বিশ্বে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে শিশুশ্রম
রাতুল মাঝি
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০৫:০৯ পিএম, ৭ জানুয়ারি ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৯:৫৯ পিএম, ৭ জানুয়ারি ২০১৮ রবিবার
সারা বিশ্বে শিশুশ্রম বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। এদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) আগামী আট বছরের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছে৷ সম্প্রতি আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ারসে এক সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক গাই রাইডার এই ঘোষণা দেন৷ কিন্তু বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এ সময়ের মধ্যে শিশুশ্রম নির্মূল সম্ভব কি না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো সচেতন না হলে এত অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাপী শিশুশ্রম নির্মূল করা কঠিন হয়ে পরবে। এ জন্য সবাইকে এক যোগে কাজ করতে হবে। শুধু ঘোষণা দিলেই চলবে না।
তারা বলছেন, এজন্য মনিটরিং করা খুবই জরুরী। কঠিন আইন প্রয়োগ ও জরিমানা করা দরকার।
এদিকে ওই সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্বের বড় ২৮টি প্রতিষ্ঠানের অর্ধেকই নিকেল জাতীয় ধাতু উত্তোলনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের ব্যবহার করছে৷
জানা গেছে, বিশ্বের প্রতি ১০ জন শিশুর একজন শিশু শ্রমিক৷ আর তাদের অর্ধেকই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত৷ তবে নব্বই দশকের পর শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা ১০ কোটি কমে গেছে৷
আইএলও প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, বিশ্বে ১৫ কোটি ২০ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে৷ তাদের আড়াই কোটি শিশুকে জোর করে শ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে৷
ব্রিটিশ মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ‘টাইম টু রিচার্জ` শীর্ষক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বের ২৮টি বড় কোম্পানির অর্ধেকই শিশুদের নিকেল উত্তোলনে ব্যবহার করে৷ তারা জানায়, মাইক্রোসফট অথবা চীনের হুয়াওয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতেও শিশুশ্রম রয়েছে৷
অ্যামনেস্টি জানায়, সাত বছরের শিশুও এমন জোরপূর্বক শ্রমের শিকার৷ নিকেল উত্তোলনের কারণে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে তারা৷ স্মার্টফোন, গাড়ির ব্যাটারি ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের চাহিদার কারণে সাধারণত নিকেল উত্তোলন করে তারা৷``
জার্মান গাড়ি শিল্পের বিরুদ্ধেও এই একই অভিযোগ রয়েছে৷ বিএমডাব্লিউ কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করলেও, বাকি বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো শিশুশ্রম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি৷ মানেনি আন্তর্জাতিক রীতিও৷ ত্রুটি রয়েছে ফল্কসভাগেন ও ডাইমলারের মতো প্রতিষ্ঠানেরও৷ অ্যাপেল, স্যামসাং, সোনির বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ এনেছে অ্যামনেস্টি৷
আইএলও মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, শিশুশ্রম কমে যাওয়ার হার সম্প্রতি অনেক ধীর হয়ে গেছে৷ আমরা জানি না ভবিষ্যতে এই শ্রমবাজার কীভাবে পরিবর্তন হবে৷ আমরা কোনো শিশু শ্রমিক চাই না, কোনো আধুনিক দাসত্ব চাই না৷
সম্মেলনে ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম বন্ধ করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়৷