ঢাকা, শনিবার ২২, ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৩২:২২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি, গ্রেপ্তার ৩ রাজধানীতে এক রাতে ছয় স্থানে ডাকাতি যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলা, দুই নারীসহ নিহত ৪ বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় আজও শীর্ষে ঢাকা আসছে বজ্রবৃষ্টি, পড়তে পারে শিলা ব্রাজিলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ: ১২ শিক্ষার্থীর প্রাণহানী

রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি, যা বললেন যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০৮ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ শুক্রবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির পাশাপাশি দুই নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় নাটোরে সন্দেহভাজন আটক বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জামিন পেলেও বিষয়টি বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আদালত সূত্রে জানা যায়।

নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালত সূত্রে জানা যায়, বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চালান মূলে ঢাকা-রাজশাহী চলাচলকারী ইউনিক রোড রয়েলস বাসের চালক বাবলু ইসলাম (৩৫), চালকের সহকারী সুমন ইসলাম (৩৫) ও সুপারভাইজার মাহবুল আলমকে (৩৮) বুধবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় তাদেরকে আদালতের সামনে হাজির করলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তৌহিদুর রহমান সুমন শুনানি শেষে আসামিদের জামিনে মুক্তির আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর মোস্তফা কামাল জানান, মামলাটি ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ধারার হওয়ায় এবং আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ সুনির্দিষ্ট না থাকায় আদালত তাদের জামিনের আদেশ দেন।

এদিকে ডাকাতি হওয়া বাসের যাত্রী ও বড়াইগ্রাম উপজেলার থানা মোড় এলাকার বাসিন্দা ওমর আলী বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, সেদিন (সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় বাসটি রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বাস একটু দূরে যেতেই তিনজন যাত্রী ওঠেন, যাদের সঙ্গে কানে কানে কথা বলেন হেলপার। এরপর বাস বাইপাইল এলাকায় এলে সেখানে আরও পাঁচজন গাড়িতে ওঠেন। এরপর পাঁচজনের একজন ড্রাইভারকে বলেন ওস্তাদ অনেকক্ষণ গাড়ি চালিয়েছেন এবার ওঠেন, আমরা চালাব। তাদের একজন গিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করেন। এর ১০ মিনিট পরেই চাকু-ছুরি বের করে সবাইকে মারধর এবং ডাকাতি শুরু করে। বাসের যাত্রীদের একেকজনকে ৮-৯ বার চেক করা হয়েছে, যা পেয়েছে সব নিয়ে গেছে। মেয়েদের কানের দুল ছিঁড়ে নিয়েছে, প্যান্ট ছিঁড়ে দিয়েছে। ডাকাতির পুরো কার্যক্রমটি আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার ভেতর শেষ করেছে। পরে নির্জন একটি জায়গায় গিয়ে তারা নেমে পড়েছে।

ওমর আলী আরও বলেন, এরপর আগের ড্রাইভার আমাদেরকে বলেন গাড়িতে তেল নেই আপনারা এখানে নেমে যান। কিন্তু আমরা নামিনি। আমার সঙ্গে থাকা সোহাগের কৌশলে লুকিয়ে রাখা মোবাইল দিয়ে ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ আসে। হাইওয়ে পুলিশ এসে জানায় সামনে মির্জাপুর থানা সেখানে গিয়ে মামলা করতে। সেখানে গেলে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দেখতে পাই। তারা বলেন ফজরের আজানের পর স্যার এলে মামলা হবে। পরে সেখান থেকে আমরা চলে আসি। বড়াইগ্রাম এসে বাস থামিয়ে দিই। গাড়িতে আমিসহ মোখড়া এলাকার ৭৩ বছর বয়সী আরেকজন ব্যবসায়ী ছিল। আমার কাছে ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আমাদের বিষয়ে গাড়ির হেলপার ডাকাতদের অবহিত করে। ডাকাতরা আমাদের সব টাকা নিয়ে গেছে।


বাসে ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেছিল কি না এমনটা জানতে চাইলে এই যাত্রী বলেন, আসলে বাসে সেদিন রাতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। তবে নারীদের সঙ্গে খুব বাজে আচরণ করেছে। দুজন মেয়েকে ধর্ষণ ছাড়া সবই করেছে। ওই মেয়ে দুটি সব দেওয়ার পরও তাদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। তারা থানায় এসে পুলিশকে সব বলেছে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানায় মামলা করার অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। শুনেছি বাসের চালক ও হেলপারসহ আটক তিনজন জামিন পেয়েছে। মির্জাপুর থানায় যাব। সেখানে গিয়ে মামলা করবো। কারণ আমাদের অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ওই বাসে ছিলেন রাজশাহীর চারঘাট এলাকার এক নারী যাত্রী। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেদিন রাতে বাসে কোনো নারী যাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়নি। তবে বাসে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়েছে।

ডাকাতিতে বাসের চালক-হেলপার জড়িত ছিল এমনটা মনে হয়েছে কি আপনার? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার মতে ড্রাইভারদের সন্দেহ করা ঠিক হবে বলে মনে হয় না। কেননা ডাকাতরা তাদেরকেও মারধর করেছে।

বড়াইগ্রাম থানা‌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, বাসের যাত্রীরা মৌখিকভাবে পুলিশকে ডাকাতি হওয়ার কথা বলেছেন। বাসে ডাকাতি বা বাসের যাত্রীদের ধর্ষণের ব্যাপারে কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ দেননি। ঘটনাস্থলও অন্য জেলায়। তাই আটক বাসের চালক, চালকের সহকারী ও সুপারভাইজারকে কার্যবিধি ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।