বান্দরবানে বেড়াতে যাবেন?
ফিচার ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪.কমআপডেট: ০৮:৩৮ পিএম, ২৯ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার
পাহাড়িকন্যা বান্দরবান প্রাকৃতিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা । যার মেঘ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে আছে সে সহজেই ঘুরে আসতে পারেন। বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত। এটি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের অন্তর্গত। চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান জেলার দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার। বান্দরবান জেলার আয়তন ৪৪৭৯ বর্গ কিলোমিটার। মারমা রাজা বোমাংগ্রী উ চ প্রু বান্দরবান সার্কেলের, বোমাং রাজা। এই অঞ্চলের অন্য দুইটি জেলা হল রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি। বান্দরবান জেলা এর নৈসর্গিক বৈচিত্র্যের জন্য বাংলাদেশের একটি গুরূত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
লোককথা অনুযায়ী, এই অঞ্চলে বানররা একে অপরের হাত ধরে, লম্বা শিকল বানিয়ে নদী পারাপার করতো। বানরের বাঁধ থেকে বান্দরবান শব্দের উৎপত্তি। চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস রেগুলেশন ১৯০০ দ্বারা এই অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে আরাকান রাজ্যের অংশ থেকে তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আওতায় আসে।এই অঞ্চলের রাজা, তথা সার্কেল চিফ এখনো কর (নামমাত্র) আদায় করেন। প্রতিবছর ঘটা করে ৩ দিন ব্যাপী বোমাং রাজ পুণ্যাহ এর মাধ্যমে এই কর বা খাজনা আদায় করা হয়।
কি কি দেখবেন
নীলগিরি: বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৪৭ কিমি দক্ষিণ পূর্বদিকে লামা উপজেলার অংশে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২০০ ফুট উপরে বাংলাদেশের নতুন পর্যটন কেন্দ্র নীলগিরির অবস্থান। যাকে বাংলাদেশের দার্জিলিং হিসেবে অবহিত করা যায়। যেখানে পাহাড় আর মেঘের মিতালি চলে দিনরাত। আপনিও ঘুরে আসতে পারেন ওই মেঘের দেশে। তবে যারা মেঘ ভালোবাসেন তারা জুন-জুলাইতে অর্থাৎ বর্ষাকালে ভ্রমণে গেলে বেশি মজা পাবেন। কারণ মেঘ তখন মেঘের আনাগোনা বেশি।
নীলগিরি যেতে হলে আগে থেকে ল্যান্ডক্রুজার জিপ ভাড়া করতে হবে। সময় লাগবে আসা-যাওয়ায় সাড়ে চার ঘণ্টা। ভাড়া সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্ধারিত আসা-যাওয়া-ছোট জিপ- ৫ সিট ২৩০০ টাকা এবং বড় জিপ-৮ সিট- ২৮০০ টাকা। কিন্তু এখানে ড্রাইভাররা আপনার কাছে আরো অনেক বেশি চাইতে পারে যা।
স্বর্ণমন্দির: বর্তমানে স্বর্ণমন্দির উপাসনালয়টি বান্দরবান জেলার একটি অন্যতম পর্যটন স্পট হিসেবে পরিচিত হচ্ছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এই ‘বৌদ্ধ ধাতু জাদী’ কে স্বর্ণমন্দির নামকরণ করা হয়। এটি বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীদের একটি উল্লেখযোগ্য উপাসনালয়। যা বান্দরবান শহর থেকে ৪ কিমি উত্তরে বালাঘাট নামক এলাকায় পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত।
এটির নির্মাণশৈলী মিয়ানমার, চীন ও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ টেম্পলগুলোর আদলে তৈরি করা হয়। বান্দরবান ভ্রমণে আপনিও এই জাদী বা স্বর্ণমন্দিরটি একবার স্বচক্ষে দেখে আসতে পারেন।
মেঘলা: নাম মেঘলা হলেও মেঘের সাথে মেঘলা পর্যটন স্পটের কোন সর্ম্পক নেই। বান্দরবান জেলা শহরে প্রবেশের ৭ কিমি আগে মেঘলা পর্যটন এলাকাটি অবস্থিত। এটি সুন্দর কিছু উঁচু নিচু পাহাড়বেষ্টিত একটি লেককে ঘিরে গড়ে উঠে। ঘন সবুজ গাছ আর লেকের স্বচ্ছ পানি পর্যটককে প্রকৃতির কাছাকাছি টেনে নেয় প্রতিনিয়ত। পানিতে যেমন রয়েছে হাঁসের প্যাডেল বোট, তেমনি ডাঙ্গায় রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা। আর আকাশে ঝুলে আছে রোপওয়ে কার। এখানে সবুজ প্রকৃতি, লেকের স্বচ্ছ পানি আর পাহাড়ের চূড়ায় চড়ে দেখতে পাবেন ঢেউ খেলানো পাহাড়ি বান্দরবানের নয়নাভিরাম দৃশ্য। মেঘলা পর্যটন স্পটের পাশেই রয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের বান্দরবান পর্যটন হোটেলটি।
শৈলপ্রপাত: শৈলপ্রপাত বান্দরবান শহর হতে ৭ কিমি দক্ষিণ পূর্বে চিম্বুক বা নীলগিরি যাওয়ার পথে দেখা যাবে।
নীলাচল: নীলাচল বান্দরবান শহর হতে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে ১৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত একটি পর্বত শীর্ষ। যেখান থেকে নীলআকাশ যেন তার নীল আঁচল বিছিয়ে দিয়েছে ভূমির সবুজ জমিনে। যে দিকে দুচোখ যায় অবারিত সবুজ ও নীল আকাশের হাতছানি। মুগ্ধতায় ভরে উঠে মন প্রাণ।
মিলনছড়ি:
মিলনছড়ি বান্দরবান শহর হতে ৩ কিমি দক্ষিণ পূর্বে শৈলপ্রপাত বা চিম্বুক যাওয়ার পথে পড়ে। এখানে একটি পুলিশ ফাঁড়ি আছে। পাহাড়ের অতি উচ্চতায় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পূর্ব প্রান্তে অবারিত সবুজের খেলা এবং সবুজ প্রকৃতির বুক ছিড়ে সর্পিল গতিতে বয়ে সাঙ্গু নামক মোহনীয় নদীটি।
চিম্বুক: চিম্বুক বান্দরবনের অনেক পুরনো পর্যটন স্পট। বান্দরবান শহর হতে ২১ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে মিলনছড়ি এবং শৈল প্রপাত ফেলে চিম্বুক যেতে হয়। এখানে পাহাড়ের চূড়ায় রেস্টুরেন্ট এবং একটি ওয়াচ টাওয়ার আছে। পাহাড়ের চূড়া থেকে চারদিকের সবুজ প্রকৃতির সৌন্দর্য্য অবগাহন এখানে প্রকৃতিপ্রেমীদের টেনে আনে।
সাঙ্গু নদী: পূর্বের অতিউচ্চ পর্বত শীর্ষ থেকে সাঙ্গু নদী নেমে এসে বান্দরবান শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশে গেছে। বান্দরবান শহরের পূর্বে পাশে পাহাড়ি ঢালে বয়ে চলা সাঙ্গু নদী দেখতে দারুণ দৃষ্টিনন্দন।
কিভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে বান্দরবান যেতে আপনি ২/৩ টি রুট ব্যবহার করতে পারেন। ঢাকা থেকে ট্রেনে বা বাসে প্রথমে চট্টগ্রাম তারপর চট্টগ্রাম থেকে সোজা বান্দরবান।
চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান: বহদ্দারহাট টার্মিনাল থেকে পূরবী এবং পূর্বাণী নামক দুটি ডাইরেক্ট নন এসি বাস আছে ৩০ মিনিট পর পর বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি-৭০ টাকা।
ঢাকা থেকে বান্দরবান গেলে: ঢাকা থেকে বান্দরবান পযর্ন্ত ডাইরেক্ট একটি গাড়ি চলে এস.আলম (নন এসি)। ভাড়া জনপ্রতি-৩৫০ টাকা। ছাড়ে এসআলমের কমলাপুর রেল স্টেশনের বিপরীত কাউন্টার থেকে।
খাবার: বান্দরবান শহরে খাবার হোটলের মান তেমন ভাল নয়। তবে যে হোটেলে আপনি থাকবেন সে গুলোতে রেস্টুরেন্ট আছে। এছাড়া আরো দুটি মোটামুটি মানের ভাল হোটেল হচ্ছে জেলা সদর বিল্ডিং এর কাছে ‘ফিয়েস্তা’ হোটেল এবং বান্দরবান বাজারের কাছে ‘তাজিংডং’ হোটেল। বান্দরবানে সব হোটেলে খাবারের মানের চেয়ে দামটা বেশি। রান্নায় মসল্লা ব্যবহার এবং হলুদের আধিক্য বেশি।
কোথায় থাকবেন:
বান্দরবান থাকার জন্য হোটেল বুকিং করতে পারেন জোভাগো ডটকম থেকে।
যা যা মেনে চলবেন:
১) ভালো, মজবুত ব্যকপ্যাক নেবেন। হাতব্যাগ/ লাগেজ এসব চলবে না।
২) পুরো ট্যুরে নিজের ব্যাগ নিজের কাধে রাখতে হবে। পাহাড়ে ওঠার সময় মেকাপবক্স/ পারফিউম ইত্যাদি ফেলে দিতে হবে ওজন কমাতে। অতএব, কাপড় মাত্র ২ সেট নেবেন। অন্যান্য জিনিস যাই নেবেন ভেবে নেবেন। অযথা ব্যাগ ভারী করলে পরে কাঁদতে হবে।
৩) ভালো, মজবুত স্যান্ডেল নিবেন। মাটিতে ভালো গ্রিপ করে, পিছলে যায় না এমন স্যান্ডেল নেয়া থেকে বিরত থাকুন।
৪) সঙ্গে সবসময় আধা/এক লিটার পানি, সামান্য কিছু হাল্কা খাবার রাখবেন।
৫) কলার পটাশিয়াম পেশির জন্য উপকারী। পাহাড়ে উঠলে পেশির উপর অনেক চাপ পরে। অতএব, বান্দরবন গেলে কলা খাবেন।
৬) বেশি স্যালাইন খেলে রক্তচাপ বাড়ে, ঘাম বাড়ে ফলে আরও বেশি পানি শূন্যতা সৃষ্টি হয়। অতএব, সারাদিন চলার পথে বেশি স্যালাইন খাবেন না। পানি খাবেন। অনেক তৃষ্ণা পেলেও একবারে বেশি পানি খাবেন না। হটাৎ পেট ভারী হয়ে গেলে হাঁটতে পারবেন না।
৭) মশা প্রতিরোধের জন্য অবশ্যই ওডোমস লোশন নেবেন।
৮) হাঁটার সময় ফুটবলারদের মত আংলেট, নি-ক্যাপ পড়বেন।
৯) টর্চ নেবেন। কম কম জ্বালাবেন। চার্জ শেষ হলে চার্জ দেয়া ঝামেলা।
১০) প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠবেন। অবশ্যই, অবশ্যই। যত দেরিতে রওনা হবেন, রোদে তত বেশি কষ্ট হবে। অলস কেউ থাকলে তাঁকে কক্সবাজার পাঠিয়ে দিন। বান্দরবন তার জন্য না।
১১) জোঁকের জন্য সবার সঙ্গে সামান্য লবণ রাখবেন। জোঁক লাগলেই অযথা চেঁচামেচি না করে আপনার পাশের জনকে লবণ দিতে বলুন। জোঁক মরে যাবে।
১২) দল ১০ জনের হলে ৫ জনের ২ টা দলে হাঁটবেন। কেউ যেন দল ছাড়া না হয়ে যায়।
১৩) ক্যাপ পড়বেন সবাই।
১৪) ছাতা/ রেইনকোট নেবেন।
১৫) ব্যাকপ্যাক কাভার নিবেন সবাই। বা সকল জিনিস বড় পলিথিনে ভরে তারপর ব্যাকপ্যাকে ভরবেন।
১৬) জ্বর, পেই কিলার, আমাশয়, গ্যাস্ট্রিক, স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইত্যাদি নেবেন।
আপনার ভ্রমণ হোক আনন্দময়।
- লেবাননে সংঘাতে ২শ’রও বেশি শিশু নিহত: ইউনিসেফ
- সরকারের মেয়াদ `চার বছর` ইস্যু হঠাৎ কেন আলোচনায়
- জাহাঙ্গীরনগরে অটোরিকশার ধাক্কায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় `ব্লকেড`
- এন্টিবায়োটিক উপকারী ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস করে: মৎস্য উপদেষ্টা
- ১৮ কোটি ৮০ লাখ ডিম আমদানি করা হচ্ছে
- পদত্যাগ করেছেন হাইকোর্টের তিন বিচারপতি
- রাজধানীতে তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ
- শীতে শক্তি বাড়াতে বয়স্কদের কী কী খাওয়াবেন
- যে ১০ লক্ষণে ডায়াবেটিস রোগের পরীক্ষা করাতে হবে
- মুনমুন সেনের স্বামীর মৃত্যু, শোকস্তব্ধ কন্যা রাইমা ও রিয়া
- অ্যানড্রয়েডে ফিঙ্গারপ্রিন্ট কাজ না করলে কী করবেন
- যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের কারণে সবকিছু বদলে যাবে না
- শীতে বাড়ে খুশকি, দূর করতে করণীয়
- উত্তরে বাড়ছে শীতের তীব্রতা
- বীজসহ আতা খেলে কী কী উপকার হয়, জানেন?
- জেনে নিন বিমানবন্দর নেই যে সব দেশে
- ঘুরে আসুন পানামসহ না.গঞ্জের পাঁচটি পর্যটন স্পট
- ড.ইউনুসকে তসলিমা নাসরিনের খোলা চিঠি
- বিশ্ব হার্ট দিবস আজ
- আজ পহেলা অগ্রহায়ণ, হেমন্তকাল শুরু
- হেমন্তে ছাতিম ফুল সুগন্ধ ছড়িয়ে যায়
- ‘রিমান্ড’-এ মম
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন আজ
- শান্তিতে নোবেল পেল জাপানের মানবাধিকার সংস্থা নিহন হিদানকিও
- স্নাতক পাসে চাকরি দেবে আড়ং
- পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপে ঘুরে দাঁড়াল ভারতের মেয়েরা
- রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি
- যানজটে দৈনিক ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে
- সৈয়দ শামসুল হকের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
- নেপালে ভয়াবহ বন্যা-ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১১২