কসমেটিকস ব্যবহারে সাবধান!
রাতুল মাঝি
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০৪:২৭ পিএম, ৬ নভেম্বর ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০১:১৬ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৭ সোমবার
কসমেটিকস বা প্রসাধনসামগ্রী নিত্য ব্যবহার্য উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম। সৌন্দর্য বৃদ্ধির খাতিরে আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের কসমেটিকস ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলোর মানের বিষয়টি আজানাই থেকে যায়। সকলে কসমেটিকস পণ্যসমূহের মনোমুগ্ধকর বিজ্ঞাপন দেখেই আকৃষ্ট হয়।
কসমেটিকস কেনার সময় বেশিরভাগ সময়ই লেবেল পড়ে দেখা হয় না। পণ্যটি ক্রিম, লোশন, শ্যাম্পু, কাজল বা লিপস্টিক অথবা মেকআপ এর উপকরণ যাই হোক না কেন আমাদের উচিত যতটুকু সম্ভব লেবেল দেখে কেনা। তবে উল্লেখ্য লেবেলে লেখা উপকরণগুলোর অর্থ বেশির ভাগ সময়ই বোঝা যায় না। কোন উপকরণের ফলে কি ক্ষতি হতে পারে কিংবা সেসকল ক্ষতির মাত্রা কিরূপ তা আমাদের একেবারেই অজানা। কিন্তু কোন কসমেটিকে কোন উপকরণ কতটা পরিমাণ আছে এবং সেটা আমাদের শরীরের জন্য নিরাপদ কিনা তা জানা প্রয়োজন। অন্যথায় হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। তাই আসুন জেনে নেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেগুলো আমাদের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
বেশির ভাগ মানুষের বিশ্বাস করেন, ন্যাচারাল বা অরগানিক প্রসাধনী শরীরের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। কিন্তু ন্যাচারাল লেবেলের কসমেটিকে অনেক সময় প্রাকৃতিক উপাদানের চেয়ে সিন্থেটিক উপাদান বেশি ব্যবহার করে থাকে। ন্যাচারাল উপাদান বলতে কি বোঝানো হয় কিংবা সেগুলো কীভাবে কাজ করে এবং কাজে লাগানো হয় তা লেখা থাকে না। প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক উপদানের কৃত্রিম প্রেজারভেটিভ থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেসব শ্যাম্পু বা কসমেটিকে 1.4 dioxane বা প্রেজারভেটিভ quaternium-15 , DMDM hydantion, immidazolidinyl urea, diazolidimyl urea আছে সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
প্রায় শতকরা ৬০ ভাগ লিপস্টিকে রয়েছে সীসা। সীসা থেকে অ্যানিমিয়া, গ্রোথ রিটার্ডেশন বা খিঁচুনি হতে পারে। তাই এসকল লিপস্টিক এড়িয়ে চলাই ভালো বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা বা বাচ্চাদের লিপস্টিক এড়িয়ে চলা উচিত। নেইল পলিশে থাকে এই ফরমালডিহাইড। তাই সতর্ক থাকতে হবে নেইল পলিশ কেনার সময়ও। শ্যাম্পুতে অতিরিক্ত সোডিয়াম লরেথ সালফেট থাকলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে ব্রেস্ট ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়ে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার মাত্রা সহনীয় থাকে।
চুল স্ট্রেট রাখা বা সহজে ম্যানেজ করার জন্যে সবচেয়ে কার্যকর একটি উপাদান ফরমালডিহাইড। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে ফরমালডিহাইড এর উপস্থিতিতে এর টক্সিক কেমিক্যাল দ্বরা চোখ, নাখ ও গলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। হেয়ার স্ট্রেটনিং প্রডাক্টে ফরমালডিহাইড ১২ শতাংশ থাকলে তা ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করে। দীর্ঘদিন ধরে এই টক্সিক কেমিক্যাল ব্যবহার করলে তা ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। তাছাড়া অ্যাজমা, বার্থ ডিফেক্ট বা অন্ধত্বও ডেকে আনতে পারে।
ডে মশ্চারাইজারে রেটিনল পমিটেট, রেটিনল, ল্যানোলিন্টে থাকলে অ্যালার্জি হতে পারে। সানস্ক্রিনে অক্সিবেনজন, টাইটানিয়াম অক্সাইড থাকলেও অ্যালার্জি হতে পারে। মাস্কারার মিথাইলপারাবেন অ্যালুমিনিয়াম পাউডার থেকে অ্যালার্জি হয়।
স্বাভাবিকভাবেই অনেকে মনে করতে পারেন, কসমেটিক যেহেতু ত্বকের ওপরে লাগানো হয়, তাই শরীরের ভিতরে কোন ক্ষতি করবে না। কিন্তু, অনেক সময় প্রসাধনীতে এমন কিছু কেমিক্যাল থাকে যা হরমোন ডিসরাপচার করতে পারে। স্পার্ম ড্যামেজ বা রিপ্রডাক্টিভ সিস্টেমেও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রসাধন সামগ্রীর গুণগত মান এবং সেগুলো তৈরিতে ব্যবহার্য উপকরণ সম্পর্কে জানুন, নিরাপদ থাকুন।