ঢাকা, শুক্রবার ২২, নভেম্বর ২০২৪ ১৬:২০:৩৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারের গণসংবর্ধনা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে, বাড়ছে শীতের তীব্রতা পেঁয়াজ-সবজি-মুরগির দাম কমলেও আলুর দাম বাড়তি রাজধানীতে মা-মেয়েকে এসিড নিক্ষেপ করে ছিনতাই মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

রোজা লুক্সেমবার্গের নির্বাচিত রচনা: অনুবাদ: অদিতি ফাল্গুনী

(ভূমিকা: পিটার হুদিস এবং কেভিন বি. এন্ডারসন) | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:০০ পিএম, ৫ মে ২০২২ বৃহস্পতিবার

রোজা লুক্সেমবার্গের নির্বাচিত রচনা: অনুবাদ: অদিতি ফাল্গুনী

রোজা লুক্সেমবার্গের নির্বাচিত রচনা: অনুবাদ: অদিতি ফাল্গুনী

(ভূমিকা/পর্ব-৯): সঞ্চয়ের ঐতিহাসিক শর্ত, ‘পুঁজির সঞ্চয় (দ্য এ্যাকুমুলেশন অফ ক্যাপিটাল’) থেকে: মার্ক্সের বৃত্তে যেমনটা প্রস্তাব করা হয়েছে সেভাবেই যদি, স্থির/ধ্রুব এবং পরিবর্তনশীল পুঁজির ভেতর ৫:১ মাত্রায় অপরিবর্তনশীল অনুপাত বিরাজ করে। তবে সেক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে হলেও আমরা ধরে নেব যে পুঁজির এই বৃদ্ধি তার গঠনের প্রগতিশীল পুনর্বিন্যাস দ্বারা অন্বিত। ধ্রুব ও পরিবর্তনশীল পুঁজির ভেতর এই অনুপাত দ্বিতীয় বছরে হয়ে দাঁড়ায় ৬:১, তৃতীয় বছরে হয় ৭:১, চতুর্থ বছরে হয় ৮:১। আমরা যদি আরো অনুমান করি তবে দেখতে পাব যে উদ্বৃত্ত মূল্যের হার শ্রমের উচ্চতর উৎপাদনশীলতা অনুযায়ী বাড়ে যাতে করে প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই বৃত্তে নির্দেশিত অনুপাতের সমপরিমাণ অঙ্কই আমরা পাই। যদিও তুলনামূলক হ্রাসমান, পরিবর্তনশীল পুঁজির কারণে, উদ্বৃত্ত মূল্যের হার তার আদি অবস্থার ১০০ শতাংশ হারে আর কোনভাবেই থাকে না- এবং যদি শেষপর্যন্ত আমরা অনুমান করে নিই যে বণ্টিত উদ্বৃত্ত মূল্যের অন্তত: অর্দ্ধেক পরিমাণ অঙ্ক উৎপাদনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই মূলধনীকৃত করা হয়েছে (বিভাগ-২ বাদে অর্থাৎ মার্ক্স যেটিকে বলছেন ভোগের উপায়ের উৎপাদন আর বিভাগ-১ হচ্ছে উৎপাদনের উপায়ের উৎপাদন- দ্বিতীয় বিভাগে মূলধনীকরণ ৫০ শতাংশকে ছাড়িয়ে যায় আর প্রথম বছরে ২৮৫-র ভেতরে ১৮৪-কে মূলধনীকৃত করা হয়)। কাজেই সেক্ষেত্রে নিচে বর্ণিত ফলাফল দেখা দেবে:

প্রথম বছর
১. ৫,০০০ c + ১,০০০ v +১,০০০ s = ৭,০০০ উৎপাদনের উপায়।

২. ১,৪৩০ c + ২৮৫ v +২৮৫ s = ২,০০০ টিঁকে থাকার উপায়।

দ্বিতীয় বছর

৩. ৫,৪২৮ ৪/৭ c + ১,০৭১ ৩/৭ v +১,০৮৩ s = ৭,৫৮৩ উৎপাদনের উপায়।

৪. ১,৫৮৭ ৫/৭ c +৩১১ ২/৭ v +৩১৬ s = ২,২১৫ টিঁকে থাকার উপায়।

তৃতীয় বছর

৫. ৫, ৯০৩ c + ১,১৩৯ v +১,১৭৩ s = ৮,২১৫ উৎপাদনের উপায়। 

৬. ১,৭২৬ c + ৩৩১ ২/৭ v + ৩৪২ s = ২,৩৯৯ টিঁকে থাকার উপায়।

চতুর্থ বছর
১. ৬,৪২৪ c +১,২০৫ v + ১,২৭১ s = ৮,৯০০ উৎপাদনের উপায়।

২. ১,৮৭৯ c + ৩৫০ v + ৩৭১ s = ২,৬০০ টিঁকে থাকার উপায়।

এই যদি সঞ্চয়মূলক প্রক্রিয়ার একটি সত্যিকারের চিত্র হয়ে থাকে, উৎপাদনের উপায় (ধ্রুব/স্থির পুঁজি) দ্বিতীয় বছরে ঘাটতি দেখাবে ১৬, তৃতীয় বছরে ৪৫ এবং চতুর্থ বছরে ৮৮; একইভাবে, টিঁকে থাকার উপায় দ্বিতীয় বছরে উদ্বৃত্ত দেখাবে ১৬, তৃতীয় বছরে ৪৫ এবং চতুর্থ বছরে ৮৮।

উৎপাদনের উপায়ের জন্য এই নেতিবাচক ভারসাম্য আংশিক ভাবে শুধুই কল্পিত হতে পারে। শ্রমের বর্দ্ধনশীল উৎপাদন এটাই নিশ্চিত করে যে উৎপাদনের উপায় মূল্যের চেয়ে আয়তনে দ্রুত বাড়ে, অন্য কথায় বললে: উৎপাদনের উপায় দামে আরো সস্তা হয়। পুঁজির বস্তগত উপাদান  যা কিনা উৎপাদনের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য দরকার- ব্যবহার মূল্য যদি তেমনটি হয়ে থাকে- তবে সেক্ষেত্রে আমরা অনুমান করে নিতে পারি যে নি¤œতর মূল্য সত্ত্বেও উৎপাদনের উপায়ের সংখ্যা একটি নির্দিষ্ট বিন্দু অবধি প্রগতিশীল সঞ্চয়ের জন্য যথেষ্ট হবে। অন্য সবকিছুর ভেতর এই প্রপঞ্চও মুনাফার হারের প্রকৃত হ্রাসকে ঠেকিয়ে রাখে এবং একটি নিতান্ত প্রবণতায় সংশোধন করে। যদিও আমাদের উদাহরণ এটাই দেখায় যে মুনাফার হারের হ্রাস শুধুই প্রতিবন্ধকতা প্রাপ্তই হবে না, একদম বন্ধও হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, একই ঘটনা দামের নিরিখে এই পরিমাণ উদ্বৃত্ত দ্বারা সুপারিশকৃত হবার বদলে টিঁকে থাকার অনাক্রমণযোগ্য উপায়ের এক অনেক বেশি উদ্বৃত্তকে ইঙ্গিত করে। তেমন সব ঘটনার ক্ষেত্রে, আমাদের বিভাগ-২-এর পুঁজিপতিদের বাধ্য করতে হবে যেন তারা নিজেরাই উদ্বৃত্তকে ভোগ করে। এমনটি মার্ক্স অন্য নানা ক্ষেত্রেও হতে দিয়েছেন। যে যে ক্ষেত্রে এবং যতটা এই পুঁজিপতিরা জড়িত বা সংশ্লিষ্ট, সেসব ক্ষেত্রে কোন সঞ্চয় হবে না। হবে নিছকই পুনরুৎপাদন। অন্যথায় এই গোটা উদ্বৃত্তকে আমাদের অনাক্রমণযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।

তবু আমাদের উদাহরণ থেকে কি এটা স্পষ্ট হচ্ছে না যে উৎপাদনের উপায়ের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া অত সহজ নয়? আমাদের শুধু এটুকু অনুমান করে নিতে হবে যে বিভাগ-১-এর পুঁজিপতিরা একটি বৃহত্তর স্তর অবধি তাদের উদ্বৃত্ত মূল্যকে মূলধনীকৃত করে। প্রকৃতপক্ষে, অনুমান করার পক্ষে এমন কোন বৈধ কারণ নেই- মার্ক্স যেমনটা অনুমান করেছিলেন যে প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুঁজিপতিরা তাদের পুঁজি বা মূলধনের সাথে তাদের উদ্বৃত্ত মূল্যের শুধু অর্দ্ধেক যুক্ত করে। শ্রম উৎপাদনশীলতায় অগ্রগতি উদ্বৃত্ত মূল্যের প্রগতিমুখী ও বর্দ্ধনশীল মূলধনীকরণের দিকে ভাল ভাবে এগিয়ে নিয়ে যায় বা যেতে পারে। পুঁজিপতি শ্রেণির জন্য ভোগ্য পণ্যের সুলভকরণে এই অনুমান যে অধিকতর অনুমোদনযোগ্য সেটাও মূলত: প্রযুক্তিগত অগ্রসরতার ফলাফলসমূহের অন্যতম। ভোগযোগ্য আয়ের মূল্যে এই আপেক্ষিক অবনমন (মূলধনীকৃত অংশের সাথে তুলনা হিসেবে) অত:পর এই শ্রেণির জন্য একই ধরণের বা এমনকি অধিকতর উচ্চ স্তরের জীবন যাপনের মানও অনুমোদন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা উৎপাদক পণ্যের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারি যদি উদ্বৃত্ত মূল্য ১-এর অনুরূপ একটি অংশ উৎপাদক পণ্যের ঘাটতি পূরণ করতে এই বিভাগের ধ্রুব/স্থির পুঁজির অংশে বদলি করা হয় (অন্যথায় এই অংশ ভোগ করা হয়ে যাবে)। একটি সমস্যার সমাধান আর একটি সমস্যার সূচনা করে। একথা বলা বাহুল্য যে যদি বিভাগ-১-এর পুঁজিপতিরা সঞ্চয়ের জন্য তাদের ভোগের পরিমাণ আপেক্ষিক ভাবে সংযত করে, তবে বিভাগ-২-এ আনুপাতিক হারে অনাক্রমণযোগ্য ভোগ্যপণের একটি বৃহত্তর অংশ জমা হবে; এবং এভাবেই ধ্রুব/স্থির পুঁজিকে তার অতীতের প্রযুক্তিগত ভিত্তির উপরও বাড়ানো বা বাড়িয়ে তোলাটা দিন দিন আরো দু:সাধ্য হবে। বিভাগ-১-এর পুঁজিপতিরা যদি তাদের ভোগকে সংযত করে, বিভাগ-২-এর পুঁজিপতিরা অবশ্যই আনুপাতিক হিসেবে তাদের ব্যক্তিগত ভোগ তুলনামূলক ভাবে বাড়াতে বাধ্য। বিভাগ-১-এর আওতায় বর্দ্ধিত সঞ্চয়ের অনুমানকে তখন বিভাগ-২-এ মন্দীভূত সঞ্চয়ের দ্বারা পরিপূরিত হতে হবে, এক বিভাগের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি আর এক বিভাগের মন্দা দ্বারা সূচিত হবে।

উপরোক্ত ফলাফলগুলো নিছকই দৈবের ইশারা নয়। মার্ক্সের বৃত্তে আমরা যে সমন্বয়গুলো সাধনের চেষ্টা করেছি তা’ নিছকই প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে চিত্রিত করতে চেয়েছে। যেমনটা তিনি (মার্ক্স) নিজেই স্বীকার করেছেন যে এই সমন্বয়সমূহকে অবশ্যই পরিবর্তনশীল পুঁজির বিপরীতে ধ্রুব/স্থির পুঁজির আপেক্ষিক বৃদ্ধির সঙ্গী হতে হবে। এখানেই একটি নির্দিষ্ট অনুপাতের ধারাবাহিক পরিমার্জ্জনার প্রয়োজন দেখা দেয় যে অনুপাতে মূলধনীকৃত উদ্বৃত্ত মূল্য ধ্রুব/স্থির পুঁজি এবং পরিবর্তনশীল পুঁজিতে বন্টিত হতে পারে। মার্ক্সের বৃত্তে, অবশ্য, পুঁজিপতিরা তাদের ইচ্ছানুসারে এই বন্টণগুলো করার অবস্থানে থাকে না যেহেতু তাদের উদ্বৃত্ত মূল্যের বস্তÍগত রূপ পুঁজিবাদের আঙ্গিকসমূহের পূর্বনির্দ্ধারণ করে থাকে। যেহেতু মার্ক্সের অনুমান অনুযায়ী উৎপাদনের যাবতীয় বিস্তারই এর নিজস্ব, পুঁজিবাদী পদ্ধতিতে উৎপাদিত উৎপাদন এবং টিঁকে থাকার উপায় দ্বারা নিরঙ্কুশ ভাবে সামনে অগ্রসর হয়- সেহেতু এই দুই বিভাগের পুঁজিপতি এবং শ্রমিক ছাড়া বাস্তবিকই উৎপাদনের আর কোন স্থান বা আঙ্গিক নেই বা নেই অন্য কোন ভোক্তা। এবং যেহেতু, অন্য দিক থেকে দেখলে, সঞ্চয়মূলক প্রক্রিয়ার মসৃণ কর্মকান্ড অর্থের আবর্তনের উপর নির্ভর করে যা এই দুই বিভাগের দ্বারা উৎপাদিত মোট উৎপাদনের সবটাই শোষণ করে, ফলাফলস্বরূপ বর্দ্ধিত পুনরুৎপাদনের প্রযুক্তিগত আকৃতি উদ্বৃত্ত পণ্যের বস্তÍগত আঙ্গিক দ্বারা কঠোরভাবে নির্দেশিত হয়। অন্য ভাবে বললে: মার্ক্সের বৃত্ত অনুযায়ী, প্রসারিত উৎপাদনের প্রযুক্তিগত সংগঠন এমন হতে পারে বা হওয়াই উচিত যাতে করে বিভাগ- ১ ও বিভাগ-২-এর আওতাধীন মোট উদ্বৃত্ত মূল্যের যথাযথ ব্যবহার করা যায়। এই প্রসঙ্গে আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে এই দুই বিভাগই শুধুমাত্র পারষ্পরিক বিনিময়ের মাধ্যমে উৎপাদনের নিজ নিজ উপাদানগুলো পেতে পারে। এভাবেই উদ্বৃত্ত মূল্যের স্থির বা পরিবর্তনশীল পুঁজির জন্য প্রদেয় বণ্টন যা কিনা মূলধনীকরণের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়, এবং একইভাবে উৎপাদন ও টিঁকে থাকার জন্য (শ্রমিকদের জন্য)  বিভাগ ১ ও ২-এ অতিরিক্ত বা বাড়তি বণ্টন অগ্রিমভাবেই প্রদান করা হয়ে থাকে এবং বৃত্তে বর্ণিত এই দুই বিভাগের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক দ্বারা নির্দ্ধারিত হয়ে থাকে- বস্তগত এবং মূল্যগত উভয় নিরিখেই। এই সম্পর্কগুলো নিজেরাই, যাহোক, উৎপাদনের একটি স্থির, নির্দ্ধারিত ও প্রযুক্তিগত সংগঠন প্রতিফলিত করে। এটা এ-ও বোঝায় যে মার্ক্সের বৃত্তের উপর করা অনুমানের ভিত্তিতে, প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রদত্ত উৎপাদনের কৌশলগুলো বর্দ্ধিত পুনরুৎপাদনের পরবর্তী সময়পর্বগুলো পূর্বনির্দ্ধারণ করে থাকে। যদি অবশ্য সঞ্চয় অব্যাহত থাকে। এটা অনুমান করে নিয়ে, মার্ক্সের বৃত্ত অনুযায়ীই, বলা যায় যে,  পুঁজিবাদী উৎপাদনের প্রসারণ সর্বদাই উদ্বৃত্ত মূল্যের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়ে থাকে যা আদিতে পুঁজির আঙ্গিকে উৎপাদিত হয়েছিল, এবং অধিকতর- অথবা, উল্টো করে বললে- এক বিভাগে সঞ্চয় অপর বিভাগের সঞ্চয়ের উপর কঠোরভাবে নির্ভরশীল। এবং সেজন্যই স্থির/ধ্রুব পুঁজি থেকে পরিবর্তনশীল পুঁজি অবধি উৎপাদনের প্রযুক্তিগত সংগঠনে কোন বদলই সম্ভব নয়।      

আমরা আরো একটি পন্থায় আমাদের যুক্তি সাজাতে পারি: এটা পরিষ্কার যে পরিবর্তনশীল পুঁজির তুলনায় স্থির পুঁজির দ্রুততর বৃদ্ধি বা সোজা কথায় পুঁজির জৈব সংগঠনের প্রগতিশীল রূপান্তর বিভাগ-২-এর আওতায় সঙ্ঘটিত উৎপাদনের তুলনায় বিভাগ-১-এর আওতায় অবশ্যই দ্রুততর প্রসারণের বস্তগত আঙ্গিক ধারণ করবে। তবু মার্ক্সের বৃত্ত, যেখানে দুই বিভাগের কঠোর অনুরূপতা স্বত:সিদ্ধ, তা’ উভয় বিভাগেই সঞ্চয়ের হারে যে কোন ওঠা-পড়া নিবৃত্ত করে।  এমনটা অনুমান করা খুবই বৈধ যে প্রগতিশীল সঞ্চয়ের প্রযুক্তিগত শর্তাবলীর আওতায় সমাজ তার উদ্বৃত্ত মূল্যের চিরবর্দ্ধনশীল অংশগুলো বিনিয়োগ করবে যা বিভাগ-২-এর বদলে বিভাগ-১-এর জন্যই নির্দিষ্ট করা থাকবে। এই দুই বিভাগই একই সামাজিক উৎপাদনের একমাত্র শাখা হিসেবে- ‘থোক পুঁজিপতিদের’ পরিপূরক উদ্যোক্তা হিসেবে, - প্রযুক্তিগত কারণে আপনি যদি এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে পুঁজি বা সঞ্চয়ের এমন প্রগতিশীল স্থানান্তর বা বদলী চান, তবে উদ্বৃত্ত মূল্যের একটি অংশ পুরোপুরি বা সামগ্রিক ভাবেই সুসাধ্য কাজ হিসেবে দেখা দেবে। বিশেষত: যেসব ক্ষেত্রে এটি পুঁজির প্রকৃত অনুশীলন হিসেবে দেখা দেয়। তবু এই অনুমান ততটা সময় পর্যন্তই করা সম্ভব যতটা সময় অবধি আমরা উদ্বৃত্ত মূল্যকে বিশুদ্ধভাবেই শুধুমাত্র দামের নিরিখে এবং মূলধনীকরণের জন্য বিবেচনা করি। মার্ক্সের বৃত্ত, অবশ্য, এটাই বুঝিয়ে থাকে যে উদ্বৃত্ত মূল্যের এই অংশটুকু একটি নির্দিষ্ট বস্তÍগত আঙ্গিকে দেখা দেয় যা এর মূলধনীকরণকে সুপারিশ করে থাকে। এভাবেই বিভাগ-২-এর উদ্বৃত্ত মূল্য টিঁকে থাকার উপায় হিসেবে থাকে এবং যেহেতু এই উদ্বৃত্ত মূল্য শুধুমাত্র বিভাগ-১ দ্বারাই ব্যবহৃত হতে পারে, বিভাগ-২ থেকে বিভাগ-১-এ উদ্বৃত্ত মূল্যের মূলধনীকৃত অংশটুকুর অভীষ্ট হস্তান্তরের সম্ভাবনা বাতিল করা হয়। দুটো কারণ আছে এই বাতিল করার। প্রথমত: বিভাগ-১-এর কাছে এই উদ্বৃত্ত মূল্যের বস্তগত আঙ্গিক একেবারেই মূল্যহীণ এবং দ্বিতীয়ত: এই দুই বিভাগের ভেতর বিনিময়ের সম্পর্কের কারণে বিভাগ-১-এর উৎপাদিত  পণ্যের সমতূল্য হস্তান্তর বিভাগ-২-এ ঘটাবার প্রয়োজন দেখা দেবে। এজন্যই মার্ক্সের বৃত্তের আওতায় বিভাগ-২-এর প্রেক্ষিতে বিভাগ-১-এর উৎপাদনের অধিকতর দ্রুত কোন প্রসারণ সম্ভব নয়।