ঢাকা, মঙ্গলবার ১৭, সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২:১৩:৩৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
আকস্মিক বন্যা-বৃষ্টিতে ক্ষতি যেসব জেলায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ৪৬ ঘণ্টা পর লঞ্চ চলাচল শুরু চীনে ৭০ বছর পর শক্তিশালী টাইফুনের আঘাত রাজধানীতে তীব্র মাথাব্যথা নিয়ে তরুণীর মৃত্যু! সাংবাদিক শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবু আটক সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর গ্রেপ্তার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

মেহেরপুরে রাস্তায় রাস্তায় কৃষ্ণচূড়ার সমারোহ

দিলরুবা খাতুন, বাসস | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:৫৪ পিএম, ১৩ মে ২০২৪ সোমবার

মেহেরপুরে রাস্তায় রাস্তায় কৃষ্ণচূড়ার সমারোহ

মেহেরপুরে রাস্তায় রাস্তায় কৃষ্ণচূড়ার সমারোহ

মেহেরপুরে গাছে-গাছে বর্ণিল ফুলের সমারোহ। কোথাও টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়া, কোথাও কমলা রঙের রাধাচূড়া। কোথাও আবার ছেয়ে আছে স্নিগ্ধ বেগুনি রঙের জারুল। পথ চলতে থমকে দাঁড়িয়ে এসব ফুলের দিকে কিছুক্ষণ চাননি, এমন মানুষ পাওয়া ভার হবে নিশ্চয়ই। আর মিষ্টি হলুদ রঙের সোনাঝরা সোনালুর ঝলমলে চাহনি গ্রীষ্মের রূপে যোগ করে দ্বিগুণ মাত্রা।
বাঙালির কবিতা, সাহিত্য, গান ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা নানা ভঙ্গিমায় এসেছে। ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়ার তাৎপর্য। কৃষ্ণচূড়া ফুল বাংলাদেশের প্রকৃতি পরিবেশ ও ঐতিহ্যের সাথে গভীরভাবে মিশে আছে যুগ যুগ ধরে। বসন্তের শেষে গ্রীষ্মের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলে কৃষ্ণচূড়া। গাছের ডালে ডালে সবুজ পাতার ফাঁকে উকি দেয়া টকটকে লাল রঙের বাহারী ফুলে ভরে যায় গাছ। ফুল গন্ধহীন, পাপড়ি পাঁচটি, নমনীয় কোমল, মাঝে লম্বা পরাগ অবস্থিত। ফুল ফুটন্ত কৃষ্ণচূড়া গাছের মনোরম দৃশ্য দেখে যে কেউ থমকে দাঁড়াবে ও মনে আনন্দের ঢেউ জাগাবে।
কৃষ্ণচূড়াকে সাধারণত আমরা লাল রঙেই দেখতে অভ্যস্ত। তবে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া তিনটি রঙের হয়। লাল, হলুদ ও সাদা। কম হলেও চোখে পড়ে হলদে রঙের কৃষ্ণচূড়া আর সাদা রঙের কৃষ্ণচূড়ার দেখা মেলে কালেভদ্রে। তিন রঙের কৃষ্ণচূড়ার গাছ উঁচু। অনেকটা জায়গাজুড়ে শাখা-প্রশাখার বিস্তার ঘটায়। তিন রঙেরই ফুল ফোটে প্রায় একই সময়ে
এ সময়ে সারা দেশের মতোই  মেহেরপুরের পথে-প্রান্তরে চোখ ধাঁধানো টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে সেজেছে গ্রীষ্মের প্রকৃতি। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বৈশাখের রোদ্দুরের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুষ্পরাজি। বিশেষ করে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের আমঝুপির রাস্তার দুধারে, কাথুলী সড়কে পৌর ডিগ্রি কলেজের  পাশে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া।  
গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জুরিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মতো অনেকেই বাংলা কবিতা-গানে উপমা হিসেবে নানা ভঙ্গিমায় এসেছে এই ফুলের সৌন্দর্য্য বর্ণনা। বৈশাখের শেষ প্রান্তে প্রকৃতি তার প্রাণ ফিরে পেলো কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্যে। গ্রীষ্মের এ নিস্প্রাণ রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে মেলে ধরছে আপন মহিমায়। কখনো রোদ, কখনো ঝড়-বৃষ্টি। এই আবহাওয়ার মধ্যে মেহেরপুরের বিভিন্ন সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া ফুলের লাল কমলা, হলুদ ফুল এবং উজ্জল সবুজ পাতা প্রকৃতিতে সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। এ যেন ফুল-পাতা দিয়ে গড়া প্রকৃতির এক স্বর্গরাজ্য। যা দেখে চোখ জুড়ায় পথচারীর। দূর থেকেও পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
কৃষ্ণচূড়া একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়া। এ গাছ চমৎকার পত্র-পল্লব এবং আগুনলাল কৃষ্ণচূড়া ফুলের জন্য প্রসিদ্ধ। সৌন্দর্য বর্ধণ ছাড়াও, কৃঞ্চচুড়া গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় শীতলতা বয়ে আনে। কৃষ্ণচূড়া গাছের উচ্চতা সর্বোচ্চ ১২ মিটার হলেও শাখা- প্রশাখা বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়। শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ হয়ে থাকে।
শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষটি গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি শহরের পথে-প্রান্তরের শোভা বর্ধন করে যাচ্ছে। গ্রীষ্মে যখন এ ফুল ফোটে, তখন এর রূপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীরা থমকে দাঁড়ায়। গ্রীষ্মের প্রচন্ড খরতাপে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের পাশাপাশি এসব গাছ দিচ্ছে ক্লান্ত দেহে ছায়া আর মনে প্রশান্তির পরশ।
মেহেরপুরের প্রায় প্রতিটি সড়কেই কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটেছে। মেহেরপুর- মুজিবনগর সড়কের দু’পাশে, আমঝুপি সড়কে, উজলপুর সড়কে, মোহাম্মদপুর, করমদি, দেবীপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের সড়ক ও রাস্তায় নানান গাছের মাঝে জানান দিচ্ছে কৃষ্ণচূড়াগাছ। অনেক বাড়িতে ও কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটেছে। গ্রীষ্মের এ আগুনঝরা দিনে যেন লাল বেনারসি পরা নববধূর সাজে কারো অপেক্ষায় আছে কৃষ্ণচূড়া।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কম-বেশি কৃষ্ণচূড়াগাছ আছে। এসব গাছে ইতিমধ্যে ফুল ফুটেছে। ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছে পথচারীরা।
জেলা শহরের ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ পাড়ার ব্যবসায়ী নুরু মিয়া বলেন- গাছের ছায়ায় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে গরমের দিনে অনেক স্বস্তি পাই।  আর এই গাছের ছায়ায় ক্লান্ত পথচারীরা নিজেকে একটু জুড়িয়ে নেয়।  
মেহেপুরের সমাজকর্মী মাহবুব হক মন্টু বলেন- ধূলা-বালির এ শহরে গ্রীষ্মের খরতাপে শান্তির পরশ  বুলিয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো।