ঢাকা, শনিবার ২৩, নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৫০:০০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ইয়াসমিন হত্যা: প্রতিবাদী পুরুষ সময়ে বদলে গেল!

ফারহানা মিলি

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:৩৯ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২০ সোমবার

ফারহানা মিলি

ফারহানা মিলি

ইয়াসমিন আক্তার। ভ্যানের উপরে পড়ে থাকা তার নিথর দেহের ছবিটি একসময় নারীনিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। ছবিতে মেয়েটির গড়ন দেখে মনে হয়, বয়স চৌদ্দর বেশি ছিল না। হয়তো আরও খানিক বেশি হতে পারে। দরিদ্র পরিবারে জন্ম আর বেড়ে ওঠায় এবং শৈশব থেকেই অন্যের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতে হচ্ছিল বলে পেটপুরে কি খেতে পারত মেয়েটি? বিশেষ করে হাড়ভাঙা পরিশ্রমের তুলনায়? তাই শরীরে পরিবর্তনের সময়টাতেও ওর স্বাভাবিক বিকাশ না-হবারই কথা।

ওই হালকা-পাতলা শরীরের কিশোরীটিকেও রেহাই দেয়নি কিছু নরকের কীট। ধর্ষণের শিকার হয়ে করুণ মৃত্যু হয়েছিল মেয়েটির। আর সেই ধর্ষণের কাজটি করেছে তারাই যাদের হবার কথা ছিল রক্ষক। নাগরিকের জানমালের হেফাজতের মহান দায়িত্বের বোঝা কাঁধে নিয়ে যাদের পেশাজীবনের শুরু সেই পুলিশ বাহিনীর তিন সদস্য ছিল ইয়াসমিনের ধর্ষক।

ঘটনাটি ১৯৯৫ সালের। এমনই এক ২৪ আগস্টের। দিনাজপুর জেলার দশমাইল মোড় নামের একটি এলাকায় সংঘটিত এই নারকীয় ঘটনার দুদিন পর বিক্ষুব্ধ শোকার্ত দিনাজপুরবাসী পথে নেমে এসেছিলেন। উত্তাল জনস্রোত সামলাতে না পেরে বেপরোয়া হয়ে পুলিশের চালানো গুলিতে ৭ জন মারা যান। আহত হন শতাধিক। দিনাজপুরবাসীর এই প্রবল বিক্ষোভের আগুনে তপ্ত হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। ফলে পিছু হঠেছিল তৎকালীন প্রশাসন।

সেই থেকেই ইয়াসমিন একটি বিক্ষোভের শিখা। পরবর্তীতে ২৪ আগস্টকে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন শুরু হয়। এই দিনে ইয়াসমিনকে স্মরণ করে নারী ও কন্যাশিশুর ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতার কাজটি করা যায়।

ইয়াসমিন হত্যার ঘটনাটির পুরো প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে  আমার মধ্যে বিশেষ একটি অনুভুতি কাজ করে। বাংলাদেশের সমাজ মূলত পিতৃতান্ত্রিক। সামন্তীয় পশ্চাদপদ ধ্যানধারণা এখানে প্রতি পদে নারীকে পিছিয়ে দেয়, তার অধিকার লঙ্ঘন করে, তার ন্যায়বিচার প্রাপ্তির বিপক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু ১৯৯৫ সালের ২৭ আগস্ট দিনাজপুরের এক তুচ্ছ দরিদ্র কিশোরীর মৃতদেহ শত শত মানুষকে বিহ্বল করেছিল। উল্টে নিজেদের প্রাণ তুচ্ছ করে ওরা প্রতিবাদ গড়ে তুলেছিলেন।

পঁচিশ বছর আগে বাংলাদেশে এমন ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা ভেবে এ যুগের তরুণীরা বিস্মিত হতে পারেন। বিশেষত এখন তো প্রায়ই ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুর বিরুদ্ধেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে নানা প্রোপাগাণ্ডা। ধর্ষণের জন্য দায়ী করা হয় ধর্ষিতার পোশাককে, তার এটিচ্যুডকে, তার গতিবিধিকে। সাধারণ পোশাকের সাধারণ নারীও ধর্ষণের শিকার হলে বিবেচিত হন ‘প্রোভোকেটিভ’ হিসেবে।

ইয়াসমিন হত্যার ঘটনাটির পুরো বৃত্তান্ত তুলে ধরলে কিছু বিষয় উঠে আসে। সে ছিল দিনাজপুর শহরের এক দরিদ্র মায়ের মেয়ে। কিশোরীটিকে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার এক বাসায় পাঠানো হয় গৃহকর্মী হিসেবে। ২৪ আগস্টের আগের ঘটনা তেমন জানা যায়নি। টুকরো টুকরো তথ্য জোড়া দিয়ে যা এসেছে তা হল, ইয়াসমিন ২৪ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে ছেড়ে যাওয়া একটি নৈশকোচে উঠে বসে। সম্ভবত যে বাড়িতে সে কাজ করত, সে বাড়ির লোকদের অজান্তেই।

বাসের ড্রাইভার, হেলপার ও যাত্রীদের কেউ পুরো সময়টায় মেয়েটির প্রতি নির্দয় হয়ে ওঠেননি। বরং কাকভোরে দিনাজপুরের দশমাইল মোড় এলাকায় পৌঁছানোর পর মেয়েটিকে যত্নের সঙ্গে বাস থেকে নামিয়ে দেন হেলপার। ইতোমধ্যে তিনি জেনেছেন, মেয়েটি ভুল বাসে উঠেছে। তবে দশমাইল মোড় থেকে দিনাজপুরগামী যেকোনো বাসে ওকে উঠিয়ে দিলে ও বাড়ি চলে যেতে পারবে।  

সেই ভোরে নামাজ পড়তে বেরিয়ে আসা এলাকার মুসল্লীরারও মেয়েটিকে দেখলেন। বাস স্টপেজ হওয়ায় আশেপাশে গড়ে ওঠা চা স্টলের দোকানদারদের কাছে মেয়েটি ছিল নিরাপদ। বাসের যাত্রীদের কেউ কেউ এবং বাস ড্রাইভার ও হেলপার ওর বাড়ির ঠিকানা বলে দিয়ে সবার সহযোগিতা চাইলেন। তারাও রাজি হলেন। নামাজ শেষ করে মুসল্লীরা মেয়েটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করলেন তাদের। বাসটি চলে গেল।

এরই মধ্যে পাশ দিয়ে চলমান একটি পুলিশ ভ্যানের তিন পুলিশ সদস্য ছোটখাটো জটলা দেখে নেমে এলেন। তারা রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে এলেন যেন! কিশোরীটিকে বাড়ি পৌঁছে দেবার কথা বলে এলাকাবাসীকে বিভ্রান্ত করে তাকে গাড়িতে তুলে নিলেন।

পাঠক, দেখুন, পুলিশদের আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত ইয়াসমিন প্রত্যেক জায়গাতেই পুরুষদের স্নেহশীল সহযোগিতা পেয়েছে। ফলে এতদূর সে আসতে পেরেছে নিরাপদেই। সেদিন উপস্থিত মুসল্লীদের কারও কারও মনে পুলিশের আচরণে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছিল বলেও তারা পরে মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু  পুলিশ সদস্যরা মেয়েটিকে নিয়ে যেতে চাইলে তাদের হাতে না ছেড়ে উপায় ছিল না।

সেই সকালে ইয়াসমিনকে বহন করা বাসের যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছেছিলেন। দশমাইল মোড় এলাকার মুসল্লীরাও নামাজ শেষে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু ইয়াসমিন নামের কিশোরীটি আর ফিরে যায়নি তার দরিদ্র মায়ের কোলে। এদেশের আরও অগুণতি নারী-শিশুর মতো লালসার শিকার হয়ে ইয়াসমিন ঝরে গেল অকালে।

পরে জানা গিয়েছিল, পুলিশ ভ্যানে ওঠার পরই নরপিশাচদের লালসার শিকার হয় মেয়েটি। ফলে সে বাঁচার জন্য সাহস করে ঝাঁপও দেয়। কিন্তু রাস্তায় পড়ে থাকা আহত ইয়াসমিনকে ওরা আবারও পিকআপে তুলে নেয়। তার কয়েক ঘণ্টা পর পথের পাশে ওর মৃতদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয়দের জবানবন্দি অনুযায়ী, একটি পুলিশ ভ্যান চলমান অবস্থায় সেখানে ‘কিছু একটা’ ফেলে দিয়ে যায়।

ঘটনাটি প্রচার পেলে সেদিন সকাল থেকেই দশমাইল মোড় এলাকায় নানা সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যসহ রাজনৈতিক নেতাদের অনেকে মিছিল, প্রতিবাদ, রাস্তা অবরোধ ইত্যাদি শুরু করেন। একটি মিছিল দিনাজপুর শহরে চলে গেলে শহরের মানুষদের মধ্যেও ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ে।

ওদিকে দিনাজপুরের পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি সামাল দেওয়ার জন্য নিজেদের উদ্যোগে মামলা করে। লাশের তড়িঘড়ি ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমানে মফিদুলের মাধ্যমে দাফনও করে ফেলা হয়।

কিন্তু ২৫ ও ২৬ আগস্ট দিনাজপুর শহরে থমথমে অবস্থা চলছিল। খণ্ড খণ্ড মিছিল-মিটিং চলে। ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় শহরে ইয়াসমিনের গায়েবি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশের একটি অংশ রাত দশটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানায় গেলে পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

তবে চূড়ান্ত ঘটনাটি ঘটে পরদিন, ২৭ আগস্ট। এদিন সকাল এগারোটার দিকে ঘটনার প্রতিবাদ ও ন্যায্যবিচারের দাবিতে শহরে একটি বিশাল মিছিল বের হয়। মিছিল চলাকালে পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ চলে দফায় দফায়। এক পর্যায়ে জনতার উপর পুলিশের গুলিবর্ষণে সাতজন মারা যান।

নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের বিচার দাবিতে আন্দোলন করে আহত ও নিহতসহ সাধারণ সব মানুষের সাহসী সংবেদনশীল ভূমিকা স্মরণ করার মতো। আবার বিপক্ষে সক্রিয় গোষ্ঠীগুলোর ভূমিকাও ছিল ন্যাক্কারজনক। পুলিশ বাহিনী ও নিজেদের এলাকা, দুটিরই ভাবমূর্তি রক্ষার নামে স্থানীয় প্রশাসন ইয়াসমিন হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করে। স্থানীয় রাজনীতিবিদদের একাংশও সেদিন ঘটনা ধামাচাপা দিতে সক্রিয় ছিলেন।

এত কিছুর পরও শেষরক্ষা হয়নি, কারণ ততক্ষণে সারাদেশে আগুনটি ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করে প্রশাসন। ১৯৯৫ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৬ (৪) ধারায় অভিযুক্ত এসআই মইনুল হক, কনস্টেবল আবদুস সাত্তার ও ড্রাইভার অমৃতলাল বর্মণের বিরুদ্ধে ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার চার্জ গঠন করা হয়।

এদের মধ্যে দুজন, এসআই মইনুল ও আবদুস সাত্তারকে ১৯৯৭ সালে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট প্রকাশিত আলোচিত এ মামলার রায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। অন্য অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য, পিকআপ ভ্যানের চালক অমৃত লাল মামলার রায় প্রকাশের আরও কয়েক বছর পর গ্রেপ্তার হয়।

অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে দোষী পুলিশ সদস্যদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটনাটি এদিক থেকেও ব্যতিক্রম যে, পুলিশ সদস্যরা এ-ধরনের একটি গুরুতর অপরাধের জন্য ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত হলেন।

ইয়াসমিন হত্যার ঘটনায় পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো, দায়িত্বহীনতা ও পুলিশের গুলিতে সাধারণ মানুষের হত্যার জন্য অন্য কয়েকটি মামলাও রুজু করা হয়েছিল। তাতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ছিলেন অভিযুক্ত।

বদলে যাওয়া সময় ও কিছু প্রশ্ন:
সেই নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার প্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত প্রতিবাদ ও প্রাণবিসর্জনের ঘটনার সঙ্গে কি বর্তমান বাস্তবতা মেলানো যায়?

ধর্ষণের মতো একটি গুরুতর ইস্যুতেও-যেখানে প্রায়ই নারী ও শিশুর বিপুল দৈহিক ও মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা এবং সামাজিক ক্ষতি হয়ে থাকে, তার বিচার চাইতে যাওয়াও যেন এখন অন্যায়। কখনও কখনও এই ইস্যুতে নারী ও পুরুষ, অথবা নারীবাদী আর পুরুষতান্ত্রিক পক্ষ দুটি যেন দু’মেরুর বাসিন্দা হয়ে ওঠেন। তাহলে কি এখনকার সময়ে এদেশের বিপুলসংখ্যক পুরুষ ধর্ষক-মনোবৃত্তি লালন করেন মনের গভীরে?

বিষয়টি এত সরল নয় আসলে। নব্বই দশকের প্রেক্ষাপট আর এখনকার সমাজ ব্যবস্থায় পার্থ্যকটা গুণগত। আর সেটাই বদলে দিয়েছে বাস্তবতা।

আমাদের স্বাধীনতার জন্য সুদীর্ঘ আড়াই দশকের আন্দোলনের পর একটি মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় এলে, সমাজ বির্মাণের একটা তাগিদ ছিল। কারণ আমাদের স্বাধিকার চেতনার সঙ্গে এটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। আধুনিক, মুক্ত, বৈশ্বিক মানবতাবাদের প্রেরণায় জাতিগঠনের ভাবনা থেকেই মূলত আমাদের আলাদা জাতিরাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হওয়া।

সেই নবীন রাষ্ট্রে তাই নারী বিষয়ে গতানুগতিক ধারণার শেকড় উপড়ে ফেলার চেষ্টা ছিল। নানা রকম আইনি ব্যবস্থা, আর্থিক প্রণোদনা, শিক্ষার সুযোগ উন্মুক্তকরণসহ সামাজিক চেতনার বিনির্মাণের জন্যও কাজ চলছিল। নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতা অর্জনের জন্য যেগুলো ছিল খুবই দরকারি। নানা ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও নারী সংগঠনসহ এনজিওগুলোর কার্যক্রমও এই কাজগুলো এগিয়ে দিচ্ছিল।

কিন্তু রাজনীতিবিদরা ‘ধর্ম কার্ড’ খেলতে গিয়ে প্রায়শই এই বিনির্মাণ-যজ্ঞে কুঠারাঘাত করেছেন। নানা সময়ে মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক বা জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলোকে তোষণ করতে গিয়ে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলো নারীকে পিছিয়ে দেবার রাষ্ট্রীয় ঢাল হয়েছে মাত্র। সেই সঙ্গে সমাজ-রাষ্ট্রে গত কয়েক দশকে বিপুল উত্থান ঘটেছে ওই অন্ধকার শক্তির সামাজিক অংশটির।

বললে ভুল হবে না যে, সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনগুলোর প্রায়-অনুপস্থিতি বা প্রভাবহীনতা, বিস্মৃতপ্রায় নারী আন্দোলন আর সব ক্ষেত্রে নির্বিকার বেনিয়াবৃত্তি সমাজের সংবেদনশীলতাকে বিনষ্ট করছে। এর সবচেয়ে বড় শিকার সম্ভবত নারী। প্রযুক্তি সহজলভ্য, এর ব্যবহারও সহজ হয়ে গেছে, কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক চেতনার অন্ধকার গাঢ় হয়েছে কেবল। আর তাই আমাদের দেশে প্রযুক্তিই ক্ষেত্রবিশেষে হয়ে উঠছে নারীনিপীড়নের হাতিয়ার।

এজন্যই এ-যুগের অনেক তরুণকে এ-যুগের ইয়াসমিনদের পাশে দাঁড়াতে না দেখে অবাক হই না। ইয়াসমিনদের পোশাক আর চলাফেরা নিয়ে কুতর্কে লিপ্ত গোষ্ঠীগুলোকে রুখে দেবার চেতনাটা তাই জাগিয়ে রাখুক ২৪ আগস্টের ইয়াসমিন হত্যা দিবস।

ফরহানা মিলি : সিনিয়র সাংবাদিক