ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬, নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৮:৪৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ফেসবুকে বন্ধ হয়ে যাবে ‘লাইক-সংস্কৃতি’

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৪৮ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শুক্রবার

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

ফেসবুক লাইক- এক গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক সোশাল মিডিয়ার এই যুগে যা আমাদের প্রতিদিনের জীবন-যাত্রাকে করছে দারুণভাবে প্রভাবিত। বিবাহ-বার্ষিকী, জন্মদিন, নতুন চাকরি কিংবা বিশেষ কোন লাইফ ইভেন্ট- সবকিছুতেই এর প্রভাব দৃশ্যমান। কখনও জন্ম দিচ্ছে ভালোবাসার- কখনও আবার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে হিংসে-বিদ্বেষ-দাঙ্গার।

ফেসবুক লাইকের প্রতি আসক্তি বা অন্য কথায় "লাইক-সংস্কৃতি"- সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে এটাকে সামাজিক ব্যাধি না সামাজিক প্রভাবক হিসেবে চিহ্নিত করবেন তা নির্ভর করছে আপনার ওপর। পর্যাপ্ত লাইক না পেয়ে শেষ কবে আপনি আপনার পোস্টটি "Only Me" করে দিয়েছিলেন- তা কি মনে পড়ছে?

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মূল উদ্দেশ্য কি এই ছিল? কথাগুলো ভাবাচ্ছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে! বিশ্বস্ত সূত্রমতে, ফেসবুক তাঁর ব্যবহারকারীদের মাত্রাতিরিক্ত লাইক-আসক্তি নিয়ে চিন্তিত যা কার্যতই এক সামাজিক ব্যধিতে রূপ নিচ্ছে।

সেই ভাবনা থেকে ফেসবুক নিতে পারে দারুণ একটি উদ্যোগ যা বদলে দিতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সব হিসেব-নিকেশ! খুব শীঘ্রই পরীক্ষামূলকভাবে ফেসবুক পোস্টের মোট লাইকের সংখ্যা হয়তো আর দেখা যাবে না- শুধু মূল পোস্টকারী তার পোস্টে কি পরিমাণ লাইক জমা হয়েছে তা দেখতে পারবেন। তবে তড়িঘড়ি করে নয়, ধীরে ধীরে পরীক্ষামূলকভাবে ফেসবুক এটা বাস্তবায়ন করে দেখতে পারে।

ফেসবুকের আরেক সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইনস্টাগ্রাম বেশ কিছু দেশে অনুরূপ একটি ফিচার পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে। টেস্টিং পর্যায়ে থাকা ওই কার্যক্রমের মাধ্যমে ইনস্টাগ্রামের ব্যবহারকারীরা পোস্টে টোটাল রিয়েকশন এর সংখ্যা দেখতে পারছেন না- দেখতে পারছেন শুধু মূল পোস্টকারী! ব্রাজিলসহ বেশ কিছু দেশে চলা এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের আওতায় ব্যবহারকারীরা নিজস্ব ফিডের ওপরে একটি মেসেজ দেখতে পাচ্ছেন যেখানে ইনস্টাগ্রাম বলছে-

"We want your friends to focus on the photos and videos you share, not how many likes they get. (আমরা চাই আপনার বন্ধুরা আপনার দেয়া ছবি বা ভিডিওতেই মনোযোগ দিক, সেগুলোতে কত লাইক পড়েছে সেগুলোতে যেন তাদের মনোযোগ না যায়) "

যদিও ইনস্টাগ্রামের মতো নিজেদের নিউজফিডেও এমন পরিবর্তনের ব্যাপারে ফেসবুক কোনও অফিশিয়াল সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। তবে বেশকিছু সূত্রে জানা গেছে, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম দুটো প্রতিষ্ঠানই সামাজিক যোগাযোগে অতিবাহিত সময়কে আরও অর্থবহ করতে চায় তাঁদের ব্যবহারকারীদের জন্য। এক্ষেত্রে শুধু 'লাইক' বিবেচনা করে তাদেরকে এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় ফেলতে চায় না।

তবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, এখনো পুরোপুরিভাবে পরীক্ষামূলক ধাপে থাকা এই পদক্ষেপ ফেসবুক নিতে কতটা সাহস দেখাবে তাও ভাবনার বিষয়। কেননা, এতে করে হঠাৎ করেই মূল ব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশ ফেসবুক বিমুখ হয়ে যেতে পারে। আর সরে যেতে পারে অন্য কোনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে!

আর একইসঙ্গে ফেসবুক পেজগুলোর জন্য এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক পোস্টগুলোর জন্য এই ফিচার চালু হবে কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়। কেননা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটা বড় অংশ "লাইক-সংস্কৃতির" ওপর চলছে আর ফেসবুকে বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণে এখনও তারা লাইক-কাউন্ট এর উপর গুরুত্ব দিচ্ছে।

সময়ই বলে দিবে ফেসবুক কী পারবে সমাজকে এই আসক্তি থেকে মুক্তি দিতে, নাকি অন্যদের মতোই জোয়ারে গা ভাসাবে!

-জেডসি