কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী আজ
ট্রেস জফি
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০২:০২ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০১৯ বুধবার
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়/ পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি...এমন সব কবিতা লিখে যিনি খুব অল্প বয়সে আলোড়ন তুলেছিলেন সেই কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী আজ ১৫ আগস্ট। বাংলা কাব্য, নাটক ও প্রবন্ধ সাহিত্যে অসাধারণ প্রতিভাধর এই কবি স্বল্প সময়ে লেখালেখি করেও বিপুল মেধার স্বাক্ষর রাখেন এবং খ্যাতিলাভ করেন।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য তার কবিতায় বলেছেন ‘সাবাশ বাংলাদেশ/ এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়/জ্বলে পুড়ে মরে ছাড়খার / তবু মাথা নোয়াবার নয়’। আরেক কবিতায় বলেন ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় / পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’। কাব্য সাহিত্যে এমনই ক্ষুরধার কবিতা আর প্রগতিধারার নাটক রচনা করে কবি সুকান্ত অমর হয়ে আছেন।
১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার (বর্তমানে জেলা) কোটালীপাড়ায় জন্মগ্রহন করেন। তার মাতার নাম সুনিতি দেবী এবং পিতা নিবারণ চন্দ্র ভট্টাচার্য।
ছোটবেলা থেকে সুকান্ত ভট্টাচার্য কলকাতায় বসবাস শুরু করেন। ১৯৪৫ সালে বেলেবিটা স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষ দিয়ে অকৃতকার্য হন। এ সময়ে তিনি বাম রাজনীতিতে যুক্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে কবির শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ছোটবেলায় মাকে হারান। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান কিশোর কবি এর ফলে বেছে নেন রাজনীতি ও লেখালেখির জীবন। তার বন্ধু কবি অরুণাচল বসুর মা সরলা বসু কবিকে পুত্রস্নেহে লালন-পালন করেন।
স্কুল জীবনে মাত্র নয় বছর বয়সে সুকান্তের প্রথম লেখা একটি গল্প হাতে লেখা পত্রিকা ‘সঞ্চয়’তে প্রকাশ পায়। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালে লিখেন নাটক ‘ধ্রুব’। এই নাটকে তিনি অভিনয় করেন। সেই থেকে কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ লেখা শুরু করেন। সাংবাদিকতায় অসাধারন মেধার পরিচয় রাখেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। ভারতীয় কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্যলাভ করেন ১৯৪৪ সালে। পরে দলটির মুখপত্র ‘দৈনিক স্বাধীন’ সম্পাদনা কাজে যোগ দেন। ১৯৪১ সালে যোগ দেন কলকাতা রেডিওতে। এবছরই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মারা গেলে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সুকান্ত একটি কবিতা লিখে পাঠ করেন রেডিওতে।
কবি সুকান্ত মাত্র সাত-আট বছর লেখালেখি করে অসাধারন প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। প্রগতিশীল মানসে দীক্ষিত এ কবি বাংলা সাহিত্যে মার্কসবাদী ভাবধারা ও বৃটিশ শোষণ বিরোধী এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লেখালেখি করেন। তিনি সাহিত্য চর্চ্চায় স্বল্প সময়ে নানা বিষয়ে লিখে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেন।
কবি সুকান্তের প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে, ছাড়পত্র, কবিতাসমগ্র, পূর্বাভাস, মিঠেকড়া, অভিযান, হরতাল, রাখাল, গীতিগুচ্ছ প্রভৃতি।
ম্যালেরিয়া ও শ্বাসরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি ক্লিনিকে ভর্তি হন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। এই হাসপাতালেই মাত্র ২১ বছর বয়সে কবি ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মারা যান।