ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬, নভেম্বর ২০২৪ ১:৪৬:২৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

পর্দা উঠল বইমেলার

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:৪২ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২১ বৃহস্পতিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় মাস দেরিতে পর্দা উঠল অমর একুশে বইমেলার। বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া চারটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এই মেলার উদ্বোধন করেন।

প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী বইমেলা শুরু হলেও এবার করোনা মহামারির কারণে তা দেরি হয়েছে। সরকারপ্রধান সরাসরি উপস্থিত থেকে বইমেলার উদ্বোধনের রেওয়াজ চলে এলেও এবারই প্রথম ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কিংবা বিরোধী দলে থাকাকালে কখনও আমি বইমেলায় যাওয়া মিস করেনি। এবারই প্রথমবারের মতো যেতে পারছিনা।

এই সময় তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধির প্রতি কঠোরভাবে নজর রাখার আহ্বান জানান।

করোনার কারণে বইমেলায় স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে জোর দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে করোনার প্রকোপ বেড়ে গেলে বইমেলা মধ্যখানে স্থগিত হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এছাড়া ঝড়-বৃষ্টির দিনে বইমেলা শুরু হওয়ায় শঙ্কা রয়েছে মেলার আয়োজকদের মনে।

অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২০ হস্তান্তর করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ মনোনীতদের হাত পুরস্কার তুলে ধরেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু রচিত ও বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘আমার দেখা নয়াচীন’-এর ইংরেজি অনুবাদ ‘নিউ চায়না-১৯৫২’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তৃতা দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

সম্প্রতি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২৮ দিনব্যাপী বইমেলা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও, করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে মেলাটি যেকোনো সময় বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২১ এর মূল থিম ‘বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী’।

করোনা মহামারির কারণে বইমেলায় নেয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা। প্রবেশ পথে থাকবে ‘নো মাস্ক-নো এন্টি’ সম্বলিত লোগো। দর্শনার্থীদের মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সেখানে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা, হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

সব মিলিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনটি প্রবেশ পথ ও তিনটি বাহির পথ থাকছে। প্রত্যেক প্রবেশ পথে সুরক্ষিত ছাউনি থাকছে, যাতে বৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যে মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।

বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, বইমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলা এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইমেলা সম্পূর্ণ পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। মেলাপ্রাঙ্গণ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। মেলার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত ধূলিনাশক পানি ছিটানো এবং প্রতিদিন মশক নিধনের সার্বিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।

১৯ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। বইমেলা সবার জন্য কার্যদিবসগুলোতে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। দুপুরের খাবার ও নামাজের জন্য এক ঘণ্টা বিরতি থাকবে।

স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী উপলক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বিষয়কেন্দ্রিক আলোচনার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন এবং গত এক বছরে প্রয়াত বিশিষ্ট জনদের জীবন ও কৃতি নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মাসব্যাপী প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিদিনই রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতা ও আবৃত্তিপাঠ।

-জেডসি