উদ্যোক্তা অস্টিনার পোশাকের চাহিদা ইউরোপেও
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১০:৫৮ এএম, ২৫ এপ্রিল ২০২২ সোমবার
ফাইল ছবি
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রাণশক্তি বলতে যা বোঝায় তার সবটুকুই যেন বিদ্যমান অস্টিনা ইয়াছিনের মধ্যে। পুরো নাম নওশিন তাবাচ্ছুম অস্টিনা। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পরিবার জমিদার খান সাহেব আবদুল হাকিম মিয়ার নাতনি তিনি।
পারিবারিকভাবে একটি বড় পরিচয় থাকলেও অস্টিনা স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজের একটি স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করতে। নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে ২০১৬ সালে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার ভিত তৈরি করেছিলেন। মাত্র ৬ বছরে অস্টিনা পেয়েছেন সাফল্য। দেশীয় কাপড় আর স্বতন্ত্র ডিজাইন ও কারুকাজের জন্য বিখ্যাত অস্টিনার বহুল জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান এবং উদ্যোগের নাম অস্টিনা’স কচার (Austina's Couture)। দেশীয় কাপড়ে অস্টিনার ডিজাইন করা কাপড়ের চাহিদা দেশ ছাড়িয়ে এখন ইউরোপেও। তার ডিজাইন ও তৈরি করা পোশাক যায় কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রেও।
অস্টিনা ইয়াছিন বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি ছিলাম অনেক বেশি ফ্যাশন সচেতন। এই বিষয়টি এসেছে আমার মায়ের কাছ থেকে। আমার মা ছিলেন অত্যন্ত আধুনিক মন মানসিকতার মানুষ। মা সবসময় বিভিন্ন আধুনিক ডিজাইনের ড্রেস পরাতেন। আর পোশাকের ডিজাইন আধুনিক শৈল্পিকতার বিষয়টি কৈশোর বয়সেই মাথায় পোকার মতো ঢুকে পড়েছিল। বলতে গেলে মায়ের নীরব অনুপ্রেরণা এবং নিজের একটি আত্মপরিচয় তৈরি করার সুপ্ত ইচ্ছা থেকেই বুটিক বিজনেসে চলে আসা।
তিনি বলেন, আমার পরিবার আমাকে সবসময়ই ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা দিতে পিছপা হয়নি কখনো।
একটি ঐতিহ্যবাহী জমিদার পরিবারের সদস্য হয়েও নিজে কিছু করতে চাওয়ার যে প্রবণতা আমার মধ্যে ছিল, সেই ইচ্ছার প্রতি পরিবারের সবাই সমর্থন দিয়েছে, সাহজ জুগিয়েছে। সবার অনুপ্রেরণায় চট্টগ্রাম নগরীতে আধুনিক ডিজাইনের নারীদের পোশাকের জন্য ‘অস্টিনা কচার’ ফ্যাশন হাউজ প্রতিষ্ঠা করেছি।
অস্টিনা বলেন, আমি অনেক মানুষের কর্মসংস্থান যেমন সৃষ্টি করতে পেরেছি, তেমনি একজন ডিজাইনার হিসেবে আমার একটা আলাদা পরিচয় তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। অস্টিনা’স কচারে সর্বনিম্ন ৪৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের পোশাক তৈরি হয়। এর মধ্যে রয়েছে ব্রাইডাল লেহেঙ্গা, পার্টি ড্রেস, শাড়ি. থ্রি-পিচসহ নারীদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক। কারচুপি, জারদৌসি, এমব্রয়ডারিসহ নানা ধরনের ডিজাইনের উপর কাজ করে থাকি।
অনলাইন এবং অফলাইন দুইভাবেই পোশাক বিক্রি হয়। বিশেষ করে অস্টিনার স্বতন্ত্র এবং বৈচিত্রময় ডিজাইনের কারণে ঢাকা চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে এর চাহিদা সৃষ্টি হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা বাঙালি নারীদের মধ্যেও। অস্টিনা বলেন, আমি কানাডা, ইউএসএ, অস্ট্রেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পোশাকের অর্ডার পেয়ে থাকি। পরে চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইনে নিজস্ব কারখানায় পোশাক তৈরি করে সফলভাবে নিয়মিত শিপমেন্ট করে আসছি। এ ছাড়া, চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে ঢাকাসহ সারাদেশেই রয়েছে অস্টিনার পোশাকের ব্যাপক চাহিদা।
চট্টগ্রাম শহরেই রয়েছে অস্টিনার নিজস্ব বুটিক কারখানা, অভিজ্ঞ কারিগরদের বড় একটি টিম। তিনি বলেন, আমার কাজের মূল ভিত্তি হচ্ছে দেশীয় কাপড়, নিজস্ব মননশীলতা দিয়ে বিশ্বমানের ডিজাইন এবং কারুকাজ।
অস্টিনা শুরুতে মায়ের অনুপ্রেরণা এবং বিয়ের পর স্বামী ইয়াছিন ফরহাদ এবং শ্বশুরের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। স্বামী সবসময়ই অস্টিনাকে মানসিক সাপোর্ট দেন, সঙ্গী হন সব কাজে। নিজের মননশীলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের কাজের আন্তর্জাতিক মান ধরে রেখে বহুদূর এগিয়ে যেতে চান অস্টিনা কচারের কর্ণধার অস্টিনা ইয়াছিন।