বিয়ের ক’দিন পর যুদ্ধে চলে যান আমিনা
অনু সরকার | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ০৮:৫২ পিএম, ৬ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার

বিয়ের ক’দিন পর যুদ্ধে চলে যান মুক্তিযোদ্ধা আমিনা
বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনা বেগম। কপালে টিপ, পায়ে আলতা আর লাল শাড়ি পরে নববধূ সেজে উৎসব করার সৌভাগ্য হয়নি তার৷ হাতের মেহেদির রঙ মিলিয়ে না যেতেই বিয়ের মাত্র ১১ দিনের মাথায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন আমিনা বেগম৷
একাত্তরের সেই উত্তাল সময়ে যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকেই এই নবদম্পতি আর পিছু না ফিরে চলে যান যুদ্ধে।
সে সময় দেশের পরিস্থিতিই তাদের মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে নেয়৷ তার স্বামীও এ সময়ই যুদ্ধের ট্রেনিং নিতে ভারতে চলে যান৷ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বহুবার বিভিন্ন স্থানে তাদের দেখা হয়েছে৷ কিন্তু এসময় তারা দু'জন অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের মতো দেশের সম্ভ্রম বাঁচাতে এতটাই আন্তরিক ছিলেন যে নিজেদের দিকে নজর দেয়ার সময় ছিল না৷ দীর্ঘ নয়মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে পুরোটা সময় নিজে দায়িত্বে সক্রিয় ছিলেন বীর সাহসী মুক্তিযোদ্ধা আমিনা৷
সিরাজগঞ্জে ১৯৫১ সালের ৩০ নভেম্বর জন্ম আমিনার৷ বাবা ডা. আনিসুর রহমান এবং মায়ের নাম জাকেরা বেগম৷
কলেজ জীবনের শুরু থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন আমিনা৷ ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে তৎকালীন সিরাজগঞ্জ মহকুমার বিভিন্ন স্থানে কাজ করেছেন৷ সেসময় সিরাজগঞ্জ কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন তিনি৷ পরে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন৷ ফলে হঠাৎ করে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েননি, মুক্তিযুদ্ধের জন্য একটি পটভূমি তৈরির কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন আমিনা৷ সেই বিবেচনায় মুক্তিযুদ্ধের জন্য সকলকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি৷
১৯৭১ সালের উত্তাল ১৪ মার্চ তৎকালীন সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক বকুলের সাথে বিয়ে হয় আমিনার৷ বিয়ের ১১ দিনের মাথায় পঁচিশে মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চারিত শব্দমালা শুনে তাড়িত হন এই নবদম্পতি৷ নতুন সংসারের হাতছানি দূরে ঠেলে দুজনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন৷ মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেন।
মুক্তিযুদ্ধে নিজের সাহসী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন আমিনা বেগম বলেন, ‘সিরাজগঞ্জের প্রায় ২০০ মুক্তিযোদ্ধা এবং পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের প্রায় দেড় হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য নির্দেশ আসে৷ সিদ্ধান্ত হয়, মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল নৌকা করে যমুনা নদী পাড় হয়ে ভারতের শিলিগুড়ির পাঙ্গা চর থেকে অস্ত্র কিনে আনবে৷ সিদ্ধান্তমত আমেনা বেগম, তার স্বামী ও অন্য কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা চারটি নৌকা নিয়ে মাইনকারচরের উদ্দেশ্যে রওনা করেন৷ এর মধ্যে একটি নৌকার আরোহী আমিনা একা ছিলেন৷ মাঝপথে যাত্রীবোঝাই একটি নৌকায় তার সাথে দেখা মেলে তার শিক্ষয়িত্রী জ্যোৎস্না দিদি ও তার দেড় বছরের শিশুকন্যা সঞ্চিতার সঙ্গে৷ নানা দিক ভেবে আমিনা এ দুজনকে নৌকায় তুলে নেন৷ এর কিছুক্ষণ পরই পাকিস্তানি দুটি গানবোট তাদের পিছু ধাওয়া করে৷
এক পর্যায়ে আরেকটি নৌকায় থাকা আমিনার স্বামী তাকে অস্ত্র সরবরাহকারীদের নাম-ঠিকানা দিয়ে নদীর পাড়ে নামিয়ে দেন৷ চুক্তি হয়, প্রয়োজন হলে তিনি গ্রেনেড হামলা চালাবেন পাকিস্তানি গানবোটের ওপর। আর এই ফাঁকে আমিনা ও জ্যোৎস্না যেকোনো মূল্যে অস্ত্র আনতে ভারতের শিলিগুড়ি চলে যাবে৷ দীর্ঘ পথ দৌড়াতে দৌড়াতে তারা একটি গ্রামে এসে পৌঁছান৷ উত্তেজনার পাশাপাশি ক্ষুধা-তৃষ্ণায় তখন কাতর হয়ে পরেছেন দুজনের৷ দীর্ঘ সময় পর একটি কিশোরী গৃহবধূ তাদের কিছু মুড়ি ও পানি খেতে দেয়৷ সন্ধ্যায় তোরা নৌকাঘাটে এসে দেখেন তার স্বামী বকুল উৎকণ্ঠিত হয়ে তাদের ফেরার অপেক্ষা করছে৷ বকুল তাদের জানান, পাকসেনাদের গানবোট দুটি খুব কাছে এলেও পরিত্যক্ত নৌকা ভেবে ফিরে গেছে৷ পরে গভীর রাতে তারা মাইনকারচরে পৌঁছান৷
পরদিন সড়কপথে তারা জলপাইগুড়ির পাঙ্গা চরে যান৷ পরে তারা ট্রাকে করে সেখান থেকে ৪০০ রাইফেল, ৪০ হাজার গোলাবারুদ, ১০ ব্যাগ বিস্ফোরক, চারটি আরসিএল এবং কিছু গ্রেনেড নিয়ে আসেন৷ মাইনকারচর থেকে অস্ত্রগুলো তারা তিনটি নৌকা বোঝাই করে সিরাজগঞ্জে নিয়ে আসেন। সেসব অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বণ্টন করেন৷
এরপর রৌমারি ইয়ুথ ক্যাম্পে সিরাজগঞ্জের বেশ কয়েকটি মুক্তিযোদ্ধা দলের হয়ে যোগাযোগ এবং অস্ত্র সরবরাহের কাজ করেছেন আমিনা বেগম৷ অক্টোবর মাসে শিলিগুড়ির পাঙ্গা চর থেকে আরো এক চালান অস্ত্র মাইনকারচরে এসে পৌঁছায়৷ এ সময় বেশ কিছু অস্ত্র নৌকাযোগে সিরাজগঞ্জে পাঠানো হয়৷
এর কিছুদিন পরই আমিনার উপর দায়িত্ব পড়ে, আরো কিছু অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে৷ কিন্তু অস্ত্র নিয়ে নৌকায় করে সিরাজগঞ্জ শহরের কিছুটা উত্তরে ব্রহ্মগাছায় পৌঁছালে আকস্মিকভাবে পাকিস্তানি বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়৷ এ যুদ্ধে সরাসরি অংশ না নিলেও যুদ্ধের পুরো সময় তিনি ছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রের কাছেই৷ এক পর্যায়ে অস্ত্রসহ ফিরে আসেন ক্যাম্পে৷ পরে কাজীপুর উপজেলার নাটুয়ারচরে গিয়ে অস্ত্র ও গ্রেনেডগুলো মাটিতে পুঁতে রাখেন৷ নির্দেশ ছিল, বিশেষ প্রয়োজনে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে অস্ত্রগুলো সরবরাহ করতে হবে৷ সেমতই কাজ করেন আমিনা বেগম।
স্বাধীনতার পর উপজেলা নারী ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে পেশাগত ও সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছেন আমিনা৷ ২০০৮ সালে অবসর গ্রহণ করে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা৷
- ইউটিউব দেখে স্ট্রবেরি চাষ, এক মৌসুমে আয় ৩০ লাখ টাকা
- হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বটগাছ
- টিশ ২ এমপিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি ইসরায়েলে
- এক্সিম ব্যাংকে চাকরি, লাগবে না অভিজ্ঞতা
- প্রস্তুতি ম্যাচে প্রত্যাশিত ফল
- শাকিবের সঙ্গে অভিনয় করার জন্য মুখিয়ে ছিলেন ইধিকা
- গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে এবার চুরি হলো আফ্রিকান লেমুর
- ঢাকাসহ যেসব বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস
- এসএসসি পরীক্ষা ১০ এপ্রিল থেকে শুরু
- দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা: সায়েন্সল্যাবে বিক্ষোভ মিছিল
- সারাদেশে চলছে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি
- অনিশ্চয়তায় ৩৬৮ হজযাত্রী
- মানিকগঞ্জে কার্টনে মোড়ানো লা*শের পরিচয় মিলেছে
- রাজশাহীতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৫০
- রাজধানীতে বহুতল ভবনে আগুন, নিহত ১
- ‘উইমেন ফর উইমেন,এ রিসার্চ এন্ড স্টাডি গ্রুপ’এর বার্ষিক সভা
- বইমেলায় আইরীন নিয়াজী মান্নার ছড়ার বই ‘টুটুলের কাছে চিঠি’
- মিষ্টি আলুর হালুয়া রেসিপি
- খালেদা জিয়ার ৮ মামলা বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
- তোফায়েল আহমেদের বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
- অভিনেত্রী শাওন ও সাবাকে ছেড়ে দিয়েছে ডিবি
- বনানীতে শেখ সেলিমের বাসায় আগুন
- লন্ডনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে যা জানা গেল
- নিরুপায় বাফুফে, ঘোর সংকটে নারী ফুটবল
- ঢাকা আন্তর্জাতিক ম্যারাথন ২০২৫ উদ্বোধন
- রোজার ঈদের পর দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া
- যুক্তরাষ্ট্রে নারী নেত্রীদের সঙ্গে জায়মা রহমানের বৈঠক
- শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ট্রাইব্যুনালে বিএনপির অভিযোগ
- শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয়
- জাতীয় নাগরিক পার্টির ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন