ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬, নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৬:২৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

দ্বার উন্মোচনের অপেক্ষায় একুশে গ্রন্থমেলা

এসএম মুন্না

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ১০:৩৪ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:০৩ এএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার

বই উৎসবের রঙ লেগেছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। প্রাণের জোয়ারে মেতে ওঠার সব আয়োজন চূড়ান্ত। আর মাত্র একদিন পর বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) শুরু হচ্ছে সংস্কৃতিপ্রিয় বাঙালির প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৮’।

 

বিকেল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভাষাশহীদদের স্মরণে আয়োজিত মাসব্যাপী গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন যুক্তরাজ্যের লেখক এগনিস মিডোস, ক্যামেরুনের ড. জয়েস অ্যাসউনটেনটেঙ, মিশরের ইব্রাহিম এলমাসরি (মিশর) এবং সুইডেনের অরনে জনসন। স্বাগত বক্তব্য দেবেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস প্রফেসর আনিসুজ্জামান।

 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘আলোকচিত্রে বাংলা একাডেমির ইতিহাস’ এবং ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ : বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক গ্রন্থ তুলে দেয়া হবে। একই অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭ তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি মেলা মঞ্চ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতারসহ বেসরকারি টেলিভিশন ও এফএম রেডিও স্টেশনগুলো। এবার আধা ঘন্টা সময় বাড়িয়ে এবার মেলা চলবে প্রতিদিন রাত ৯টা পর্যন্ত। আগামী ২২ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন। বাংলাদেশসহ ফ্রান্স, স্পেন, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভারতসহ ৮টি দেশের ১৫ জন কবি-লেখক-বুদ্ধিজীবী অংশ নেবেন এই সম্মেলনে।

 


মেলার পরিধি : একাডেমির প্রাঙ্গণে সরকারি, আধা সরকারি, সায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক-সামাজিক-গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে। মেলামঞ্চে থাকছে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সৃজনশীল পুস্তক প্রকাশনা সংস্থাগুলোকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ৫ লাখ বর্গফুটজুড়ে এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৩৬টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৮৩টি ইউনিট; মোট ৪৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১৯টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৫ হাজার ৫৩৬ বর্গফুট আয়তনের ২৫টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ১৩৬টি লিটল ম্যাগাজিনকে লিটল ম্যাগাজিন কর্নারে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

 

একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলা একাডেমির ১টি প্যাভিলিয়ন, ৪ ইউনিটের ২টি, একাডেমির শিশু-কিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য ১টি এবং একাডেমির সাহিত্য মাসিক ‘উত্তরাধিকার’-এর ১টি স্টল থাকবে। শিশুচত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। এই কর্নারকে শিশু-কিশোর বিনোদন ও শিক্ষামূলক অঙ্গসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ছোট প্রকাশনা সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগে যারা বই প্রকাশ করেছেন, তাদের বই বিক্রি ও প্রদর্শনের জন্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে রাখা যাবে। মেলায় বাংলা একাডেমির বই ৩০ শতাংশ আর অন্যান্য প্রকাশকের বই ২৫ শতাংশ কমিশনে বিক্রি হবে। তবে বিকাশ এর মাধ্যমে কেনাকাটা করলে আরও ৫ থেকে ১০ শতাংশ বেশি ছাড় পেতে পাবেন ক্রেতা। এক প্রকাশনীর বই অন্য প্রকাশনার স্টল থেকে বিক্রির নিষেধাজ্ঞা এবারও বহাল থাকছে। বহাল থাকছে নোট বই ও পাইরেটেড বই বিক্রি রোধে টাস্কফোর্সের নজরদারি। মেলার ইভেন্ট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে নিরাপদ ইভেন্টস।


মেলামঞ্চ, চত্বর ও অন্যান্য : একাডেমির রবীন্দ্র চত্বরে স্থাপিত মেলামঞ্চ থেকে ২ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে থাকবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-সমকালীন প্রসঙ্গ এবং বিস্মৃতপ্রায় বিশিষ্ট বাঙালি মনীষার জীবন ও কর্ম নিয়েও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। গ্রন্থমেলা উপলক্ষে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, সঙ্গীত, সাধারণ জ্ঞান ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে অংশ নেবেন দেশসেরা শিল্পীরা। মেলা প্রাঙ্গণকে ১২টি চত্বরে ভাগ করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে। তথ্যকেন্দ্র থাকবে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। গ্রন্থমেলায় মিডিয়া সেন্টার থাকবে তথ্যকেন্দ্রের উত্তর পাশে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ধারণার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই কর্তৃপক্ষ গ্রন্থমেলায় তাদের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, তথ্যকেন্দ্রের সর্বশেষ খবরাখবর। মেলায় থাকবে ওয়াইফাই সুবিধা। সোহরাওয়াদী উদ্যানে স্থাপন করা হয়েছে লেখককুঞ্জ।

 


নিরাপত্তা ব্যবস্থা : একাডেমির প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে যে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ছাড়া একাডেমির নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী। মেলার দুই অংশে স্থাপন করা হয়েছে আড়াই শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। র‌্যাব কন্ট্রোল রুম থাকছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। টিএসসি, দোয়েল চত্বর দিয়ে দুটো মূল প্রবেশপথ, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তিনটি পথ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও বাহিরের ৬টি পথ থাকবে। গ্রন্থমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য এবার ব্যাগ নিয়ে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন না দর্শনার্থীরা। গ্রন্থমেলা সম্পূর্ণ পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। মেলা প্রাঙ্গণ ও পাশ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে।

 


মহাপরিচালকের সংবাদ সম্মেলন : রেওয়াজ অনুযায়ী মেলার দুই দিন আগে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক অপরেশ কুমার ব্যানার্জী, গ্রন্থমেলার ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান নিরাপদ মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স লিমিটেড চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, স্পন্সর প্রতিষ্ঠান বিকাশ লিমিটেডের সিইউ কামাল কাদের।

 


পুলিশ কমিশনারের মেলা পরিদর্শন : মঙ্গলবার দুপুরে মেলা পরিদর্শন করেছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। পরিদর্শন শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সামনে সংবাদ সম্মেলনে নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মেলায় কোন প্রকার ব্যাগ, ব্যাগপ্যাক, ভ্যানিটি ব্যাগ, ট্রলি ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ, ধারালো অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসা যাবে না।’ তবে এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির কোন সিদ্ধান্ত নেই বলে জানান মেলা কমিটির সদস্য সচিব ও একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ। তিনি বলেন, মেলার নীতিমালায় এমন কোন কিছু নেই। আমরা নীতিমালা অনুযায়ীই মেলা পরিচালনা করবো। ডিএমপি কমিশনার জানান ‘যদি কোন লেখক ও প্রকাশকের বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজন হয়, তাহলে মেলায় স্থাপিত পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করলে তাদের নিরাপত্তা প্রদান করা হবে। যে কোন নতুন বই মেলায় আসলে বাংলা একাডেমি তা যাচাই বাছাই করে দেখবেন। যাতে করে কোন বই ধর্মীয়, সামাজিক ও জাতীয় মূল্যবোধে আঘাত না করতে পারে।

 


বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও অন্যান্য : উদ্বোধনী পর্বে বাংলা একাডেমি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ১০জন পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পদক ও এক লাখ টাকার চেক তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৭ জানুয়ারি শনিবার পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেনÑ মোহাম্মদ সাদিক ও মারুফুল ইসলাম (কবিতা), মামুন হুসাইন (কথাসাহিত্য), মাহবুবুল হক (প্রবন্ধ), রফিকুল্লাহ খান (গবেষণা), আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া (অনুবাদ), কামরুল হাসান ভূঁইয়া ও সুরমা জাহিদ (মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য), শাকুর মজিদ (ভ্রমণ সাহিত্য), মোশতাক আহমেদ (বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী), মলয় ভৌমিক (নাটক) এবং শিশুসাহিত্যে ঝর্না দাশ পুরকায়স্থ (শিশুসাহিত্য)।

 


২০১০ সাল থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলার পথিকৃৎ চিত্তরঞ্জন সাহার নামে পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও পুরস্কার দেওয়া হবে। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০১৭ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা গ্রন্থের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ২০১৭ গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে। ২০১৭ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য ১টি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং এ-বছরের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হবে।

 


প্রকাশক ও টিভি চ্যানেলগুলোর প্রস্তুতি : এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৮০ শতাংশ স্টলের সাজসজ্জার কাজ শেষ হয়নি। নানা কারণে অনেক প্রকাশক দ্রুত সময়ের মধ্যে স্টল সজ্জার কাজ শেষ করতে পারেননি। কয়েকটি স্টলে শুক্রবার রাতে বই সাজাতে দেখা গেছে। অন্যদিকে চলছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর প্রস্তুতি। বহির্বিশ্বের বাঙালিরাও যাতে বইমেলার আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হন, সে জন্য স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো প্রতিদিন মেলা প্রাঙ্গণ থেকে সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। চ্যানেল আইয়ের অঙ্গন প্রতিষ্ঠান আনন্দ আলো প্রকাশ করবে ‘বইমেলা প্রতিদিন’। এবারের মেলায় কতটি নতুন বই প্রকাশ হতে পারে তার সঠিক করে বলতে পারছেন না, তবে প্রায় চার হাজার নতুন বই প্রকাশিত হবে বলে আশা করছেন সৃজনশীল পুস্তক প্রকাশনা সংস্থাগুলো। একাডেমি এবার পুনর্মুদ্রণসহ নতুন বই প্রকাশ করছে ১৪১টি।

 


নতুন সংযোজন : বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বড় পরিসরের ‘নতুন বইয়ের প্রদর্শশালা’ করা হয়েছে। এতে প্রতিদিন প্রকাশিত নতুন বই দিনভিত্তিক সাজানো থাকবে। শারীরিকভাবে অসুবিধাগ্রস্থ ও প্রবীণ মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে হুইল চেয়ারের সংখ্যা গতবারের চেয়ে এবার বৃদ্ধি পাবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে তিনটি এবং বাংলা একাডেমি অংশে দুইটি ক্যান্টিন চালু থাকবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে উদ্যান ও একাডেমি উভয় অংশের স্টলগুলোতে টিনের ছাউনি দেয়া হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পর্যাপ্ত মাটি ফেলে জমি ভরাট করা হয়েছে। প্রায় ১ লাখ বর্গফুট এলাকায় ইট ও বালু দিয়ে অস্থায়ী রাস্তা/উন্মুক্ত প্রান্তর নির্মাণ করা হয়েছে। শিশু চত্বরে স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। ইট বিছিয়ে শিশুচত্বরকে উন্নত করা হয়েছে। ১০০০ বর্গফুট জায়গায় টাইলস দিয়ে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা ওজু ও টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 


ইতিহাসের পাতা থেকে : ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একাডেমির বটতলায় ৩২টি বই নিয়ে একক বইমেলার আয়োজন করেছিলেন মুক্তধারা প্রকাশনীর চিত্তরঞ্জন সাহা। ঘাসের ওপরে চট বিছিয়ে বই নিয়ে বসেছিলেন তিনি। যুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে এটাই ছিল প্রথম বইমেলা। ১৯৭৬ সালে এসে মেলায় যোগ দেয় আহমদ পাবলিশিং হাউস। ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি বইমেলা নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। তবে তা ‘অমর একুশে বইমেলা’ হিসেবেই সবার কাছে অধিক পরিচিত।

 


মেলার সময়সূচি : রোববার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র-শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে মেলার দ্বার খুলে যাবে সকাল ১১টায়; চলবে একটানা রাত ৯টা পর্যন্ত। একুশে ফেব্রুয়ারি দিন মেলার দ্বার খুলবে সকাল আটটায়। চলবে একটানা রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।