তাহিরপুরের হাওরে ঢুকছে পানি, তলিয়ে গেছে ৩০৯ বিঘা জমির ধান
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৮:১০ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২২ রবিবার
ফাইল ছবি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরের ২৭ নং পিআইসি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে বর্ধিত গুরমা হাওরে পানি ঢুকেছে। এ সময় গলগলিয়া ও পানার হাওরের প্রায় ৩০৯ বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
রোববার (১৭ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে এ বাঁধ ভেঙে যায় বলে স্থানীয় কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে। এর আগে একই দিন সকাল ৮টায় ওয়াচ টাওয়ার-সংলগ্ন বাঁধের ওপর দিয়েও গুরমা হাওরে পানি প্রবেশ শুরু করে।
জানা গেছে, পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ রোববার সকাল থেকে ওয়াচ টাওয়ার-সংলগ্ন কান্ধা (প্রাকৃতিকভাবে থাকা উঁচু রাস্তা) দিয়ে বর্ধিত গুরমা হাওরে পানি ঢোকা শুরু হয়। এরপর বিকেল ৪টার সময় নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ২৭ নং ফসল রক্ষা বাঁধের মূল অংশ গাছসহ ভেঙে যায়।
মধ্যনগর উপজেলার দক্ষিণ বংশিকুন্ডা ইউনিয়নের কৃষক হাবিব মিয়া বলেন, তাহিরপুর উপজেলার গুরমার হাওরে পানি প্রবেশ করায় আমাদের সবগুলো হাওর এখন ঝুঁকিতে রয়েছে। যে কোনো সময় আমাদের হাওরের ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান উদ দৌলা বলেন, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের গুরমার হাওরের বর্ধিতাংশ উপ-প্রকল্প ২৭ নং বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় গলগলিয়া ও পানার হাওরের প্রায় ৩০৯ বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা কিছু ধান কেটে ফেলেছেন। হাওরের পাকা ধান কেটে ফেলায় ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে। দুইটি হাওরেই ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাহিরপুর উপজেলার উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান সেলিম বলেন, গুরমার হাওরের ২৭ নং বাঁধটি কেনো ভেঙে গেছে এবং প্রকল্পের কাজে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি-না তা আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। বাঁধের কাজে গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, আমরা সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিন-রাত বাঁধ রক্ষায় কাজ করেছি। কিন্তু বর্ধিত গুরমার হাওরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৭ নং প্রকল্পের বাঁধটি হাটাৎ করে ভেঙে গেছে। বাঁধ নির্মাণ কাজে অনিয়ম আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের ধারণা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হয়তো বাঁধটি ভেঙে গেছে। আমরা ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করব।
সুনামগঞ্জ জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা গত দুই সপ্তাহ ধরে সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করেছি। বাঁধ রক্ষায় আমরা দিন-রাত কাজ করে অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ন স্থান রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু হটাৎ করে পানির চাপে গুরমার হাওরের বাঁধের এই অংশ ভেঙে গেছে।