কবিতা # করোনাসুন্দরী
আইরীন নিয়াজী মান্না
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৪:০৮ এএম, ২৪ মে ২০২০ রবিবার
কবিতা # করোনাসুন্দরী : আইরীন নিয়াজী মান্না
এই নগরে এখনো পাখি ডাকে,
ফুল ফোটে। বাতাসেরা গেয়ে যায় মুক্তির গান।
নির্জন ফুটপাতে পড়ে থাকে লাশ। এখানে মধ্য দুপুরে
নেমে আসে রাতের নির্জনতা।
ছায়াভূত ছুটে বেড়ায় নগরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে!
অদৃশ্য শত্রুর ভয়ে এলোমেলো
হয়ে যায় জীবনের গল্প!
পিচঢালা কালো পথ পড়ে থাকে একা।
চাকার শব্দে বিষন্নতা; একাকিত্বের বেদনা।
নি:সঙ্গতা মিশে থাকে নগরের শরীরে।
এই নগরের বাড়িগুলো যেন এক একটি বন্দিশিবির।
বাতাসে ঘুরে বেড়ায় মৃত্যুর বারতা। গ্রীলের ফাকে দেখা
যায় আতঙ্কিত বৃদ্ধার ঘোলা চোখ।
করোনাসুন্দরী কুঁড়ে কুঁড়ে খায় যুবকের হৃদপিন্ড।
এই নগরে এখনো পাখি ডাকে, ফুল ফোটে।
অভিমানী রোদ গলি দিয়ে চলে যায়।
ফুটপাতে কেঁদে ওঠে ক্ষুধার্ত শিশু, খাবারের পাত
শূন্য পড়ে থাকে।
মৃত্যুরা কিলবিল করে বস্তির খুঁপড়িঘরে।
অচেনা শত্রুর ভয়ে দূর আকাশে কি যেন
খুঁজে ফেরে বৃদ্ধ বাবা।
এই নগরে হঠাৎ হানা দেয় মৃত্যুদূত। কাঁন্নার রোল পড়ে
থেকে থেকে।
আপনজনের পাশে দাঁড়াতে পারে না সদ্য বিধবা। ভ্যানের
তক্তকাঠের ওপর পরে থাকে নিথর দেহ।
এলোমেলো হয়ে যায় বর্ণমালা।
কষ্টরা দানা বাঁধে কিশোরীর বুকে।
এই নগরে তবুও পাখি ডাকে; ফুল ফোটে। গান গেয়ে
চলে যায় দোয়েলের ঝাঁক।
এই নগরে করোনাসুন্দরী কুঁড়ে কুঁড়ে খায় যুবকের হৃদপিন্ড।