ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৬:১৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ঢাকা সিটির ভোট নিয়ে যা বললেন মেয়র প্রাথীরা

জাবেদ চৌধুরী

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০৯ পিএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট যুদ্ধ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল আটটা থেকে রাজধানী ঢাকার দুই সিটির পরবর্তী ‘অভিভাবক’ বেছে নিতে ভোট দেওয়া শুরু করেছেন ভোটাররা। সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত।

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে মেয়র প্রাথীরা যা বললেন-

ঢাকা দক্ষিণের নৌকার মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস:

বিপুল ভোটে নৌকার জয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। বিপুল ভোটে বিজয়ী হব। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ঢাকাবাসী উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিবেন। আমরা সুনির্দিষ্ট উন্নয়নের রূপরেখা দিয়েছি। আমরা জিতলে সেভাবেই কাজ করব।

ইভিএমে ভোট প্রদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই প্রথম আমি ইভিএমে ভোট দিলাম। খুব সহজে ভোট দিতে পারলাম। আমি নিশ্চিত ইভিএমে আমার ভোটটি সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়েছে। আমি নিজেকে ও দুইজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি।

বিএনপি প্রার্থীর এজেন্ট না দিতে পারা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ মনোনীত এ মেয়র প্রার্থী বলেন, তাদের সাংগঠনিক ক্ষমতা না থাকলে আমরা কি করব।

এর আগে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা ৪০ মিনিটে দক্ষিণের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ধানমন্ডি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনি এবং তার সহধর্মী ভোট প্রয়োগ করেন।

ঢাকা দক্ষিণের ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন:

ভোটগ্রহণ ঠিকভাবে হলে বিজয় নিশ্চিত। ইনশা আল্লাহ! এমন মন্তব্য করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন,  আমাকে যদি হামলার শিকার হতে হয়, আহত হতে হয় তবুও আমি হব, কিন্তু ভোট কেন্দ্র দখল মুক্ত করার ভোটারদেরকে নিরাপদভাবে ভোট দেয়ার যা যা করণীয় দরকার আমি তাই করবো।এখানে আমি কোন ধরনের ছাড় দেবো না। আমি অনেকগুলো জরিপে দেখেছি এবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয় প্রায় ৮০-৯০ ভাগ নিশ্চিত।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লাগের এক সিনিয়র নেতা বলেছেন, ভোট কেন্দ্র দখল ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে। ওনাদের আরও সংহত হওয়া উচিত ভাষা ব্যবহারে। এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য সংঘাত বাড়াতে পারে।সকাল থেকে আমরা কিছুটা অভিযোগ পাচ্ছি, বিভিন্ন কেন্দ্রে আমাদের পোলিং এজেন্টের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না, এটার ব্যবস্থা আমরা অবশ্যই নিবো। আমরা এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ দেবো। আমি এখন সকল প্রত্যেকটি কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরবো।

ইভিএম প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ইশরাক বলেন, আমি আমার ভোট প্রয়োগ করতে পেরেছি। কিন্তু প্রান্তিক জনপদে যারা আছে তারা এ বিষয়ে এখনো ঠিকভাবে জানেন না। কিভাবে ভোট দিতে হয়, আমি শেখার জন্য এ নিয়ে তিনবার নির্বাচন কমিশনে গিয়েছি। আমি যদি জয়লাভ করি, এরপর আমি আমার যে অভিযোগগুলো ছিলো তা বহাল থাকবে। ইভিএমে প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে কার ছবি করতে পারে।

ইশরাক হোসেন বলেন, আমার জীবনের প্রথম ভোট দিলাম আজ, এর আগে আমি কখনও ভোট দেই নাই এটাই আমার জীবনের প্রথম ভোট।

আজ সকাল নয়টায় মানিকনগর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন (বিশ্বরোড) শহীদ শাহজাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেয়া শেষে তিনি এই কথা বলেন ইশরাক হোসেন।

ঢাকা উত্তরের নৌকার মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম:

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেছেন, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। নির্বাচনে হারজিত থাকবে। ফলফল যাই হোক আমার প্রতিপক্ষ যদি বিজয়ী হন, আমার অভিজ্ঞতা তার সঙ্গে শেয়ার করব। আর আমি যদি বিজয়ী হই, আমার প্রতিপক্ষের ইশতেহার থেকে অভিজ্ঞতা নেব। আমরা সবাই মিলে সবার ঢাকা গড়ব। বিপক্ষ প্রার্থী জিতলেও সহযোগিতা করব।

উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে আতিক আরো বলেন, আমি বিজিএমইএর সভাপতি ছিলাম। অনেকবার তাতে নির্বাচন করেছি। নির্বাচনে জয়-পরাজয় রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের পর বিজয়ী যেই হোক না কেন, সবাই মিলে মিশে কাজ করতে হবে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ৮টায় উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের নওয়াব হাবিবুল্লাহ স্কুলে ভোট দেয়ার পর তিনি ‍এ কথা বলেন। আতিকের সঙ্গে তার স্ত্রী শায়লা সাগুফতা ইসলাম ও মেয়ে বুশরা আফরিনও ভোট দেন।

ঢাকা উত্তরের ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল:
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল কেন্দ্রে এজেন্ট ঢুকতে না দেয়ার অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং সরকারি মহলের সর্বশেষ কি উদ্দেশ্যে, তা আমরা আগে থেকেই জানতাম। তাদের অসৎ উদ্দেশ্যে ঠেকানোর জন্য আমরা অপেক্ষায় আছি, ভোটারদের ভোট প্রদানের মাধ্যেমে। যদি কোনো মনোভাব বদলায় নির্বাচন কমিশনের। আমরা হাল ছাড়ছি না, মনোবল ভাঙছি না। আমাদের মনোবল এখনও শক্ত আছে।

তাবিথ আউয়াল বলেন, অনেক জায়গায় শুরুতেই এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। আমি নিজে এখন যাবো কেন্দ্রে কেন্দ্রে পরিস্থিত বোঝার জন্য। আমরা বুঝতে পারছি, আমাদের বিপক্ষ দল এত ভয় পেয়েছে, যে কারণে উনারা ভয় ভীতি, হামলা ও পোলিং এজেন্টদের বাধা দেয়ার পদক্ষেপ সকাল থেকেই নিয়েছে। তবে আমাদের শক্তি জনগণ। এই জনগণের শক্তি নিয়ে আমরা সারা দিন মোবাবিলা করব।

আপনাদের এই অভিযোগগুলো নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই প্রার্থী বলেন, নির্বাচন কমিশনকে ইতোমধ্যে এসব অভিযোগ জানানো হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। যখন যে তথ্য আমরা পাচ্ছি তা জানিয়ে দিচ্ছি। প্রতিটি এলাকায় নির্বাচন কমিশনের ম্যাজিস্ট্রেটও থাকার কথা কিন্তু আমি এই কেন্দ্রে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট খুঁজে পাইনি। ভেতরে একটি মেশিন ব্রেক ডাউন হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে মনে হচ্ছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে আমরা হয়তো যাচ্ছি না। তবুও ভোটারদের আহ্বান জানাচ্ছি উনারা যেন ভোট কেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তারা যদি ভোট দিতে পারেন তাহলে আমরা ভোটের মাধ্যেমেই জয়লাভ করব।

শনিবার (০১ পেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর গুলশানের মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার পর সাংবাদিকদের তাবিথ আউয়াল এসব কথা বলেন।

ঢাকার দুই সিটিতে মোট ভোটার ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৮ জন ও নারী ভোটার ২৬ লাখ ২০ হাজার ৪৫৯ জন। সিটি করপোরেশনের হিসাবে ঢাকা উত্তর সিটিতে মোট ভোটার রয়েছে ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ জন ও নারী ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন।

অন্যদিকে দক্ষিণ সিটিতে ভোটার সংখ্যা ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ জন ও নারী ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন।

-জেডসি