ঢাকা, শুক্রবার ২২, নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৮:২৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে, বাড়ছে শীতের তীব্রতা পেঁয়াজ-সবজি-মুরগির দাম কমলেও আলুর দাম বাড়তি রাজধানীতে মা-মেয়েকে এসিড নিক্ষেপ করে ছিনতাই মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে যা জানালেন উপদেষ্টা নাহিদ ঠাকুরগাঁওয়ের তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা

হাত-পা ছাড়াও সফল হেলেনা-জব্বার দম্পতি

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫৯ এএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

দুই হাত দুই পা- কিছুই নেই। এরপরও কারও কাছে হাত না পেতে করছেন ফার্মেসি ব্যবসা, দিচ্ছেন চিকিৎসাসেবা। স্ত্রীর কোলে চড়েই সারছেন সব কাজ। সেখানে চার হাত-পা হীন জব্বার পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করছেন, আর স্ত্রী হেলেনা বেগম দিন রাত্রি স্বামীর হাত-পা হয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান সময়ের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই দম্পতি।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের শিমুলবাজার। এই বাজারেই ফার্মেসি ব্যবসা পল্লী চিকিৎসক মো. জব্বার হাওলাদারের। দড়ি দিয়ে বাহুর সঙ্গে কলম বেঁধে ওষুধের নাম লিখেন, লিখেন রোগীর রোগের বিবরণও। চলাফেরা করেন স্ত্রী হেলেনা বেগমের কোলে চড়ে।

একসময়ে টিউশনি ও ফার্মেসির দোকানে কর্মচারীর চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন জব্বার হাওলাদার। তখন আর ১০টি মানুষের মতো স্বাভাবিক ছিল তার জীবন। পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন, সেখান থেকে ১৯৮৫ সালে প্রথম গ্যাং গ্রিন রোগ ধরা পড়ে। সেখান থেকে বাম পা, পরে ডান পা, এরপরে দুই হাতে গ্যাং গ্রিন ছড়িয়ে যায়। অসংখ্যবার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ১১ বার সার্জারির মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু কেটে বাদ দিতে হয় কনুইয়ের ওপর থেকে দুই হাত এবং কোমড়ের নিচ থেকে দুই পা।

এরপরে জীবনযুদ্ধে নামতে হয় তাকে। সুস্থ থাকা অবস্থায় পল্লী চিকিৎসকের (এমএলএফ) কোর্স সম্পন্ন করেছিলেন। আর যে ফার্মেসিতে কর্মচারি ছিলেন তার মালিক অসুস্থ হয়ে পড়লে ফার্মেসির লাইসেন্স তাকে দিয়ে দেন। এই ফার্মেসি লাইসেন্স আর নিজের এমএলএফ করা জ্ঞান নিয়ে বাড়ির অদূরে শিমুল বাজারে দেন ফার্মেসি। নাম রাখেন আলামিন ফার্মেসি।

প্রতিদিন সকাল ৮টায় স্ত্রীর সহায়তায় বাজারে আসেন থাকেন ১২টা পর্যন্ত। এরপরে আবার আসেন বিকেল ৪টায় থাকেন রাত ৮টা পর্যন্ত।

তিনি বলেন, ডাক্তার তো লিখতে বা বলতে পারেন না তারা। সামান্য চিকিৎসা সেবা দেন। ওষুধ বিক্রি করেন, তাই দিয়ে জীবিকা চলে যায়। স্ত্রীর ছাড়া আমি তো অচল। খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে সব কিছুই করে দেয় সে। বললেন সহনশীল ধৈর্যশীল এক নারী সে।

স্ত্রী হেলেনা বেগমও মেনে নিয়েছেন নিয়তি। স্বামী সন্তানদের নিয়ে আল্লাহ যেভাবে রাখছেন সেভাবেই থাকতে হবে। স্বামীর প্রাকৃতিক ডাক থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়া গোসল সব নিজ হাতে করান হাসিমুখেই।

এলাকাবাসী  জানিয়েছেন, তারা ভিক্ষা করে খাওয়ার কথা ছিল কিন্তু সেটা না করে তিনি কাজ করে খাচ্ছেন। জানালেন এখান থেকে উপজেলা সদর জেলা সদর বেশ দূরে। ব্যক্তিজীবনে জব্বার হাওলাদার ৩ মেয়ে ১ ছেলের বাবা। ২ মেয়েকে ইতোমধ্যে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে ক্লাস টেনে পড়ছে আর ছোট মেয়ে কেজি ওয়ানে।