অপরিচিত-নতুন লেখকের বইয়ে পাঠকের আগ্রহ কম
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৯:০০ পিএম, ১০ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার
ফাইল ছবি
১০ মার্চ, অমর একুশে বইমেলার ২৪তম দিন। আগামী ১৭ মার্চ শেষ হবে এবারের বইমেলা। আর মাত্র আট দিন বাকি। মেলার শেষ সপ্তাহে বিভিন্ন প্রকাশনী ঘুরে প্রকাশক, পাঠক, লেখকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- স্টলগুলোতে পাঠক ও ক্রেতার ভিড় থাকলেও নতুন এবং আনকোরা লেখকের বইয়ের চাহিদা তেমন নেই।
বেশ কিছু প্রকাশনীর মালিক এবং বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিচিত লেখকদের বাইরে পাঠকরা এখন পর্যন্ত নতুন লেখকদের লেখার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠতে পারেনি। এছাড়া নতুন লেখকদের বইয়ে পাঠকের আগ্রহও তেমন নেই।
এবারের মেলার চিত্র ভিন্ন। প্রথমদিন থেকেই মেলাপ্রাঙ্গণে পাঠক, দর্শনার্থী ভরপুর। প্রতিদিনই মেলার গেট খুলে দেওয়ার পর থেকে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে মেলাপ্রাঙ্গণ। এবারের পাঠকদের মধ্যে বেশির ভাগের দৃষ্টিই হুমায়ূন আহমেদ, জাফর ইকবাল, আনিসুল হকের প্রকাশিত বইয়ের প্রকাশনীগুলোর দিকে। প্রয়াত লেখক কিংবা প্রবীণ লেখকদের চাহিদার কাছে নতুন যারা লিখছেন, তারা ঠিক সুবিধা করে ওঠতে পারছেন না। এর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম লেখক হচ্ছেন সাদাত হোসাইন।
এ ব্যাপারে কাকলী প্রকাশনীর কর্ণধার এ কে নাছির আহমেদ সেলিম বলেন, ‘এবারের মেলায় আমাদের প্রকাশনীতে মূলত পুরোনো লেখকের বইয়ের চাহিদাই বেশি। সেই তুলনায় নতুন লেখকদের বইয়ের চাহিদা কম। তারপরও আমরা কিন্তু নতুনদের বইও প্রকাশ করি।’
প্রতি বছরই একাধিক নতুন লেখকের বই প্রকাশ করে ভাষাচিত্র। কীসের ভিত্তিতে নতুনদের বই প্রকাশ করেন– এমন প্রশ্নের জবাবে ভাষাচিত্র’র খন্দকার সোহেল বলেন, ‘আমরা মূলত পাণ্ডুলিপিকে গুরুত্ব দিই। এক্ষেত্রে অবশ্য লেখকের সঙ্গে প্রকাশকের ব্যক্তিগত সম্পর্কও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়তা করে।’
নতুন অনেক লেখকের জীবনের প্রথম পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করার বিষয়ে সোহেল বলেন, ‘কাউকে না কাউকে তো নতুন লেখকদের বই প্রকাশ করতেই হবে। সে কাজটা না হয় আমিই করলাম। এসব পাণ্ডুলিপি ভালো হলে, সেটা একসময় না একসময় এমনিতেই সামনে আসবে। ভাষাচিত্র কেবল সূত্রধরের কাজটা করে, আর কিছু নয়।’
সুবর্ণ প্রকাশনীর একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, ‘আমাদের স্টলে মূলত হুমায়ূন আহমেদ এবং জাফর ইকবালের বইয়ের চাহিদা বেশি। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বইয়েরও চাহিদা রয়েছে। নতুনদের বই তেমন না কিনলেও পাঠকরা দেখছেন। দেখতে দেখতে একসময় কিনতে শুরু করবেন বলে বিশ্বাস করি।’
পাঠক সমাবেশের শহিদুল ইসলাম বিজু বলেন, ‘আমরা সবসময় গবেষণাধর্মী পাণ্ডুলিপির ওপর জোর দিই। অন্য যেসব বই দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে, সেসব বই আগুনের ফুলকার মতো যেমন দপ করে জ্বলে উঠছে তেমনি নিভেও যাবে। এটাই স্বাভাবিক। তবে গবেষণাধর্মী অর্থাৎ বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ননফিকশন বইগুলো টিকে থাকবে অনেকদিন। এসব বইয়ের চাহিদাও পাঠকের কাছে বেশি।’
নতুন লেখকদের বিষয়ে বিজু বলেন, ‘পাঠক সমাবেশকে কেন্দ্র করেই শাহাদুজ্জামান বা মাসরুর আরেফিনের মতো লেখকরা পরিচিতি পেয়েছেন। আমরা সবসময় লেখার মানের বিষয়কে গুরুত্ব দিই। লেখক নবীন না প্রবীণ সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। নতুন কেউ গবেষণা করে মানসম্পন্ন কিছু লিখলে, আমরা ছাপানোর ক্ষেত্রে সেটাকে গুরুত্ব দিই। সেই লেখককে স্বাগত জানাই।’