জাতির পিতাকে নিবেদিত এক গুচ্ছ ছড়া-কিশোর কবিতা
কিশোর লেখা ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১১:২০ পিএম, ১৭ মার্চ ২০২১ বুধবার
জাতির পিতাকে নিবেদিত এক গুচ্ছ ছড়া-কিশোর কবিতা
আজ ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃরি প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপস্থাপন করা হলো এক গুচ্ছ ছড়া-কিশোর কবিতা।
বঙ্গবন্ধু, তুমি তো আছোই
ফারুক নওয়াজ
নিশিতে প্রভাতে দুপুরে বিকেলে ধূসর গোধূলি-সাঁঝে...
তুমি আছো এই জাতির হৃদয়ে, বুকের প্রতিটি ভাঁজে।
তুমি আছো মায়া-মমতা জড়ানো ভোরের বাতাসে মিশে...
বঙ্গবন্ধু, তুমি আছো রোজ দোয়েলের মধুশিসে।
প্রতি প্রত্যুষে যখন সূর্য আঁধার তাড়িয়ে হাসে...
যখন দূরের ডাহুক-মেয়ের মায়াডাক ভেসে আসে...
যখন সবুজ ঘাসের চাদরে শিশিরের ঝিকিমিকি...
বঙ্গবন্ধু, তখন তোমাকে খুঁজে পায় দেশ ঠিকই!
শারদনিশীথে যখন গোপনে শুভ্র শেফালি ফোটে...
খোঁপাটিতে গেঁথে দোপাটি যখন চাষির বালিকা ছোটে...
তিন্তিড়ি বনে যখন দুপুরে হাওয়া নাচে ঝিনিঝিনি...
বঙ্গবন্ধু, তখন তোমাকে নতুন অহমে চিনি।
এই পতাকাতে সবুজে ও লালে, পাহাড়ের নির্ঝরে...
ওই দূরবনে ছায়া-নির্জনে, নদীর কলস্বরে...
টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া হয়ে গোটা দেশজুড়ে তুমি...
বঙ্গবন্ধু, তুমি স্বাধীনতা, তুমিই স্বদেশভূমি!
রাতে ফোটা ফুল মাধবীলতার মেদুর গন্ধে তুমি...
দেশের কবিতা, লোকজ ছড়ার ছন্দে-ছন্দে তুমি...
শিল্পীর ছবি, কাহিনিকারের গল্পকথাতে তুমি...
শোক-সঙ্গীতে, লোকের মুখেতে কল্পকথাতে তুমি...
নিশি-ঝিলির ঝিনিকে-ঝিনিকে, জোনাকি-আলোতে তুমি...
বীর বাঙালির শুভ-অন্তরে সকল ভালোতে তুমি!
বঙ্গবন্ধু, তুমি তো আছোই আমাদের কাছাকাছি..
তুমি আছো বলে জগতে আমরা মাথা তুলে বেঁচে আছি!
শেখ মুজিবুর ভালোবাসার
বনস্পতির ছায়া
লুৎফর রহমান রিটন
শেখ মুজিবুর বুক ভরা তাঁর
মমতা আর মায়া,
তোমার আমার মাথার ওপর
বনস্পতির ছায়া।
বাংলা নামের দেশের জন্যে
অনেক অনেক আদর,
দেশজুড়ে তাই বিছিয়ে রাখেন
ভালোবাসার চাদর।
শেখ মুজিবুর সোনার ছেলে
নয়তো সাধারণ,
মুজিববর্ষ উদযাপনের
এই মাহেন্দ্রক্ষণ...
শেখ মুজিবুর নামটা নিতেই
মন খুশিতে ভরে,
জল টলোমল করে আমার
জল টলোমল করে...
মুজিব
আমার স্বাধীনতা
জাহাঙ্গীর আলম জাহান
আগস্ট এলে কান্না আসে
বুকটা করে খাঁ খাঁ
মুজিব ছাড়া হায় আমাদের
কঠিন বেঁচে থাকা।
মুজিবকে তাই ধারণ করি
লালন করি বুকে
মুজিব ছাড়া এই ইতিহাস
কাঁদছে ধুঁকে ধুঁকে।
আগস্ট ছাড়াও সারা বছর
ভাবি মুজিব কথা
কারণ মুজিব দিয়ে গেছেন
আমার স্বাধীনতা।
কবে?
আসলাম সানী
কবে?
ফসলের মাঠগুলো
কৃষকের হবে?
কবে?
কিষানীর বুকে সুখ
মুখে ভাত র’বে?
কবে?
জেলের জলা হবে
জলায় মৎস র‘বে কবে?
কামার-কুমোড়-তাঁতী
বাঙালি বীরের জাতি
চির গৌরবে
মাথা উচুঁ র‘বে
কবে?
শ্রমিকের শ্রমে-ঘামে
স্বস্তি ন্যয্য দামে পাবে অন্ন-বস্ত্র-ছাদ
মিটবে স্বাধীনতা-সাধ
তবে মাছে-ভাতে বাঙালি
শুভ গৌরবে মুজিবের স্বপ্নটা
সত্যি হবে
কবে?
বিশ্বসেরা খোকা
নাসির আহমেদ
খোকা আছে ঘরে-ঘরেই
বাবা-মায়ের আদরে
সেই খোকারা ঘুমিয়ে থাকে
মায়ের স্নেহের চাদরে।
এই খোকাতো সেই খোকা নয়
এই খোকা ঘুমতাড়ানো,
দেশ-জননীর মুক্তি দিতে
সাহসে পা বাড়ানো।
এই খোকা যে টুঙ্গিপাড়ার
সোনার ছেলে শৈশবে
বন্দি স্বদেশ দেখেই দুঃখে
ডাক দিয়ে কন- কই সবে!
আয়রে তোরা জাগরে সবাই
বাংলা মাকে মুক্ত কর
প্রাণে প্রাণে একতা আর
শক্তি-সাহস যুক্ত কর।
ব্রিটিশ গেল দেশভাগ হলো
যায় না তবু দুঃখ রে
শোষণ করার কায়দা নতুন
কারচুপি খুব সূক্ষ্ম রে!
গরিব আরও হচ্ছে গরিব,
লুটছে সোনার বাংলাকে
এমনকি চায় কেড়ে নিতে
মায়ের ভাষা বাংলাকে!
খেপলো খোকা জাগলো স্বদেশ
রক্ত ঝরে রাজপথে
যারা ছিল ঘরকুনো খুব
নামলো তারাও আজ পথে!
জেল-জুলুম আর নির্যাতনও
পারলো নাতো দমাতে
জীবন বাজি লড়াই খোকার
দেশের দুঃখ কমাতে।
অবশেষে ছেষট্টিতে দিলেন
খোকা ছয়দফা
অমনি শাসক বুঝতে পেলো
ভাগ্যে যে তার কয়দফা!
পাকিস্তানি খানসেনারা
ভীষণ রকম ক্রুদ্ধ হয়
অবশেষে খোকার ডাকেই
একাত্তরের যুদ্ধ হয়।
রক্তসাগর পাড়ি দিয়ে
স্বাধীনতার সূর্যটা
উঠলো যখন পূব আকাশে
থামলো রণতূর্যটা।
বলতে পারো সেই খোকা কে?
কী পরিচয়, কার কে?
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর
এমন আপন আর কে!