ঢাকা, শনিবার ২৩, নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪:১৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
ডেঙ্গুতে এ বছরেই ৫১ শিশুর প্রাণহানি মাকে হত্যা করে থানায় হাজির ছেলে আমদানির সাড়ে তিনগুণ দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু ঢাকায় আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল সাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারের গণসংবর্ধনা

৪১ বছর পর পাকিস্থান থেকে ফিরল নিখোঁজ একলিমা

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:১৪ এএম, ১২ নভেম্বর ২০২২ শনিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

১৯৮১ সালে তিন সন্তান রেখে নিখোঁজ হন একলিমা বেগম। পরিবারের সদস্যরা সেসময় অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। অবশেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে সন্ধান পাওয়া সেই একলিমা ফিরেছে বাড়ি।

১০ নভেম্বর দুপুরে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের বাড়িতে পাকিস্তানি সন্তানকে নিয়ে ফেরেন একলিমা। সেখানে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।

এদিকে, একলিমার বাড়ি ফেরার খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজির হয় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। রাস্তার দু'পাশ দাঁড়িয়ে একলিমাকে শুভেচ্ছা জানান তারা। একলিমাকে পেয়ে খুশি এলাকার মানুষ ও পরিবারের সদস্যরা।

৬৫ বছর বয়সী একলিমা বেগম বলেন, কিভাবে তিনি পাকিস্তান পৌঁছালেন সেটি তার মনে নেই। তবে পরিবারকে ফিরে পেয়ে খুশি তিনি। একলিমা বেগম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের মেয়ে। পরিবারের সূত্রমতে, বাংলাদেশে থাকাকালে স্বামীর মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন একলিমা। এরপর একদিন সে অবস্থাতেই হারিয়ে যান। ফেসবুকের কল্যাণে দীর্ঘ ৪১ বছর পর গত পাঁচ মাস আগে পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালিতে খোঁজ মেলে তার। কীভাবে তিনি সেখানে পৌঁছালেন সেটি অবশ্য কেউই বলতে পারেননি।

যেভাবে মিলল সন্ধান: একলিমা এখন পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালিতে থাকেন। সেখানে রয়েছে তার আরেক পরিবার। দ্বিতীয় সংসারে তিনি আরও দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জননী। সেখানেই পরিবারের কাছে একলিমা মৃত্যুর আগে অন্তত একবার নিজ মাতৃভূমিতে আসার ইচ্ছা পোষণ করেন। পরিবারের সদস্যরা তার সেই ভিডিওবার্তা ধারণ করে ফেসবুকে যশোরের একটি গ্রুপে পোস্ট করেন। তাদের পোস্ট করা ভিডিওটি চোখে পড়ে একলিমা বেগমের বড় ভাই মৃত মকবুল শেখের ছেলে মো. জাকির শেখের।

ভিডিওতে একলিমার বলা নামগুলো নিজের দাদা-বাবা ও চাচাদের সাথে মিলে যাওয়ায় তিনি বিষয়টি নিয়ে বাড়িতে আলোচনা করেন। ভিডিও দেখিয়ে নিশ্চিত হন যে ভিডিওর একলিমা বেগমই তার হারিয়ে যাওয়া ফুফু। এরপর তারা পারিবারিকভাবেই ভিডিও কলে যোগাযোগ করেন একলিমার সঙ্গে।

একলিমা বেগমের ছোট ভাই ইব্রাহিম শেখ জানান, 'সেসময় আমাদের অনেক অভাব ছিল। বোনের স্বামী মারা গেলে সে যেন প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিল। পরে কীভাবে যে পাকিস্তানে চলে গেল, তা আমরা কেউই জানি না।

একলিমা বেগমের বড় ভাই মৃত মকবুল শেখের ছেলে জাকির শেখ বলেন, 'কিছুদিন আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ফুফু একলিমার খোঁজ পাই। তারপর থেকে তার সঙ্গে বাড়ির সবার নিয়মিত কথা হচ্ছিল। অবশেষে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান অ্যাম্বাসি সহযোগিতায় বাড়িতে ফেরানো সম্ভব হয়েছে।

জাকির শেখ জানান, 'ফুফুর সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি তিনি শুরুতে পাকিস্তানের একটি সেল্টার হোমে ছিলেন। সেখানে মুহাম্মদ সিদ্দিক নামে একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং পরে তারা বিয়ে করেন। মুহাম্মদ সিদ্দিক কয়েকবছর আগে মারা গিয়েছেন। সেখানে তাদের পরিবারে দুটি ছেলে এবং দুটি মেয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে একলিমা বেগমের প্রথম ঘরের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলে হেকমত আলী কাজ করেন ঢাকার একটি কারখানায়। দুই মেয়ে রমেছা বেগম ও নাছিমা বেগম। বড় মেয়ে রমেছা বেগম এখন পার্শ্ববর্তী হরিঢালী ইউনিয়নের শলুয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছেন। ছোট মেয়ে নাছিমা বেগমের শ্বশুরবাড়িও একই গ্রামে।