যে পাঁচটি পরিবর্তন আসছে পাঠ্যবইয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪প্রকাশিত : ১১:১১ এএম, ১ নভেম্বর ২০২৪ শুক্রবার
সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আসছে। সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের পর প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশসহ প্রায় সব জায়গায়ই পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাই পাঠ্যপুস্তকও এর বাইরে থাকছে না।
আগামী বছরের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তকে যুক্ত হচ্ছে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি। বাদ দেয়া হচ্ছে বইয়ের প্রচ্ছদে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত উক্তি। একই সাথে বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসে যার যা ভূমিকা, তা সেভাবে সন্নিবেশিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বিবিসি বাংলাকে জানান, ইতিহাসে যার যেমন ভূমিকা সেভাবেই সেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ইতিহাসে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের বিষয় যুক্ত হচ্ছে।
আগামী বছরের পাঠ্যপুস্তক ২০২৪ সালের বিদ্যমান পাঠ্যক্রমে নয় বরং ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমে হচ্ছে বলে জানান এনসিটিবির চেয়ারম্যান রিয়াজুল হাসান।
তিনি বলেন, “যে কারিকুলামটা বিদ্যমান ছিল ২০২৪ এর জন্য সেটাতে না গিয়ে ২০২৫ সালের জন্য ২০১২ সালের কারিকুলাম অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হচ্ছে, যেটা ২০২২ সালে সর্বশেষ গিয়েছিলো।”
বিভিন্ন শ্রেণির বেশ কিছু পাঠ্যপুস্তকে দেশের গণঅভ্যুত্থানের চেতনার প্রতিফলন থাকবে। আরও যে কয়েকটি পরিবর্তন আনা হচ্ছে তা নিয়েই এ লেখা।
ঢাকা শহরের দেয়াল জুড়ে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আঁকা এসব গ্রাফিতি
যুক্ত হচ্ছে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল দাবি একসময় সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।
এ আন্দোলনে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে দেয়াল চিত্রকে বেছে নেয়।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পরও পুরো ঢাকা শহরের বিভিন্ন দেয়ালে দেয়ালে শিক্ষার্থীরা গ্রাফিতি আঁকে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু ভবনের দেয়াল, সীমানা প্রাচীর, সড়ক-দ্বীপ, মেট্রোরেলের স্তম্ভ, উড়াল সড়কের স্তম্ভ কোনো কিছুতেই নিজেদের অর্থে গ্রাফিতি আঁকতে বাদ রাখেনি শিক্ষার্থীরা।
এসব গ্রাফিতিতে ওই সময়টুকুকে ধারণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। অভ্যুত্থানে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গ্রাফিতিতে।
পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, রাষ্ট্র-সমাজের সংস্কার, ঘুস-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, স্বৈরতন্ত্রের অবসান, বাক-স্বাধীনতা, অধিকার নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে সব ধরনের অন্যায়–অবিচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আর প্রতিরোধের উক্তিও ফুটে উঠেছে এসব গ্রাফিতিতে।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, জুলাইয়ের গ্রাফিতি যে সবগুলো বইয়ে যাবে তা নয়, কিছু কিছু বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
একইসাথে যেহেতু ২০২৪ এর জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের বিষয়টি একেবারেই সাম্প্রতিক এবং তা নিয়ে লেখা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ বছর সময়ও একেবারেই কম, ফলে লেখা হিসেবে না রেখে কিছু পাঠ্যবইয়ে অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি বা দেয়ালে আঁকা ছবি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিটিবি।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, “২৪ এর জুলাইয়ের ঘটনাবলী, এ জাতীয় যে সব লেখা রয়েছে তা আসলে কতটা মানসম্পন্ন আর লেখাগুলো তৈরি করাও বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তারপরও কিছু বিষয় যেতে পারে কিন্তু সেটা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন। এখনও অনুমোদন আমরা পাইনি।”
তিনি জানান, “তবে কিছু কিছু বইয়ের ব্যাক কাভারে কিছু গ্রাফিতি যাচ্ছে, বাচ্চারা দেয়ালে যে চিত্রাঙ্কন এঁকেছে বা মনীষীদের বাণী ওই জাতীয় বিষয় যাচ্ছে।”
বাংলা, ইতিহাস, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের মতো কিছু বইয়ের প্রচ্ছদে বা বইয়ের কোনও কোনও অংশে এসব গ্রাফিতি বা দেয়ালে আঁকা ছবি যুক্ত করা হবে।
এনসিটিবি প্রণীত চতুর্থ শ্রেণির বর্তমান 'আমার বাংলা' বইয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একাধিক রচনা রয়েছে
‘শেখ হাসিনার উক্তি বাদ দেয়া হবে’
এখন বেশ কয়েকটি শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেসব ছবি ও উদ্ধৃতি রয়েছে সেগুলো বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিটিবি।
বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় থাকা শেখ হাসিনার এসব উক্তিকে অপ্রাসঙ্গিক উল্লেখ করে চেয়ারম্যান হাসান বলেন, “সেগুলো থাকবে না। সেগুলো অপ্রাসঙ্গিক।”
শিক্ষার্থীদের মনে যাতে রাজনৈতিক কোনো ধারণার উদ্রেক না হয় সে কারণে এসব বাদ দেয়া হচ্ছে বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “ওগুলো আসলে পাঠ্যবইতে যাওয়ার মতো নয় বা প্রয়োজন নেই। পাঠ্যবইয়ের কভার পৃষ্ঠা থেকেই শুরু হয় শিক্ষার্থীর শিক্ষামূলক কার্যক্রম। এগুলো দেখে তাদের মধ্যে অন্যরকম ধারণা না তৈরি হয় যে এটা একটা রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ। এটা যেন না হয়।”
বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে শেখ হাসিনার উদ্ধৃতির পরিবর্তে চিরন্তন কিছু বাণী যুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
ইতিহাস বিষয়ক যেসব পরিবর্তন হচ্ছে
বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণির বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকাকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন ইতিহাস নির্ভর বিষয়েও কিছু কাটছাঁট করা হচ্ছে। একইসাথে যুক্ত করা হচ্ছে জিয়াউর রহমানসহ অন্যদের ভূমিকাও।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান রিয়াজুল হাসান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “ইতিহাসের বিষয় আছে, যেগুলোতে যার যার ভূমিকা সেটা সঠিকভাবে ছিল না। এরকম অভিযোগ আছে। আমরাও পেয়েছি। সেগুলো দেখা হচ্ছে।”
“যার যতটুকু ভূমিকা সেভাবে দেয়া হবে। যেমন: মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ইতিহাসের অন্যান্য যারা পিলার তাদের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে,” জানান তিনি।
'মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন'- এমন বিষয়ও যুক্ত হচ্ছে আগামী বছরের পাঠ্যইয়ে।
হাসান বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষণায় আমাদের তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান একাধিক ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেগুলো সেভাবেই আসবে আশা করছি।” একইসাথে মুক্তিযুদ্ধে অন্যান্যদের যে ভূমিকা তাও অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
“এছাড়া মাওলানা ভাসানী, তাজউদ্দীন আহমেদ, জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী, যার যা ভূমিকা এগুলো ইতিহাসের অংশ হিসেবে যুক্ত করা হবে।”
গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের কথা অন্তর্ভুক্ত হবে?
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে গত ১৬ই জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ নিহত হন। পুলিশের গুলির বিপরীতে বুক পেতে দাঁড়িয়ে যান তিনি।
বিভিন্ন ভিডিওতে পুলিশ গুলি করার পর সাঈদকে ঢলে পড়তে দেখা যায়। পরে মারা যান তিনি। যদিও পুলিশ যে মামলা করে তাতে ভিন্ন বক্তব্য থাকায় তা নিয়ে চলে তুমুল সমালোচনা। সাঈদের এ মৃত্যু সে সময় তোলপাড় তোলে দেশে।
এ আন্দোলনে ঢাকায় ১৮ই জুলাই নিহত হয়েছেন এমন একজন মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এর ছাত্র মুগ্ধ উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
- ‘আই ফেইলড অ্যাজ আ হিউম্যান’, চবি ছাত্রীর সুইসাইড নোট
- কমেছে সবজির দাম, চড়া আলু-পেঁয়াজ-চালের বাজার
- ফেলে দেওয়া কাপড়ে দিনবদলের গল্প
- জাগো নারী ফাউন্ডেশনের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
- উপস্থাপনায় ফিরলেন নাবিলা
- খাল নষ্টের অধিকার কারও নেই: রিজওয়ানা হাসান
- স্থূলতা বা ওবেসিটি থেকে মুক্তির উপায়
- আজ আবহাওয়া যেমন থাকবে
- প্রাইজবন্ডের ১১৭তম ড্র অনুষ্ঠিত
- ট্রফি নিয়ে সুমাইয়াদের ঘুম
- ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৯৫, লেবাননে ৪৫
- যে পাঁচটি পরিবর্তন আসছে পাঠ্যবইয়ে
- সাংবাদিকসহ ১০ জনকে ধাক্কা দিয়ে পালাল প্রাইভেটকার!
- আজ থেকে কাঁচাবাজারেও নিষিদ্ধ পলিথিন
- ছাদখোলা বাসে বাফুফে পৌঁছায় চ্যাম্পিয়নরা
- ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের দুই শিল্পীকে শোকজ
- জেনে নিন বিমানবন্দর নেই যে সব দেশে
- বন্যায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, সড়কে-গাছতলায় চলছে চিকিৎসা
- ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ শতাংশ নারীই অবিবাহিত-নিঃসন্তান থাকবেন
- জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক হলেন আফসানা বেগম
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত
- তক্ষশীলা– পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়
- অপারেশনের ঝুঁকি কমাচ্ছে এআই প্রযুক্তি
- চাঁদপুরে গরমে মারা যাচ্ছে মুরগি
- শিল্পীদের কাজ শিল্পচর্চা, রাজনীতি নয়: মম
- বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রবেশ ফি কমলো
- ডেঙ্গুতে প্রাণহানী ১, হাসপাতালে ভর্তি ৬১৫ জন
- যে পাঁচটি পেশার চাহিদা বাড়ছে, সফল হতে যা প্রয়োজন
- যেসব ভুলে নারীর হৃদরোগ ঝুঁকি বাড়ে
- ঘুরে আসুন পানামসহ না.গঞ্জের পাঁচটি পর্যটন স্পট