বর্জ্যশূন্য পর্যটন এলাকা গড়তে সেন্টমার্টিনে কাজ চলছে
নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০১:২৪ পিএম, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ শুক্রবার
সেন্টমার্টিন
সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বর্জ্যশূন্য পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে এবং দ্বীপের পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থান রক্ষায় কাজ চলছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্স। এই অ্যালায়েন্সের সদস্য ব্র্যাক, ইউনিলিভার ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়ন পদ্ধতিতে মাল্টি-স্টেকহোল্ডার মডেলের মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা হবে, যা দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী এবং জেলেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কাজ করবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ) এবং পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় গঠিত মনিটরিং কমিটির সভাপতি তপন কুমার বিশ্বাস বাসসকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাওয়া শুরু হয়েছে। সেখানের প্রতিবেশ ও পরিবেশ যাতে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটকের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় অন্তর্বর্তী সরকার এ উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বে গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনাক্রমে বাস্তবায়ন করছে।
তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, এ দ্বীপ নিয়ে যেসব নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তা কিন্তু এখনকার নয়। ২০১৯, ২০২১ ও ২০২২ সালে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ, প্রজ্ঞাপন জারি ও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ নানা উদ্যোগ বিগত সরকারের সময়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রায় ২৫ থেকে ২৬ বছর আগে এই দ্বীপকে সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিনকে ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এখন ২০২৪ সালের শেষে এসেও এর তেমন কোন উন্নতি ঘটেনি। কেন সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে দ্বীপটিকে উল্লেখ করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে গঠিত সেন্টমার্টিন দ্বীপ প্রাকৃতিকভাবেই ভারসাম্য রাখতে পারছে না।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন বন্ধ করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়, বরং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে পর্যটনকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ১৯৯৯ সালের দিকে সেন্টমার্টিনে পর্যটন ব্যবসা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ায় সে সময়েই দ্বীপটিকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল। এ দ্বীপে বর্তমানে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ অবস্থান করছে। সেখানে পর্যটন মৌসুমে কোন কোন দিন আরও ১০ থেকে ১২ হাজার পর্যটক এ দ্বীপে ভ্রমণে যান। এতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে অবকাঠামো গড়ে উঠায় তা দ্বীপটির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে পূর্বে যেসব আইন ও নীতিমালা জারি করা হয়েছিল সেসবের আলোকেই বর্তমান সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ২০২৩ সালে এ মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন নিয়ে একটি নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছিল।
এর আলোকে যদি ৫০ শতাংশ কাজও হতো তাহলে সেন্টমার্টিনের এমন অবস্থা হতো না। তাই সেন্টমার্টিন রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনে নাফ নদীতে যদি ডাম্পিং করা হয়, তাহলে দেখা যাবে সেখানে পানি দূষণ হয়েছে এবং এর তলদেশেও পলিথিন ও প্লাস্টিকের দ্রব্যাদিতে জমে গেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও জাহাজ মালিকরাও সচেতনতামূলক নির্দেশনা দিয়েছে পরিবেশ বাঁঁচাতে। জনসাধারণের সচেতনতা বড় একটি বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তপন কুমার বিশ্বাস জানান, পরিবেশ দূষণ রোধে গত ৩ নভেম্বর থেকে সারাদেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাত করার দায়ে পরিবেশ অধিদপ্তর, সদর দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ১৩ টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে ২৯ টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৬ লাখ ৫শ’ টাকা জরিমানা এবং প্রায় ৩ হাজার ৯৮০ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৬৮টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে ৩৪৪ টি প্রতিষ্ঠানকে ১৯ লাখ ৪৯ হাজার ৩শ’ টাকা জরিমানা আদায়সহ প্রায় ৪৩ হাজার ৩৯০ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর বাসসকে বলেন, সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। আমাদের সবাইকে এটা রক্ষা করতে হবে। দ্বীপের হোটেল মালিক ও স্থানীয়দেরকেও সেন্টমার্টিন রক্ষায় সহযোগিতা করতে হবে। এতে জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে।
এ ব্যাপারে সরকারকে কঠোর অবস্থানে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব শুধু সরকারের একার নয়। সরকারের পাশাপাশি, বেসরকারি সংস্থাসহ সমাজের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, পর্যটকদের অতিরিক্ত চাপে এবং যথেচ্ছা ব্যবহারে এই কোরাল দ্বীপটি ধ্বংস হচ্ছে। সেন্টমার্টিনকে রক্ষায় রাতবিরাতে সমুদ্র সৈকতে বারবিকিউ, হৈ-হুল্লোড় এবং পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ করতে হবে। এ দ্বীপের কোরাল ও জীববৈচিত্র্য বাঁচাতে টুরিষ্টদের প্রবেশাধিকার সীমিত করার উপর জোর দিতে হবে।
সেন্টমার্টিন রক্ষায় বাংলাদেশ সাস্টনেবিলিটি অ্যালায়েন্সের প্রধান সমন্বয়ক সংকলিতা সোম বাসসকে জানান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে বাংলাদেশ সাস্টেনেইবিলিটি অ্যালায়েন্স মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে একটি বর্জ্যশূন্য পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে যৌথভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ভ্যালু চেইন তৈরি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা এবং দ্বীপের স্থানীয় জনগণ ইনফরমাল সেক্টর এবং ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করার উপর জোর দেয়া হয়েছে। টেকসই পর্যটনের লক্ষ্যে দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় এবং হোটেল ও দোকান মালিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন প্রচারণার আয়োজন করা হবে।
এছাড়াও সেন্টমার্টিনের ব্যবস্থাপনার সার্বিক অবস্থা নিরূপণে একটি দ্রুত মূল্যায়ন (র্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট) করা হবে। যার ফলাফলের ভিত্তিতে প্লাস্টিক বর্জ্য ধীরে ধীরে কমানো, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্য ধাপে ধাপে ধ্বংস করা এবং কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার টেকসই পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্সের অংশ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (মার্কেটিং) কামরুজ্জামান কামাল বাসসকে বলেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ পরিবেশের উপর বিশেষ করে সেন্টমার্টিন দ্বীপের মতো পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় প্লাস্টিক বর্জ্যরে ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করে। অর্থবহ ও টেকসই পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি হিসেবে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ রক্ষা ও সংরক্ষণের প্রচেষ্টায় সরকারের সাথে অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত। এ উদ্যোগ সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যকর ইকোসিস্টেম নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে।
যার ফলে অনন্য এ দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং টেকসই পর্যটনকে প্রমোট করবে।
- বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা আজ তৃতীয়
- সংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার আর নেই
- মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর জন্মদিন আজ
- ঢাকাই সিনেমায় সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত শ্রীলেখা
- তাপমাত্রা ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে নতুন বার্তা আবহাওয়া অফিসের
- স্বর্ণের নতুন দাম আজ থেকে কার্যকর
- দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ
- গানবাংলা টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ
- সচল হলো ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ
- তীব্র শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা
- শীতকালেও সানস্ক্রিন: কতবার এবং কীভাবে ব্যবহার করবেন?
- কেমন আছেন পাপিয়া সারোয়ার, মৃত্যু নাকি গুঞ্জন?
- ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিল নিয়ে যা জানালেন পরিবেশ উপদেষ্টা
- বিলাসবহুল জীবন রেখার, কোথায় থেকে পান এত টাকা
- টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে ট্রলার চলাচল বন্ধ
- আজ পহেলা অগ্রহায়ণ, হেমন্তকাল শুরু
- ঘুরে আসুন পানামসহ না.গঞ্জের পাঁচটি পর্যটন স্পট
- রাজু ভাস্কর্যের নারী প্রতিকৃতিতে হিজাব, যা জানা গেলে
- হেমন্তে ছাতিম ফুল সুগন্ধ ছড়িয়ে যায়
- পঞ্চগড় থেকে দেখে আসুন কাঞ্চনজঙ্ঘা
- দীপাবলির আগেই সুখবর দিচ্ছেন রণবীর-আলিয়া
- নিরাপত্তা চেয়ে মোহাম্মদপুরবাসীর আল্টিমেটাম
- নতুন সরকার যদি আমাকে ডাকে, অবশ্যই সাড়া দেব: নুসরাত
- মিরপুর টেস্টে বড় পরাজয় বাংলাদেশের
- সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা
- আলাদা জায়গা পেলেন না মতিয়া চৌধুরী, স্বামীর কবরেই দাফন
- নব আলো সাহিত্য সংহতির ঢাকা বিভাগীয় কমিটির অভিষেক হলো
- সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ
- শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনের নামে হত্যা মামলা
- জেন জেডদের ওপর নির্ভর করছেন কমলা হ্যারিস