শিশুসাহিত্যিক লীলা মজুমদার: প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলী
এনা হক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:১৪ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০২১ সোমবার
শিশুসাহিত্যিক লীলা মজুমদার: প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলী
লীলা মজুমদার দুই বাংলার একজন স্বনামধন্য লেখক। তিনি কলকাতার রায় পরিবারের প্রমদারঞ্জন রায় ও সুরমাদেবীর সন্তান। বিয়ের আগে তার নাম ছিলো লীলা রায়। আজ ৫ এপ্রিল তার প্রয়াণ দিবস।
তার জন্ম রায় পরিবারের কলকাতার গড়পাড় রোডের বাড়িতে। ১৯০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন প্রমদারঞ্জনের ভাই এবং লীলার কাকা। সেইসূত্রে লীলা হলেন সুকুমার রায়ের খুড়তুতো বোন এবং সত্যজিৎ রায়ের পিসি।
লীলার বাল্যজীবন কাটে শিলঙে। যেখানকার লরেটো কনভেন্টে তিনি পড়াশোনা করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজী পরীক্ষায় তিনি ইংরাজীতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলেন। তিনি বহু সংখ্যক বাংলা গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস রচনা করে নানা পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হন। তিনি অনেক শিক্ষামূলক রচনা ও রম্যরচনা ইংরাজী থেকে বাংলায় অনুবাদও করেন।
১৯৩৩ সালে লীলা বিয়ে করেন দন্ত চিকিৎসক ডাঃ সুধীর কুমার মজুমদারকে। এই বিয়েতে তার বাবার প্রবল বিরোধিতা ছিলো। তা সত্ত্বেও তিনি স্বনির্বাচিত পাত্রকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেন। এ কারণে পিতৃপরিবারের অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট থাকলেও পিতার সঙ্গে সম্পর্ক চিরকালের মতো ছিন্ন হয়।
বিবাহিত জীবনে লীলা-সুধীর খুব সুখী দম্পতি ছিলেন। স্বামী আজীবন লীলার সাহিত্য চর্চায় উৎসাহী ছিলেন। তাদের এক পুত্র ডাঃ রঞ্জন মজুমদার ও এক কন্যা কমলা চট্টোপাধ্যায়।
তার প্রথম গল্প লক্ষ্মীছাড়া ১৯২২ সালে সন্দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৬১ সালে সত্যজিৎ রায় সন্দেশ পত্রিকা পুনর্জীবিত করলে তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৯৪ অবধি সাম্মানিক সহ-সম্পাদক হিসাবে পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য ১৯৯৪ সালে তিনি অবসর নেন। তার সাহিত্যিক জীবন প্রায় আট দশকের।
তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রচনা হল: হলদে পাখির পালক, টং লিং, পদি পিসীর বর্মী বাক্স, সব ভুতুড়ে, মাকু, গল্পসল্প।
‘পাকদণ্ডী’ শিরোনামে লেখা আত্মজীবনীতে তার শিলঙে ছেলেবেলা, শান্তিনিকেতন ও অল ইন্ডিয়া রেডিওর সঙ্গে তার কাজকর্ম, রায়চৌধুরী পরিবারের নানা মজার ঘটনাবলী ও বাংলা সাহিত্যের মালঞ্চে তার দীর্ঘ পরিভ্রমণের কথা বর্ণিত হয়েছে।
তার প্রথম আত্মজীবনী 'আর কোনখানে'-এর জন্য ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্র পুরস্কার পান। এছাড়াও তিনি আনন্দ পুরস্কার, ভারত সরকারের শিশু সাহিত্য পুরস্কার, সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার, বিদ্যাসাগর পুরস্কার, ভুবনেশ্বরী পদক, ভুবনমোহিনী দাসী সুবর্ণ পদক, দেশিকোত্তম এবং ডি-লিট উপাধীতে ভূষিত হন।
লীলা মজুমদার ২০০৭ সালের ৫ এপ্রিল পরপারে চলে যান। আজ তার প্রয়াণ দিবসে উইমেনিউজ২৪.কম-এর পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।