বন্যা: তিস্তা ব্যারাজে রেড অ্যালার্ট, খোঁজ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:০১ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২০ সোমবার
ছবি: সংগৃহীত
অবিরাম বর্ষণ এবং উজানের পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। উত্তরে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এছাড়া তিস্তা তীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। এতে করে তিস্তা পাড়ের লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ব্যারাজ রক্ষার্থে যেকোনো মুহূর্তে ফ্লাট বাইপাস কেটে দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন উঠেছে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সার্বক্ষণিক মনিটরিং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সারাদেশের সকল কর্মকর্তাদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রবিবার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের এগারোটি অঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, নাটোর, সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং নেত্রকোনা জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, রবিবার রাত ৯টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫৩ দশমিক ১৫ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ মি.) বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপরে।
গত তিন দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে হাতীবান্ধা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রবিবার বিকেল থেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার হাটখোলা-বড়খাতা পাকা সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামিউল আমিন বলেন, আমি নিজে এখনো সরেজমিনে থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করছি পানিবন্দি পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নেওয়ার এবং নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর জন্য।
তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর তাই রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
রবিবার পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেছেন, দেশের বন্যা পরিস্থিতি আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি এবং আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে। বন্যার যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সারাদেশের সকল কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। এছাড়া বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোজ খবর নিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা বন্যা কবলিত ও নদী ভাঙ্গন এলাকা নির্ধারণ করে স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক। আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। দেশের করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বাধ উন্নয়ন কাজে জড়িত শ্রমিকদের সামাজিক দূরত্ব ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা বিবেচনায় ঠিকাদারদের পাশাপাশি আমরাও হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক দিয়েছি।
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিটি মুহূর্তে খোঁজ রাখছি এবং জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত সামগ্রী রয়েছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ছাড়াও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পুলিশ প্রশাসন সবাই সম্মিলিত হয়ে এ দুর্যোগে কাজ করে যাচ্ছি।
-জেডসি