ঈদে গরম রাজধানীর মসলা বাজার
মাজেদুল হক তানভীর
প্রকাশিত : ০৮:২৩ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রবিবার
ঈদ আসতে আর মাত্র ৪ দিন বাকি থাকায় রাজধানীর মসলা বাজারে নারী ক্রেতার সমাগম চোখে পরেছে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় বছরের এ সময়ে মসলার চাহিদা বেশি থাকে। আর তাই চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মসলার দাম। আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মসলার দাম খুব একটা না কমলেও, ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজার রয়েছে স্বাভাবিক।
তবে, মাসের ব্যবধানে কালোজিরার দাম বেড়েছে প্রায় আড়াইগুন। ক্রেতারা এর জন্য সিন্ডিকেটকে দুষলেও বিক্রেতাদের দাবি, অতিরিক্ত শুল্ক আর চোরাই পথে মসলার আমদানি, বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বাজারে। রসনা তৃপ্তিতে মসলা তো লাগবেই। জীভের স্বাদে মসলার বিকল্প নেই। মসলা ছাড়া প্রতিদিনের রান্না অসম্ভব। উৎসব এলেই বাড়ে মসলার চাহিদা। বাড়ে দামও। তবে কোরবানির ঈদ ঘিরে এবারের বাজারের চিত্র যেন ভিন্ন। আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে মিল রেখে সমলার দাম না কমলেও বিরূপ প্রভাব নেই দেশীয় বাজারে। ব্যবসায়ীদের দাবি স্বাভাবিকই আছে মসলার বাজার।
রাজধানীর পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কালোজিরার। তবে জিরা ও এলাচসহ অন্য প্রয়োজনীয় মসলার দাম কিছুটা কমেছে। তবে পাইকারি বাজারে স্বাভাবিক থাকলেও, খুচরায় পার্থক্যটা বেশিই। ইতিমধ্যেই বৃদ্ধি পেয়েছে কালিজিরা, জিরা, রাঁধুনী হজ, পেছতা বাদাম ও গুল মরিচের দাম। কিছুদিন পূর্বে জিরার মূল্য ছিলো প্রতি কেজি ৩’শ ১৫ টাকা, যা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৪’শ ১০ টাকা দরে। রাঁধুনী হজ প্রতি কেজি মূল্য ছিল ছিলো ১’শ ৬০ টাকা, যা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২’শ ২০ টাকা। পেছতা বাদাম প্রতি কেজি ছিলো ১৯’শ টাকা, যা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২২’শ টাকা ও গুল মরিচ প্রতি কেজি ছিলো ১৪’শ টাকা যা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৬’শ টাকা। তবে মসলার বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে সয়াবিন তেল, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, বাদাম, তেচপাতা, সাদা গুল মরিচ, সরিষা, মেথি, কাঠ বাদাম, আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম। বিভিন্ন কোম্পানী ভেদে বোতল জাত সয়াবিন তেল লিটার প্রতি ৮৫-৯৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল কেজি প্রতি ৭৫-৭৮ টাকা, দারুচিনি প্রতি কেজি ৩’শ থেকে ৩’শ ৫০ টাকা, লবঙ্গ প্রতি কেজি ১২’শ থেকে ১৪’শ টাকা, এলাচ প্রতি কেজি ১২’শ থেকে ১৪’শ টাকা, বাদাম প্রতি কেজি ১’শ থেকে ১’শ ২০ টাকা, তেচপাতা প্রতি কেজি ১’শ ৮০ থেকে ২’শ টাকা, সাদা গুল মরিচ প্রতি কেজি ২ হাজার থেকে ২২’শ টাকা, সরিষা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১’শ টাকা পর্যন্ত, মেথি প্রতি কেজি ১’শ ৮০ থেকে ২’শ টাকা, কাঠ বাদাম প্রতি কেজি ১২’শ থেকে ১৪’শ টাকা, আদা প্রতি কেজি ৯০থেকে ১’শ ২০ টাকা, রসুন প্রতি কেজি ৭০ থেকে ১’শ ১০ টাকা ও দেশী পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা , গোটা শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ১শ’৯০, মরিচের গুঁড়া প্রতি কেজি ২শ’ হলুদের গুঁড়া প্রতি কেজি ২শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মাদপুর কৃষি মার্কেটে নওশীন আক্তার নামে একজন ক্রেতা উইমেননিউজকে বলেন, দাম কিছুটা কমলেও এখনো হিমশিম খেতে হচ্ছে। এজন্য সিন্ডিকেটকেই দুষছেন তিনি। তবে এমন অভিযোগ মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। বলছেন, চোরাই পথে মসলা আমদানির কারণে সরকারের পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তারাও। এর পাশাপাশি, মসলা আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক হার তো আছেই। সরকার শুল্ক হার কমানোর পাশাপাশি, মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করলে কেবল উৎসবে নয়, সবসময়ই স্বাভাবিক থাকবে মসলার বাজার। এমন অভিমত ব্যবসায়ীদের।