ঢাকা, শুক্রবার ২৯, নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৫১:০৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
অস্ট্রেলিয়ায় কম বয়সীদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ৩ বিভাগে হতে পারে বৃষ্টি, ৪ সমুদ্রবন্দরে সতর্কতা সংকেত পর্যটক সংকট, সেন্ট মার্টিনে যাচ্ছে না জাহাজ তীব্র শীতে কাঁপছে উত্তরের জনপদ সাইফুল হত্যার প্রতিবাদ ও চিন্ময়ের মুক্তি দাবি হাসিনার দুই বছর পর ওয়ানডে দলে দিলারা আকতার সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেন প্রিয়াঙ্কা

লিবিয়ায় বন্যা:প্রাণহানি ছাড়াল ৫ হাজার, ত্রাণ পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫৬ এএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বুধবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে সোমবার আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে পূর্বাঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে দেশটির উপকূলীয় শহরগুলোর শতশত বাড়ি উড়ে গেছে। এছাড়া দুটি পুরোনো বাঁধ ভেঙে গিয়ে দারনা শহরে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। আর এই বন্যায় দারনা শহর পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঝড় ও বন্যায় এখন পর্যন্ত মারা গেছেন অন্তত ৫ হাজার ৩০০ মানুষ। নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক হাজার।

এদিকে, লিবিয়ার বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ওষুধ ও শুকনো খাবারসহ ত্রাণ সামগ্রী পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম হতাহতের খবর জানিয়েছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, পুরো দারনা শহরই ভেসে গেছে। বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরটির অ্যাম্বুলেন্স সোসাইটি জানিয়েছে, শুধুমাত্র দারনা শহরেই ২ হাজার ৩০০ লোক নিহত হয়েছেন।

দারনার এক উদ্ধারকারী জানিয়েছেন, সেখানকার হাসপাতালগুলোতে এখন আর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া মর্গগুলোও মৃতদেহে ভরে গেছে।

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের স্বঘোষিত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তারেক আল খারাজ জানিয়েছেন, ভয়াবহ এই বন্যার পানিতে ডুবে বা ভেসে গিয়ে এখন পর্যন্ত প্রাণহানি হয়েছে ৫ হাজার ২০০ লোকের। অবশ্য তার এই মন্তব্যের পর আরও ১০০ লোকের প্রাণহানির খবর এসেছে।

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, বন্যায় ১০ হাজার লোককে সমুদ্রের দিকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।

বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর লিবিয়ায় দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেন ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে সবকিছু। ধসে গেছে রাস্তা-ঘাট। পানির স্রোতে ভেসে গেছে অসংখ্য গাড়ি।

বাড়ি-ঘর ও রাস্তা-ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অঞ্চলটির বাসিন্দারা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যাও। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এ অবস্থায় অঞ্চলটির স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী ওসামা হামাদ বহু মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন।

সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে দেশটির বেনগাজি, সোসি, আল বায়দা, আল মারজ এবং দেরনা শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় বন্যার পানি সরে গেলেও উপকূলীয় শহর দেরনায় পানির স্তর বিপৎসীমার ১০ ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাঁধের পানির কারণে সৃষ্ট বন্যা হাজার হাজার মানুষকে সমুদ্রের দিকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। সেই বন্যাটিকে অনেকে সুনামির মতো আখ্যায়িত করেছেন। সমুদ্রের পানিতে যেসব মানুষ ভেসে গেছেন তাদের মরদেহ পানি থেকে উদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।

বিবিসি আরও জানিয়েছে, এই ভয়াবহ বিপদে যারা পড়েছেন তাদের যে উদ্ধার করা হবে সেই পরিস্থিতিও এখন লিবিয়ায় নেই। কারণ ২০১১ সালে সাবেক শাসক কর্নেল মোহাম্মদ গাদ্দাফিকে হত্যার পর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখে পড়ে দেশটি। আর তখন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশটিতে শুধুমাত্র যুদ্ধই চলেছে। ফলে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিলে- বিপর্যয় পরবর্তী বিষয়াবলী যে সামাল দেওয়া হবে এমন কোনো বাহিনী বা অবকাঠামোই তৈরি করা সম্ভব হয়নি।

এছাড়া গাদ্দাফির পতনের পর গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে যায় লিবিয়া। এর ফলে বর্তমানে দেশটি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। এখন পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল আলাদা আলাদাভাবে শাসিত হয়ে আসছে। আর বিভক্তির কারণে কেন্দ্রীয় ও সমন্বিত কোনো উদ্ধার অভিযানও সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় প্রাণহানির ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে চলছে অভিযান। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল কলেজ ও দোকানপাট। এছাড়াও দেশটির প্রধান চারটি বন্দর সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বন্যা কবলিত লিবিয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকে। দেশটির দুর্গত মানুষের জন্য বাংলাদেশও ওষুধ ও শুকনো খাবারসহ ত্রান সামগ্রী পাঠাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বাংলাদেশের সি-১৩০ এয়ারক্রাফট শিগগিরই ঢাকা থেকে যাত্রা করবে বলে জানা গেছে।