৫ উদ্যোক্তার ফ্লাওয়ার লেক, মাসে আয় ৫০ হাজার টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:১৪ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার
ফাইল ছবি
হাওর নদীর মিশেল জেলা সুনামগঞ্জ। জেলার সদর উপজেলায় গড়ে উঠেছে ফ্লাওয়ার লেক নামে দর্শনীয় একটি স্থান। শহরের ব্যস্ততা আর ক্লান্তি ভুলতে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে এই ফ্লাওয়ার লেকে ছুটে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। কেউ সেলফি তুলছেন, কেউ প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার দিয়ে ছবি তুলছেন। ফলে আয়ের পথ তৈরি হয়েছে উদ্যোক্তাসহ ফটোগ্রাফারদের।
ফ্লাওয়ার লেকটি সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের ডান পাশে অবস্থিত। সড়ক থেকে নেমেই ছোট একটি লেক। লেকপাড়েই বিভিন্ন ধরনের ফুল দিয়ে বাগান তৈরি করেছেন সাত উদ্যোক্তা। দর্শনার্থীদের সুবিধার কথা ভেবে নির্মাণ করেছেন ওয়াশরুম, ক্যান্টিন, লেকের ওপর বাঁশের সেতু, নৌকা ও ছবি তোলার বিভিন্ন ইভেন্ট।
সাত উদ্যোক্তা হলেন- আরিফুল ইসলাম, নুরুল আমিন, মো. রুবেল, আবু বাক্কার, শামীম আহমেদ, রতন মিয়া ও ফয়সাল। লালপুর গ্রামের এই উদ্যোক্তারা ছোটখাটো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। করোনাকালীন ব্যবসায় সুবিধা করতে না পেরে বিকল্প আয়ের পথ তৈরি করেছেন তারা। এতে তাদের প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে। তবে প্রতিদিন তাদের আয় হচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।
এদিকে এখন মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময় হলেও প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে ফাল্গুনের হাওয়া। ঋতুরাজ বসন্ত তার আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতির দরজায় কড়া নাড়ছে। বছর ঘুরে প্রকৃতি তার নানা পরিবর্তন পেরিয়ে আবার সেজেছে নতুন রূপে। ফ্লাওয়ার লেকের লাল, হলুদ ও সবুজ ফুল দর্শনার্থীদের খুব সহজেরই আপন করে নিচ্ছে।
দর্শনার্থীরা বলছেন, শহরের ক্লান্তি ভুলতে ফ্লাওয়ার লেক খুব ভালো জায়গা। এখানে রয়েছে সুন্দর একটি লেক। লেকে ঘুরে বেড়ানোর জন্য রয়েছে দুটি নৌকা। ক্যান্টিন, বসার জায়গা ও লেকের ওপর বাঁশ, কাঠের সেতু রয়েছে। বিকেল হলেই তারা এই ফ্লাওয়ার লেকে ছুটে আসেন। টিকটকাররাও এখানে ভিডিও বানানোর জন্য ছুটে আসেন।
দর্শনার্থী পলি রায় বললেন, আমরা শহরে থাকতে থাকতে অনেক সময় হাঁপিয়ে উঠি। তখন আমাদের বিনোদনের প্রয়োজন হয়। আমার জানা মতে শহরে কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। এখানে আসলে গ্রামীণ পরিবেশের অনুভূতি পাওয়া যায়। লেক, নৌকা, সূর্যমুখী, গাঁদা, সিলভিয়া, কুসুমসহ নানা ফুল রয়েছে। এছাড়া দোলনা, ক্যান্টিন, বাঁশের সাঁকোও রয়েছে।
মো. হারানুর রশিদ বলেন, আমি প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। এখানে সব সময় ছবি তুলি। এই এলাকার সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থী এখানে হয়। শুক্রবার উপচেপড়া দর্শনার্থী আসে। তাদের ছবি তুলে দিতে ভালো লাগে। প্রতিদিন হাজার পনেরোশ টাকা আয় করতে পারি। এত দিন বেকার ছিলাম। এই ফ্লাওয়ার লেক হওয়ায় আমাদের আয়ের পথ তৈরি হয়েছে।
টিকটকার মো. আরমান বললেন, আমরা তিনজন আসছি ভিডিও করতে। ফুলের সঙ্গে এখানে লাইটও ভালো পাওয়া যায়। দুই-তিন ঘণ্টা আগে আসছি। এখন আর যেতে মন চাইছে না।
ফ্লাওয়ার লেকের মালিক মো. রুবেল বলেন, এখানে একটি লেক আছে। সে লেক দেখে এখানে বাগান করার পরিকল্পনা মাথায় আসে। পরে আমরা সাতজন প্রায় দেড় লাখ টাকার খরচ করে এখানে বাগান করেছি। নাম দিয়েছি ফ্লাওয়ার লেক।
তিনি আরও বলেন, ফুলের গাছগুলো সিলেট থেকে এনেছি। সিলভিয়া, ডালিয়াসহ প্রায় ৩৫ হাজার টাকার চারা এনেছি। কাঠ ও বাঁশ দিয়ে লেকের ওপরে একটি সেতু করেছি। সেখানেও ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দুটি নৌকাও দিয়েছি। মোট খরচ হয়েছে দেড় থেকে পৌনে দুই লাখের মতো। এখন পর্যটক আসছে। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আয় হচ্ছে।