ঢাকা, শনিবার ২৩, নভেম্বর ২০২৪ ১৮:১৫:১৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

অসম বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য: ডা: ফাহমিদা ফেরদৌস 

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:২৮ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২১ রবিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

উনিশ শতকের আগে 'মন' সম্পর্কে সকল অধ্যায়ন দর্শনের অন্তর্ভুক্ত ছিল । দার্শনিকগন মণ সম্পর্কে সকল ক্রিয়াকলাপ কেবল অনুমান করেছিলেন। গ্রীক দার্শনিক " প্লেটো " সর্বপ্রথম ব্যাখা করেন 'মন'  দেহে অবস্থিত ভিন্ন আরেকটি সত্বা । এরপর যুগ যুগ ধরে চলতে থাকে 'মন'  সম্পর্কে বিভিন্ন বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যাখা ।
'মন'  বলতে সাধারণত বুঝায় বিবেক, বুদ্ধি, আবেগ (ইতিবাচক ও নেতিবাচক ) ও নৈতিকতার সমস্টিগত বিকাশ যার বহি:প্রকাশ হয়ে থাকে যে কোন মানুষের চিন্তা, কল্পনা ও ভাষার মাধ্যমে অর্থাৎ আচরণের মাধ্যমে । 
মণের অবস্থান মস্তিষ্কে, বিকাশ শুরু হয় মাতৃগর্ভ হতে এবং নিয়ন্ত্রণ নিউরট্রান্সমিটারের মাধ্যমে । সামাজিক তত্ত্ব অনুযায়ী যখন শিশু পৃথিবীতে ভুমিস্ট হয় তখন তার চারপাশের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে দেখে শিখে নেয় এবং পরিবার পরিজনদের উৎসাহে তা তার ব্যক্তিত্বে ধারণ করে নেয় ।
যখনই মণের এই স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয়ে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে নেতিবাচক পরিবর্তন আনে তখন তাকে মানসিক রোগ বলে থাকে ।
কিছু মানসিক রোগ শিশু মাতৃগর্ভ থেকে নিয়ে আসে তখন সেই রোগকে নিউরডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার অথবা মস্তিষ্কের বিকাশ  জনিত বৈকল্য বলা হয়ে থাকে, যেমণ: অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার ইত্যাদি ।
যারা নেতিবাচক আবেগ নিয়ন্ত্রণে অখ্ম এবং তার কারনে, তার নিজের, পরিবারের ও সমাজের খ্তির কারণ হয়ে থাকে তখন তাকে বলা হয়ে থাকে ব্যক্তিত্বের বিকাশ জনিত সমস্যা । যেমণ : মিথ্যা কথা বলা, চুরি করা, নেশা করা,অতিরিক্ত রাগ(বদমেজাজ) ইত্যাদি। মস্তিষ্কের নিউরট্রান্সমিটারের ভারসাম্য ণষ্ট হলে তৈরী হতে পারে  -ডিপ্রেশন, বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার, সিজফ্রেনিয়া, ইত্যাদি।
একজন মণোরোগ /মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডায়াগনস্টিক ম্যানুয়েল অনুযায়ী রোগ নির্ণয় করে ওষুধ এবং চিকিৎসা পদ্ধতির নির্দেশনা দিয়ে থাকেন । 


বিশ্বসাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে উন্নত, উন্নয়নশীল ও নিম্ন আয়ের দেশ গুলোতে মানসিক সাস্থ্য সেবা পাওয়া না পাওয়ার একটি বৈষম্য মূলক চিএ । প্রতিবেদনে বলা হয় 74 কোটির ও বেশি মানুষ কোন না কোন মানসিক  রোগে  ভুগছে, কিন্তু বিশ্বের অধিকাংশ দেশে প্রতি এক লাখে একজন মাণসিক/মণরোগ বিশেষজ্ঞ নেই । মানসিক সাস্থ্যসেবায় ব্যায়কৃত অর্থের পরিমাণ ও সীমিত । যায় দরুন বেশিরভাগ মানসিক রোগীরা প্রাথমিক পর্যায়ে মানসিক সাস্থ্য সেবা পায় না এবং একটি পর্যায়ে এসে এসব রোগীরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে যায় । 


আগামী বিশ্বে আমাদের শান্তি র বসবাস যোগ্য পৃথিবী তৈরী করতে হলে শারীরিক যত্নের পাশাপাশি মানসিক যত্নের প্রতি মণযোগী হতে হবে এবং মাণসিক সাস্থ্য কর্মসূচি পরিকল্পনা প্রনয়নে সঠিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, জনশক্তি বৃদ্ধি, তৃণমূল পর্যায়ে মানসিক সাস্থ্যসেবা প্রদান,প্রমান ভিত্তিক মানসিক তথ্য গবেষণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যকলাপ যা কিনা মানসিক চিকিৎসার যে শূন্যতা রয়েছে তা পূরণ করতে সক্ষম হবে ।


মনরোগ/ মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ 
এবং শিশু ভাষাবিদ্
সহকারী অধ্যাপক জেড, এইচ, সিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল