো এসএমই শিল্পের প্রসারে উদ্যোক্তাদের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিসের সেবা প্রদান করবে।উদ্যোক্তারা ব্যবসা স্থাপন থেকে শুরু করে ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যবসায়িক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ও সহায়তা, পরামর্শক সেবা ইত্যাদি এসব ওয়ানস্টপ সেন্টার থেকে গ্রহণ করতে পারবে।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ৬ষ্ঠ জাতীয় এসএমই মেলা-২০১৮’র উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির লিখিত ভাষণে একথা বলেন।


প্রধানমন্ত্রী ঠান্ডাজনিত অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে ভাষণ দেননি। তার ভাষণের লিখিত কপি অনুষ্ঠানে বিতরণ করা হয়।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের বিকাশে জেলায় এবং উপজেলায় এসএমই পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এ পরামর্শ কেন্দ্রগুলো এসএমই শিল্প প্রসারে ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার হিসেবে কাজ করবে।


শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে।


বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে এসএমই’র গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী লিখিত ভাষণে বলেন, এসএমই সবচেয়ে শ্রমঘন ও স্বল্পপুঁজি নির্ভর খাত হওয়ায়, এই খাতের মাধ্যমে স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগে অধিক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়।


তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রায় ৯০ শতাংশ শিল্পই ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের অন্তর্ভুক্ত। তাই জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ। জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে দেশের সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁর সরকার ‘জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬’ -তে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে শিল্প উন্নয়নের অন্যতম মাধ্যম হিসাবে গণ্য করেছে।


তিনি বলেন, সরকারের গৃহীত কর্মসূচির ফলে দেশব্যাপী টেকসই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের দ্রুত প্রসার ঘটছে। উদ্যোক্তাবান্ধব নীতির কারণে প্রতিনিয়ত নারীরা ব্যবসায়ে মনোনিবেশ করছে। ফলে দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির অনেক সূচকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে।


এসএমই ফাউন্ডেশন এবং এফবিসিসিআই যৌথভাবে আজ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় পাঁচদিন ব্যাপী এই মেলার আয়োজক।


অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সভাপতিত্ব করেন। এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, শিল্প সচিব মো. আব্দুল্লাহ এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন কেএম হাবিবুল্লাহ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।


অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সফল এসএমই উদ্যোক্তাদের মাঝে পুরস্কারও বিতরণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেই, তখন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। অনেক দেশ বিশ্বমন্দার অভিঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু আমরা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে একটি শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছি।


বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বে এখন বাংলাদেশ মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৫২ মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পেয়ে ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশে উন্নীত।


সরকার প্রধান বলেন, বর্তমানে ১৯৯টি দেশে ৭৫০টি পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে ৪১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।


বাংলাদেশী পণ্যের রপ্তানির হার বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২১ সালে ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।


তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে সারা দেশে ১০০টি ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি গঠন করা হয়েছে।


তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইকোনমিক জোনসমূহ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।


বাংলাদেশে কুটির শিল্পের সুদীর্ঘ গৌরবের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী জামদানি, নকশিকাঁথা এবং সিলেটের শীতল পাটি ইতোমধ্যে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য-তালিকায় স্থান পেয়েছে।


উদ্যোক্তাগণ এ সকল পণ্যের ব্র্যান্ডিং এর পাশাপাশি বাজার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিতে পারেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।


উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশীয় কাঁচামালনির্ভর শিল্পায়নের পাশাপাশি অঞ্চলভিত্তিক কাঁচামালের সহজলভ্যতা বিবেচনা করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সরকার উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা প্রদান করবে।


শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পণ্যের বাজার অনুসন্ধান এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী সে সব পণ্য উৎপাদন করতে হবে। মুষ্টিমেয় কয়েকটি পণ্যের ওপর রপ্তানি নির্ভরশীলতা কমিয়ে আমাদের এখন রপ্তানি বহুমুখীকরণের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।


এসএমই খাতের সম্প্রসারণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের খন্ডচিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার নিজেরা ব্যবসা করে না। সহায়কের ভূমিকা পালন করে। ফলে আজ দেশে বেসরকারি খাত ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে।


তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে বাছাইকৃত ২৬৭টি এসএমই প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে এ মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। এরমধ্যে ৬৭ শতাংশই নারী উদ্যোক্তা।


মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিভিন্ন দেশের পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি আয়ত্বকরণ এবং পণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।