ঢাকা, শনিবার ২৩, নভেম্বর ২০২৪ ৪:৫৩:৪৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

শীতে বিপর্যস্ত উত্তরের জনজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৩৮ এএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২২ শুক্রবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

মাঘের কনকনে শীত আর হাওয়ায় কাঁপছে রংপুর অঞ্চল। নদ-নদী ভরা হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা আরও নেমে যাওয়ার শঙ্কা আছে। সব মিলিয়ে অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে উত্তরের জনজীবন।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে রংপুরে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং কুড়িগ্রামের রাজারহাটে দেশের সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলেছে, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

এদিকে কুয়াশা আর জেঁকে বসা হিমেল হাওয়ায় জবুথবু জনজীবন। এরপরও বসে নেই দিনমজুর ও কৃষক-শ্রমিকরা। জীবিকার তাগিদে মাঠে নেমেছেন তারা। এছাড়া ছিন্নমূল মানুষরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

শীতের তীব্রতা আর শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে রংপুর নগরীতে মানুষের সমাগম কমে গেছে। কাজ ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। কমে গেছে যানবাহন চলাচল। হিমালয়ের বরফ বাতাসে শীত যেন আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে মানুষসহ পশুপাখিকে। কুয়াশাও পড়ছে বৃষ্টির মতো।


এই শীতে খেটে খাওয়া মানুষরা আছেন চরম বিপদে। ২-৩ দিন ধরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এবং বিকেল ৪টার পর থেকে রাতভর ঘন কুয়াশা ঝরছে এ অঞ্চলে। রাত যতই গভীর হয়, কুয়াশার মাত্রাও ততই বাড়তে থাকে। বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতে থাকায় রাস্তায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে মারাত্মকভাবে। বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা, ঘটছে প্রাণহানিও।


সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার সাথে হিমেল বাতাসে মানুষ সাধারণ কাজকর্ম করতে পারছে না। নগরীতেও রিকশা-ভ্যান চালকরা একটু পর পর হোটেল কিংবা চায়ের দোকানে চুলার কাছে গিয়ে হাত শেকে নিচ্ছেন। শিশু-বৃদ্ধরা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। দিনভর ঘরের মধ্যে গায়ে কাঁথা-কম্বল জড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। খড়কুটো জালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন অনেকেই।

রংপুর নগরীর দর্শনা পালিচড়া রোড এলাকার ফজলু মিয়া প্রতিদিন সকাল হলেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হন। সারাদিন নগরের ভেতরেই রিকশা চালিয়ে সংসারের হাল ধরার মতো উপার্জন করেন তিনি। শুক্রবার সকালে নগরীর শাপলা চত্বরে যাত্রী না পাওয়ার দীর্ঘক্ষণ চাতক পাখির বসে ছিলেন এই রিকশাচালক।

তিনি বলেন, ‘আইজ ক্যানবা খুব ঠান্ডা নাগোচে বাহে। মানুষজনো নাই। ঠান্ডার জনতে ঠিকমতো গাড়ি চালাও যাওছে না। এমন আবহাওয়া থাকলে হামার মতো গরিব মানুষের জন্য সমস্যা।’ 

অন্যান্য বছর ডিসেম্বরের শুরু থেকে এ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়লেও এ বছর শীত নেমেছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ থেকে মৃদুশৈত্য প্রবাহ শুরু হয়ে এখন তা অনেকটা মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে গত দু’দিন ধরে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশা এ অঞ্চলের মানুষকে কাহিল করে দিয়েছে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। 

আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান, রংপুরে তাপমাত্রা ৮ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই-তিনদিন থাকতে পারে।