চাঁপাইনবাবগঞ্জে চৈত্রের বৃষ্টিতে আমে স্বস্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:০৭ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০২২ মঙ্গলবার
ফাইল ছবি
কয়েক দিন ধরেই তীব্র রোদ আর খরায় চিন্তিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিরা। অপেক্ষা করছিলেন একটু বৃষ্টির। অবশেষে তাদের সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে স্বস্তি দিয়েছে প্রকৃতি। চৈত্রের একটু বৃষ্টিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন জেলার চাষিরা।
সোমবার (০৪ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে কয়েক মিনিট ও রোববার রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে থেমে থেমে প্রায় ঘণ্টাখানেক বৃষ্টি হয়েছে আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এদিকে রোববার রাতে সদর উপজেলার কয়েক জায়গায় ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ঝরে যায় আমের গুটি। তবুও চৈত্রের এই বৃষ্টিকে সামগ্রিকভাবে আম চাষের জন্য সহায়ক বলে মনে করছেন গবেষক ও কৃষি বিভাগ।
সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গার আমচাষি রাসেল আহমেদ বলেন, এখন সব গাছেই মুকুল গুটির আকার ধারণ করেছে। এ সময় গুটিতে পোকার আক্রমণ হয়। তাছাড়া গত কয়েক দিন ধরে তীব্র রোদ ও খরায় গুটির গোড়া শুকিয়ে গিয়েছিল। একটু বৃষ্টির খুব দরকার ছিল। বৃষ্টি হওয়ায় অনেক উপকার হয়েছে।
গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের বেলাল বাজার এলাকার আমচাষি আব্দুর রাকিব জানান, আমের গুটি থাকা অবস্থায় বৃষ্টি হওয়াতে গাছ ধুয়ে গেছে। মরা সব পাতা পড়ে গেছে। দূর হয়েছে অনেক রোগবালাই। সেইসঙ্গে নিচে সেচও হয়ে গেছে। এই বৃষ্টি আমের ফলন বৃদ্ধি ও নিরাপদ আম উৎপাদনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিডেটের সাধারণ সম্পাদক ও আম রপ্তানিকারক ইসমাঈল খান শামিম বলেন, এই সময়ে আমের গুটিতে পোকার আক্রমণ হয়। এছাড়া গুটির গোড়া শুকিয়ে গিয়ে ঝরে পড়া শুরু হয়। বৃষ্টির ফলে পোকার আক্রমণ দূর হবে এবং গুটি ঝড়ে পড়া রোধ হবে। বৃষ্টি হওয়ায় গুটির গোড়া শক্ত হবে। আমও দ্রুত বাড়বে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. ইউসুফ জানান, এই সময়ে একটু বৃষ্টি প্রত্যাশিত ছিল আমচাষিদের জন্য। বৃষ্টির ফলে আমের গুটির ঝরে পড়া অনেকাংশেই কমে যাবে। এমনকি আম দ্রুত বাড়বে। এই সময়ে আমের গুটিতে হপার পোকার আক্রমণ হয় ও অ্যানথ্রাকনোজ নামক ছত্রাকজনিত রোগ দেখা যায়। তাই অপেক্ষাকৃত বড় গুটির জন্য ক্লোরোপাইরিফস বা সাইপারমেথ্রিন ও ছোট আমের গুটির জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কিটনাশক এবং কার্বন ডাইজিন গ্রুপের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, জেলাজুড়ে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আমের পাশাপাশি এই বৃষ্টির পানি ধানের জন্যও উপকারী। বৃষ্টির পাশাপাশি হওয়া ঝোড়ো হওয়াতে কৃষিপণ্যের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।