৩৪ দেশে পৌঁছে গিয়েছে জ্যোতি’র আচার
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৮:২৪ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার
ফাইল ছবি
মাহবুবা খান জ্যোতির জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাঙ্গাইল জেলায়। পড়াশোনায় অনার্স ও মাস্টার্সের গণ্ডি শেষ করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইল ‘ল’ কলেজে অধ্যয়নরত।
একজন মেয়ে, স্ত্রী ও মায়ের পরিচয়ের পাশাপাশি ই- কমার্স উদ্যোক্তায় নিজের স্বাবলম্বিতার পরিচয় গড়ে তুলেছেন মাহবুবা খান জ্যোতি।
ঘর-সংসার ও পড়াশোনার পাশাপাশি ফেসবুক পেজ ‘স্বপ্নের সন্ধানে’র মাধ্যমে নিজের রান্নার প্রতিভাকে বিকশিত করতে পেরেছেন জ্যোতি। হোম মেইড আচার, কেক ও বিভিন্ন ধরনের খাবারের মতো পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন তিনি। তার হাতে বানানো আচার এ পর্যন্ত ৩৪টি দেশে পৌঁছে গিয়েছে।
এছাড়াও তার পেজে রয়েছে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য কাসা-পিতলের আসবাবপত্র এবং হ্যান্ড পেইন্টের পণ্য। ব্যবসার শুরুটা আচার নিয়ে হলেও অন্যান্য পণ্য নিয়েও ব্যবসা করার ইচ্ছা ছিল জ্যোতির এবং পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে তিনি তা করতেও পেরেছেন।
ব্যবসার কথা বলতে গিয়ে মাহবুবা খান জ্যোতি বলেন, ২০২০ সালের জুন মাসের শুরুর দিকে প্রায় ১০\১২ কেজি আচার বানিয়েছিলাম। মা, শাশুড়ি এবং বোনকে বলে সেই আচারের ছবি দিয়েছিলাম আমার ফেসবুক প্রোফাইলে। এক আপু ছবি দেখে আচার কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর কিছুদিন পর ব্যবসা নির্ভর ফেসবুক গ্রুপ উইতে (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) যুক্ত হই। গ্রুপে অন্য মেয়েদের পোস্ট ও ই-ক্যাবের (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সাবেক সভাপতি রাজীব আহমেদ এর লেখা পড়ে শিখতে পারি ব্যবসার খুঁটিনাটি। উইতে আমার প্রথমে ২৬০ টাকা'র আচার বিক্রির পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
তিনি বলেন, টাঙ্গাইল বলতেই সবার প্রথমে চলে আসে চমচম আর শাড়ির নাম। ১০০ জনকে প্রশ্ন করা হলে প্রায় ৯০ জন শাড়ি নিয়েই ব্যবসা করে। আমার ইচ্ছা ছিল একদম ব্যাতিক্রম কিছু করার। উদ্যোক্তা হতে হলে গভীরভাবে ভাবতে হয় সেটাই আমি করেছিলাম। শুরু থেকেই ইচ্ছা ছিল দেশ এবং দেশের বাইরে আমার পণ্য পাঠাতে পারব এমন কিছু নিয়ে ব্যবসা করার। আমার স্বামী যেহেতু জাহাজে থাকেন, আমি সারাবছর খাওয়ার জন্য আচার বানিয়ে দিতাম। একদম ভাল থাকতো। দীর্ঘস্থায়ী পণ্য বলেই আমি আচার নিয়ে ব্যবসা করার চিন্তা করি।
সমাজে নারী উদ্যোক্তাদের বাধা-বিপত্তি পেরিয়েই সামনের দিকে চলতে হয়। আমি আচার বিক্রি করি এটা বলতে পরিবারের সম্মানে লাগতো, এখন তারাই আমাকে সাপোর্ট করে। পণ্য ডেলিভারির সময় আমার হাজবেন্ড অনেক কথা শুনতো। আমার হাজবেন্ড বলেই আজ আমি এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। দিন যত যাচ্ছে সাফল্য বেড়েই চলেছে। এখন বাবা-মা-বোন, আত্মীয়-বন্ধু অনেকেই সাপোর্ট করেন।
জ্যোতির স্বপ্ন তার উদ্যোগ একদিন ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পাবে সকলের কাছে। ইতোমধ্যে তার হাতে বানানো আচার এ পর্যন্ত মোট ৩৪টি দেশে পৌঁছে গিয়েছে। প্রায় সতের মাসের ব্যবসায় তার পেজের ক্রেতার সংখ্যা ২১০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং অনলাইনেই ২৩ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন জ্যোতি ।