নীলফামারীতে হাঁস পেলে স্বাবলম্বী সাবিনা
বাসস
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ১১:২০ এএম, ২৩ নভেম্বর ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:৫১ পিএম, ২ জানুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার
হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সামিনা বেগম (৪৫)। মাত্র পাঁচ বছরে সংসারের অভাব অনটন দূর করে কিনেছেন বাড়ির ভিটের পাঁচ শতক জমি। তার সফলতায় এখন অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন হাঁস পালনে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব দলিরাম দোলাপাড়া গ্রামে সাবিনার বাড়ি। ২০ বছর আগে ওই গ্রামের মঙ্গুলু মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সংসারের অভাব অনটন লেগেছিল। সে থেকে চেষ্টা চালিয়ে যান একটা কিছু করার। আর সে চেষ্টায় সফল হয়েছেন হাঁস পালনের মাধ্যমে।
সাবিনা বলেন, ৫ বছর আগে আমার বড় বোন নিলুফা ইয়াসমিনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করি হাঁস পালনের কাজ। এরপর তাতে যুক্ত করি স্বামীর দিনমজুরীর আয়ের (কুমিল্লায় কাজ করে আনা) আরো ১২ হাজার টাকা। ওই টাকায় দেশী জাতের ১ হাজার হাঁসের বাচ্চা কিনে বাড়িতে পালন শুরু করলে কিছুদিন পর ডিম দিতে শুরু করে। সেই ডিমের আয়ে দেনা পরিশোধ করেছি, একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়েছি, কিনেছি বাড়ির জন্য পাঁচ শতক জমি। বর্তমানে পালন করছি ডিমপাড়া দুইশ হাঁস ও মাংসের জন্য বিক্রিযোগ্য দুইশ হাঁস।
বর্তমানে তিনি ডিমপাড়া দুইশ হাঁসের খাবার যোগান দিচ্ছেন বাড়িতে। আর মাংসের জন্য বিক্রির হাঁস বাড়ির পাশের বিলে ছেড়ে দেন দিনের বেলায়। সেখান থেকে ওই হাঁসগুলো আহরণ করে খাবার। একাজের জন্য তার ভগ্নিপতি আব্দুল হাই পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা করছেন। সহযোগিতা করেছেন তার স্বামীসহ দুই ছেলে। পাশাপাশি প্রতিবেশীরাও তাকে এ কাজে উৎসাহ দিচ্ছেন। এখন আর অভাব নেই তাদের সংসারে। আরো বড় আকারে হাঁসের খামার গড়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
সাবিনার স্বামী মঙ্গলু মিয়া বলেন, ‘আগে আমাকে একাই সংসার সামলাতে হতো। এতে সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো। আমার স্ত্রীর চেষ্টায় হাঁস পালন করে সংসারের অভাব অনটন দূর হয়েছে। আগে অন্যের জমিতে বাড়ি করে থাকতাম। বসবাসের ওই অস্থায়ী ঠিকানাটিও এখন স্থায়ী হয়েছে।
ওই গ্রামের আব্দুর রহমান (৫৫) বলেন, ‘সাবিনার উদ্যোগ দেখে গ্রামের মানুষ অভিভূত। তাকে দেখে এখন গ্রামের অনেকে বাড়িতে ১০ থেকে ৫০টি পর্যন্ত হাঁস পালন শুরু করেছে। সেখান থেকে ডিম পাচ্ছে, ডিম এবং হাঁস বিক্রি করে আয় করছে।’
কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সামিনার হাঁস পালনের সাফল্য সবাইকে তাক লাগিয়েছে। তাকে সরকারীভাবে হাঁস পালনের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হয়।