ধুলাবালি থেকে হাঁপানি, কী করবেন?
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:২৩ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০২১ শুক্রবার
ফাইল ছবি
শীতকালে নানা রোগব্যাধি বাসা বাধে শরীরে। আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ায় ত্বকের সমস্যাও দেখা দেয়। এ সময় বাতাসে অনেক ধুলাবালি মিশে থাকে। এ কারণে হাঁপানিসহ জটিল রোগও বেড়ে যায়।
শীতকালে সাধারণত সর্দি-কাশি দেখা দেয়। যাদের অ্যাজমা রোগের হিস্ট্রি আছে, তাদেরও হিমশীতল আবহাওয়ায় এ রোগ দেখা যায়। এর কারণও ধুলাবালি। তবে শুধু রাস্তার ধুলাবালি থেকে সর্দি-কাশি অ্যাজমা দেখা দেয় না। ঘরে দীর্ঘদিন জমে থাকা পুরনো ধুলাবালি এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে থাকে।
শীতকালে হাঁপানি বেড়ে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ-
সাধারণত রাস্তার যে ধুলা পাওয়া যায় তা অজৈব পদার্থ— তাতে হাঁচি, কাশি বা হাঁপানির কষ্ট ততটা হয় না। কিন্তু ঘরের কোনো অনেক দিন ধরে জমে থাকা ধুলা অ্যালার্জিক অ্যাজমার অন্যতম কারণ। কারণ তাতে মাইট নামক আর্থোপডজাতীয় জীব থাকে।
মাইট বেড়ে ওঠে আর্দ্রতাপূর্ণ আবহাওয়ায় (৭৫ শতাংশ আর্দ্রতা)। বিছানা, বালিশ, কার্পেট হলো মাইটের আদর্শ বাসস্থান। আমরা সাধারণত দিনের এক-তৃতীয়াংশ সময় বিছানায় কাটিয়ে থাকি। সেখানে আমাদের শরীরের ৫০০ মিলিলিটারের বেশি পানি ঘামের মাধ্যমে বাষ্প হয়ে নির্গত হয়। এ আর্দ্রতা ও গরম আবহাওয়ায় মাইট তাদের জীবন চক্র সম্পূর্ণ করে। তাই ধুলার মধ্যে মিশে থাকা মাইটের শরীর নিঃসৃত রস লালা ও মল সবই একসঙ্গে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং অ্যালার্জির প্রকাশ ঘটায়, যা শেষে অ্যাজমার রূপান্তরিত হয়। রাতে বিছানায় শোবার সময় আমরা মাইটের সংস্পর্শে আসি এবং তাই রাতে হাঁপানির কষ্ট বেড়ে যাওয়ার এটা অন্যতম কারণ হতে পরে।
মাইটের মল একটি প্রধান অ্যান্টিজেন, যার ব্যাস ১০-১৪ মিলিমিটার। এর আয়তন বড় হওয়ার জন্য সবসময় বাতাসে ওড়ে না। কিন্তু বিছানা পরিষ্কার করার সময় বাতাসে ওড়ে এবং নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে। এতে করে হাঁপানির সমস্যা দেখা দেয়।
আমাদের মতো গ্রীষ্ম প্রধান দেশে ধুলা আক্রান্ত অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বেশি। ঋতু পরিবর্তনের ওপর অ্যাজমার প্রকোপ বাড়া-কমা নির্ভর করে।
প্রতিকার
অ্যাজমা রোগীদের ঘর নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করা দরকার। তবে রোগী যেন বিছানা ঝাড়া বা ঘর পরিষ্কার না করে। যদি একান্তই করতে হয়, তবে মুখে ফিল্টার মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
এক সপ্তাহ অন্তর বিছানা গরম পানিতে পরিষ্কার করলে তা ধুলার অ্যালারজেনকে ধুয়ে ফেলবে ও মাইট মেরে ফেলতেও সাহায্য করবে।
ধুলা যেহেতু বাতাসের মধ্যে মিশে থাকে, তাই নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শরীরে সবসময় প্রবেশ করছে। তাই আমাদের কিছু প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন— বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক পড়তে হবে।
বাসায় দীর্ঘদিন ব্যবহার করা কার্পেট সরিয়ে নিতে হবে। সেটি পুনরায় ব্যবহার করার আগে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
ঘামে ভেজা তোশক ও বালিশের ধুলা মাইট বেড়ে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ, তাই সম্ভব হলে চেন টানা ধুলা প্রতিরোধক ঢাকনা ব্যবহার করা দরকার। সম্ভব হলে তোশকের পরিবর্তে মাদুর পেতে শোয়া যেতে পারে।
চিকিৎসা
এ রোগের প্রধান ওষুধ হলো ইনহেলার স্টেরয়েড। ইনহেলার স্টেরয়েড ব্যবহারে রোগের লক্ষণ তাৎক্ষণিকভাবে উপশম হয়। যেহেতু স্টেরয়েডের বহুল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তাই এ ওষুধ এক নাগারে বেশি দিন ব্যবহার করা যায় না।