সংসার সামলিয়ে সাফিয়া একজন সফল ই-কমার্স উদ্যোক্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:৫৫ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার
ফাইল ছবি
শিক্ষকতার পাশাপাশি ঘর সংসার সামলিয়ে সাফিয়া একজন ই-কমার্স উদ্যোক্তা হিসেবেও নিজের পরিচয় ফুটিয়ে তুলেছেন। ফেসবুক পেজ ‘রসনা বিলাস চট্ট’-এর মাধ্যমে সকল প্রকার ফ্রোজেন ফুড আইটেম, শীতের পিঠা, আচার এবং পাশাপাশি দেশীয় থ্রি পিস, শাড়ী, পাঞ্জাবি, বাটিক চাদর, জামদানী শাড়ি ও শাল নিয়ে ব্যবসা করছেন।
শাফিয়া আলম শিবলী, জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। পরিবারের সাত বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। হাটহাজারী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও বিএসসি’র পর চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে এমএসসি পাস করেন সাফিয়া। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের সেন্ট জন্স গ্রামার স্কুলের একজন সিনিয়র শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন।
ব্যবসা নিয়ে বলতে গিয়ে শাফিয়া আলম শিবলী বলেন, ‘‘শুরুতে ২০০৪ সালে আমার বিয়ের পর চাকরি না পেয়ে ঘরে কেক বানিয়ে দোকানে ডেলিভারি দিতাম। কিন্তু শ্বশুর বাড়িতে আমার স্বামী মেনে নিলেও পরিবারের অন্যান্য সদস্য তা মেনে নিতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এই কাজ আর করা হয়নি। কিন্তু মনেপ্রাণে ব্যবসার চিন্তা থেকেই গিয়েছিল। বাড়িতে বসে টিউশনি করতাম। এভাবেই চলতে লাগলো বেশ কয়েক বছর।
‘২০২০ সালে এপ্রিলে লকডাউনের পর কোনো কূল কিনারা পাচ্ছিলাম না। স্বামীর অফিস ও আমার স্কুল বন্ধ থাকায় সব মিলিয়ে হতাশায় এক দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছিলাম। মে মাসের শেষের দিকে আমার বোন (উদ্দ্যোক্তা শারলিনা আলম )- এর থেকে ফেসবুক গ্রুপ উইর (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের) সন্ধান পাই। এভাবে উইতে নিয়মিত থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
‘শুরুর দিকে আমার স্বামী ও সন্তানরা ছাড়া কেউ জানতো না আমি অনলাইনে ব্যবসা করি। এভাবে লুকিয়ে ব্যবসা করতে করতে একবছর পার করে দিলাম। পরিবারের বাকিরা যখন জানতে পারে তখন ব্যবসা নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। আর আমার স্বামী সব কিছু সামলিয়ে নিয়েছিল। আমাকে আর কোনো কিছুতে বাধা দেয়নি এখনও পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ।”
তিনি বলেন, ‘আমি চিন্তা করেছি বাড়ির তৈরি খাবার ও দেশীয় পোশাক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সবচেয়ে বেশি জরুরি। বিশেষ করে চাকরিজীবী মহিলারা সময় বাঁচানোর জন্য হোমমেড ফুড আইটেম ঘরে থাকলে সুবিধা। রমজান মাসে ইবাদত করতে অসুবিধা হবে না যদি ফ্রোজেন ফুড ঘরে থাকে। বাচ্চার স্কুলে টিফিন দিতেও সুবিধা হয়। এই ধরনের ব্যবসায় খুব বেশি ইনভেস্টের প্রয়োজন হয় না। মূলত এসব কারণেই এমন পণ্য নিয়ে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেছিলাম।’স্বামী, সন্তান ও বোনদের সহযোগিতায় সাফিয়া তার এই ক্ষুদ্র উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় অনেকদূর। খোলামেলা বিস্তর জায়গায় পার্কের মতো করে রেস্তোরাঁ দিতে চান তিনি। সংসারের বাড়তি আয় হিসেবে সাফিয়ার উদ্যোগ এখন মাস শেষে বেশ ভালো সাপোর্ট দিচ্ছে।