কম বয়সি মেয়েদের কেন পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হয়?
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৪১ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার
ফাইল ছবি
আগে সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) দেখা যেত। এখন কম বয়সি মেয়েদের পিসিওএস বেশি দেখা যায়। এর কারণ কি?
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম নিয়ে একাধিক চিকিৎসকরা বলেছেন, পিসিওএস মানে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম। কয়েকটি বিষয়ে সমন্বিত একটি হরমোনজনিত জটিলতা। এটা একটি হরমোন, যেখানে এন্ড্রোজেন বা ছেলেদের যে পুরুষালি হরমোনটা মেয়েদের শরীরে যতটুকু মাত্রায় থাকায় কথা, তার চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় নিঃসৃত হচ্ছে। পাশাপাশি সেটি ওজন বৃদ্ধি করে দিচ্ছে।
আমরা জানি প্রতি মাসে একটি করে ডিম্বাণু নারীর দেহে নিঃসৃত হয়। কিন্তু পিসিওএসের ক্ষেত্রে এই ডিম্বাণুর সাথে অপরিণত ডিম্বাণুও আসে। পিসিওএস যখন হয়, তখন প্রত্যেকটি ডিম্বাণুই থাকে অপরিণত বা তারা কোনো ভাবেই পরিপক্ক হতে পারে না। একটা অপরিণত পর্যায়ে এসে থেকে যায়।
পরের মাসে আবারও তার কিছু ডিম্বাণু আসে। এভাবে ডিম্বাণুগুলো জমতে জমতে সেগুলো ছোট ছোট পানির আকারে বা অর্ধতরল টাইপের কিছু হয়ে ওভারিতে জমতে থাকে তার চারপাশে। তখন এটা ছোট ছোট হয়ে মালার মতো একটা সিস্ট আকার (আমরা বলি সিস্ট, আসলে এটি পানিবাহিত) ধারণ করে।
এটি পুরো ওভারিতে ধারণ করে। আস্তে আস্তে ওভারির রং পরিবর্তন হতে থাকে। ওভারি শক্ত হতে থাকে। এ জিনিসটি সমন্বিত হলে শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে। দেখা যায় পুরুষালি হরমোন বেড়ে যাচ্ছে, সে জন্য অবাঞ্ছিত লোম গজাতে শুরু করে। মেয়েদের দেখা যাচ্ছে ঠোঁটের ওপরে, চোয়ারে নিচে, এসব জায়গায় এবং অন্যান্য জায়গাতেও লোম তৈরি হচ্ছে। তারপরে হচ্ছে যেটা, ওজন বাড়ছে অনেক বেশি।
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের লক্ষণ
অবাঞ্ছিত লোম, ওজন বৃদ্ধি, ব্রণ বৃদ্ধি, ঘাড়ের পেছনে কালো হয়ে যাওয়া এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা হয়, মেয়েদের মাসিক অনিয়মিত হওয়া শুরু করে। দুমাস-তিন মাস তার নির্দিষ্ট সময় থাকছে না। অনেক দিন পরপর হচ্ছে এবং হলে দেখা যাচ্ছে অনেক বেশি হচ্ছে বা একদম অল্প সময় থাকছে।
আমাদের লাইফস্টাইল চেঞ্জ হচ্ছে, অল্প বয়সি মেয়েদের এই রোগ দেখা যাচ্ছে। আধুনিক জীবনযাপন, রাতে পর্যাপ্ত না ঘুমানো, নিয়মিত না খাওয়া, ব্যায়াম না করা, আমাদের খাদ্যাভ্যাস, সবকিছু মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। ফলে এই জিনিসটার এত বেশি প্রাদুর্ভাব। সাউথ এশিয়ান রিজনে প্রতি পাঁচজন মেয়ের মধ্যে একজন এই পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে ভুগছে।
চিকিৎসা
এ সমস্যার সর্বপ্রথম চিকিৎসা মেদ কমানো। একইসঙ্গে লো ডোজের ওরাল পিলস দেয়া হয়। এই পিলস এন্ড্রোজেনের মাত্রা কমায়। যাদের সন্তান ধারণে অসুবিধা হচ্ছে তাদের মেটফরমিন নামে এক ধরনের ওষুধ দেয়া হয়। এটি ডায়াবেটিসের ওষুধ হওয়া সত্ত্বেও ডিম্বাণু নিঃসরণে সাহায্য করে। এ ধরনের ওষুধ ধৈর্যের সঙ্গে তিন থেকে ছয় মাস খেয়ে যেতে হয়। অবাঞ্ছিত লোমের জন্য ইনেকট্রোলিসিসের সাহায্য নিতে হতে পারে। অনেক সময় মেয়েরা সাইকোলজিক্যালি এত ডিপ্রেশনে ভোগে, যা সাইকোলজিক্যাল কাউসেলিং এবং প্রয়োজনে ট্রিটমেন্ট নিতে হতে পারে। তবে যে কোনো ঔধুষ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।